"অল্প দর্শনে লোকে নাস্তিক হয়, কিন্তু দর্শনের মধ্যে ঢুকলে তাকে ধার্মিক হতেই হয়।" __ ফ্রান্সিস বেকন
শিরোনামেই ফ্রান্সিস বেকনের বিখ্যাত উক্তিটি তুলে ধরলাম।
আমি নাস্তিকতাকে ঘৃণা করি, নাস্তিকদের নয়। কারণ SSC এর পর থেকে বেশির ভাগ সময় কেটেছে এই নাস্তিকদের সংস্পর্শে। এক সাথে উঠাবসা, এক প্লেটে খাওয়া, এক সাথে ঘুমানো। তাদের মুখেই প্রথম শুনি আরজ আলি মাতুব্বর, অভিজিৎ, আসিফ মহিউদ্দিনদের নাম। এদের মতাদর্শ মেনে নিতে পারি নি তবে এদের কাছ থেকে বিজ্ঞানের অনেক কিছু শিখেছি।
ইন্টারমিডিয়েটে পড়ার সময় আমি যে মেসে থাকতাম, সেই মেসেই আমার দুজন বড় ভাই ছিল নাস্তিক। ভার্সিটিতে ভর্তি হয়ে কিছু ফ্রেন্ড পেলাম নাস্তিক। তবে তাদের মধ্যে একটা বিষয় লক্ষ্য করেছি, তাহল, তারা মানসিক শান্তি নামক কিছুই পেত না।
একবার এক বড় ভাই আমাকে বোঝাচ্ছে, “ধর্ম হল বৃত্তের মত। তোমাকে এর গন্ডির মধ্যে আবদ্ধ রাখবে। অর্থাৎ এটা হচ্ছে বিশ্বাস। বিশ্বাসের বাইরে তুমি যেতে পারবে না। আর বিজ্ঞান এই বৃত্তের বাইরে গিয়ে পরীক্ষা ও পর্যবেক্ষনের মাধ্যমে সবকিছু প্রমাণ করার চেষ্টা করবে। বিজ্ঞানে বিশ্বাসের কোন মূল্য নেই”।
আমার কথা হল, আমি যদি বিশ্বাসের মধ্যেই শান্তি পায়, মানসিক পরিতৃপ্তি পায়, তবে কি দরকার বৃত্তের বাইরে যাওয়া? তবে জানতে চাই অনেক কিছুই। আমাদের জানার পরিসীমা অনেক। সবকিছু জানবো, কিন্তু আমার কাছে মানসিক শন্তিটাই প্রধান।
মনস্তাত্তিকেরা বলেন, “সত্যকারের যে ধর্মপরায়ন, তার মনরোগ জন্মায় না”।
উইলিয়াম জেমস এর কথা, “বিশ্বাস এমন একটা শক্তি, যার উপর নির্ভর করেই মানুষ বেঁচে থাকে, আর এর অনুপস্থিতি মানেই ধ্বংস অনিবার্য”।
বুদ্ধের পর ভারতের অন্যতম নেতা মহাত্মা গান্ধীও প্রার্থনার শক্তিতে উজ্জীবিত হয়েছিলেন। গান্ধী নিজেই বলেছেন, “প্রার্থনা ছাড়া অনেক আগেই আমি পাগল হয়ে যেতাম”।
প্রার্থনা জীবনে শান্তির বারতা বয়ে আনে। দুশ্চিন্তা নিরাময়ের একমাত্র ওষুধ হল ধর্মে বিশ্বাস রাখা। প্রার্থনারত অবস্থায় যে শান্তি ও পরিতৃপ্তি পান, তা পৃথিবীর আর কোথাও পাবেন না।
অনেকেই আছেন যারা ভাবেন, “ধর্ম হল মেয়েমানুষের, শিশুদের আর ধর্মপ্রচারকদের জন্য”। তারা অহঙ্কার করেন ‘পুরুষ’ মানুষের মতই তারা নিজেদের সামলাতে পারেন।
তারা হয়ত আশ্চর্য হবেন এটা জেনে যে, পৃথিবীর বহু বিখ্যাত ‘পুরুষ’ মানুষ সবসময় প্রার্থনা করে থাকেন।
বহু বিজ্ঞানীরাও আজ ধর্মের প্রতি ঝুকেছেন। যেমন বিজ্ঞানী ডঃ ক্যারেল ‘রিডার্স ডাইজেস্ট’ এ এক প্রবন্ধে লেখেন, “প্রার্থনার মধ্য দিয়েই একজন মানুষ বিরাট শক্তি তৈরি করতে পারে। এ এমন এক শক্তি যা মহাজগতিক শক্তির মতই বাস্তব। রেডিয়াসের মতই আলোকময়, স্বতনিঃসারিত এক শক্তি”।
তাই, শুধু শান্তির আশায়, মানসিক তৃপ্তির আশায় ধর্মই হচ্ছে একমাত্র পাথেয়।
আজ আসিসির সাধু ফ্রান্সিসের মত বলতে ইচ্ছা করে, “হে ঈশ্বর, আমাকে শান্তির কাজে নিয়োজিত করুন। যেখানে ঘৃণা আছে, সেখানে আমার ভালোবাসার বীজ বপন করতে দিন। যেখানে আঘাত আছে, সেখানে মার্জনা করতে দিন। যেখানে সন্দেহ, সেখানে দিন বিশ্বাস। যেখানে হতাসা, সেখানে আসুক আশা। যেখানে অন্ধকার, সেখানে আসুক আলোক। হে প্রবিত্র প্রভু, আমি সান্ত্বনা চাই না- সান্ত্বনা দিতে চাই- ভালোবাসা চাই না, ভালোবাসতে চাই- ক্ষমা করলেই যেহেতু ক্ষমা পাওয়া যায়, তাই মৃত্যুর মধ্যেই ফিরে পাই অনন্ত জীবন”।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




