somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নিষিদ্ধ ভালোবাসা (১ম পর্ব)

২১ শে নভেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৪:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ঠিক তখনই তূর্য্যের মনে হলো কাজটা খারাপ। শুধু খারাপ না, জঘন্য এবং বিরক্তিকরও বটে। আরো স্পষ্ট করে বললে কাজটা অশ্লীল! অবাক হওয়ার মত ব্যাপার ঐ মূহুর্তে হঠাৎ করে কেন মনে হচ্ছে কাজটা খারাপ? অথচ তার দুইদিন আগেও ওদের হয়েছে! তখনও ওরা দুজনেই তৃপ্ত ছিল। দুজনই উপভোগ করেছে। কিন্তু মাত্র দুই দিনের ব্যবধানে ভালোলাগাটুকু কেন বিপরীত হয়ে যাবে? তূর্য্য ভেবেই যাচ্ছে।

অরু আর তুর্য্য দুজন দুজনকে ভালবাসে। দিবলোকের মত স্পষ্ট যে তাদের দুজনেরেই ভালোবাসা খাঁটি। কেউ কোন ছলনা করে না। তুর্য্য তার সবটুকু দিয়ে অরুকে তৃপ্ত করতে চেষ্টা করে। তূর্য্যের কাজে একধরণের শৈল্পিকতা আছে। পাশাপাশি অরুও কিন্তু দারুণ সাড়া দিতে জানে। “তূর্য্য আমার জান“ এই কথাটা অরু অনেককেই বলেছে। কাউকে একথা বলতে গিয়ে এতটুকুও কার্পন্য করে নি।

অরু হয়ত বিষয়টা বুঝে ফেলেছিল, কিছু একটা ভাবছে তূর্য্য। তাই তার আদরের মাত্রাটা কয়েকগুণ বেড়ে গেছিল। তূর্য্য লক্ষ করলো তার বিরক্তিটা এতে আরো বাড়ছে। এই বিরক্তির ব্যাপারটাও অরু বুঝে ফেলেছিল, তাই বোকা আদরের মাত্রাটা আর আগে বাড়ালো না। তূর্য্যকে জিজ্ঞেস করলো,
-তোমার কি কোন কারণে মন খারাপ?
-না তো?
-তাহলে?
এ প্রশ্নের উত্তর দুজনেরই জানা। তবুও তূর্য্য এড়িয়ে গেল। পাল্টা প্রশ্ন করলো,
-তাহলে মানে?
-তুমি জানো!
এবার তূর্য্য হাসলো। রহস্যময় হাসি। এ হাসির অনেক অর্থ হতে পারে। অরু আর ঘাটাল না। তবে অদ্ভুত আচরণ করল। তূর্য্যের হাত পা টিপে দিল। তূর্য্য একটু নড়ে বসলো। বলল এই কী করছো? অরু বলল, তোমাকে ম্যাসাজ করে দিচ্ছি।

অরু-তূর্য্য দুজনেই আদর জানে। কেউ কারো চেয়ে কম না। দুজনেরই আদরের অনেক কলাকৌশল জানা আছে। একজনের মন খারাপ হলে আরেকজন সবসময়ই একটু বেশি যত্ন, আদর, আর ভালোবাসা দেখায়। একজনের প্রতি আরেকজনের মুগ্ধতা নানা ভাবে ওরা একে অপরের কাছে প্রকাশ করে। ঐ মূহুর্তে অরু তার বিভিন্ন কৌশল প্রয়োগ করলো। তূর্য্যের প্রতি অরু তখন একটু বেশিই দূর্বলতা দেখালো। তূর্য্যকে খুশি করতে নিদারুণ প্রচেষ্টা চালালো। তূর্য্য একটু বিরক্তির ভাব ফুটিয়ে বলল,
-আহ! ছেলেমানুষি করছো কেন?
অরু একটু আহত হল। কিন্তু ও খুব ঝানু। আহত ভাবটা প্রকাশ করেনি প্রকাশ করলেই তূর্য্য রাগ করবে। তূর্য্যের রাগটাকে অরু খুব ভয় করে।

****
ওদের শুরু হয়েছিল ৫ বছর আগে। ৫ বছর দ্যাম্পত্যের পাশাপশি আরেকটা পুরুষের সাথে সামান্তরাল সম্পর্ক একটা মহিলার জন্য খুব সোজা একটা বিষয় না। নানা কারণে যেভাবে ওদের সম্পর্ক গড়ে ওঠেছে নানা কারণে তা ঠিকেও আছে। আরও আশ্চর্য় অরুর চেহারা এবং বয়স। সুন্দর বলতে এক জোড়া চোখ ছাড়া আর কিছু নাই। গায়ের রং চকলেট কালার। বয়স ৩২। শরীরে মেদের পরিমাণ প্রচুর । অথচ তূর্য্য দেখতে নায়কের মত। ফ্রেঞ্চকাট দাড়ি। ফর্সা চেহারা। সুঢৌল গড়ন। বয়স ২৮। সব মিলিয়ে ১০০ ছেলের মধ্যে একটা ছেলে।
এমন একটা অসম সম্পর্ক ৫ বছর ধরে টিকে থাকার কথা না। অথচ তূর্য্য অরুর প্রতি মুগ্ধ। অরু তার কাছে মজাদার চটপটির মত মুখরোচক।
অদ্ভুতভাবে কেন তখনই তূর্য্যের মনে হল এটা একটা কুরুচীপূর্ণ কাজ?

সাধারণত নারী পুরুষের অনৈতিক সম্পর্কে যা হয়, খুব দ্রুতই দুজন দুজনের কাছে প্রশ্নবোধক হয়ে দাড়ায়। বিশেষ করে পুরুষের চোখে নারী হয়ে যায় দ্বিচারিনী। পরস্পরের প্রতি সম্মানবোধ থাকে না। উভয়ই উভয়কে হেয় করে চলে। যেন তারা চোর। দুজনেরই জানা হয়ে যায় এ লুকানো কাজটা আরো কোথাও সে করছে। তারপর ফ্যাসাদ, কাদা ছোড়াছুড়ি এরকম কত কী? না একম কিছু হয় নি অবশ্য। সম্মান ও অনুরাগ দুটোই অটুট ছিল। দুজনের শরীরের সাড়াও ছিল যথেষ্ট। উপভোগ করেছে প্রতিটা মুহুর্ত। যেমন উপভোগ করে ফেসবুকে কিংবা হোয়াটস এপে চেট করা, ফোনে কথা বলা, বাইরে বেড়াতে যাওয়া, ঠিক তেমনি অন্তরঙ্গ সময়ের চরম মূহুর্তটাকেও ওরা উপভোগ করে। এরকম সম্পর্কের মধ্যে তখন হঠাৎ কেন মনে হল এটা অনৈতিক , অশ্লিল? বিষয়টা এমনও না অরুর বয়স হয়ে গেছে শরীরের চাহিদা কমে গেছে কারণ গত দুইদিনে বয়স বেড়ে যাবে তা তো না? তূর্য্যের স্বাস্থ্যও যথেষ্ঠ ভাল। সামর্থ্যবান পুরুষ সে। কোথাও কোন টোল নেই।

রিকশা করে অরুকে তার বাসায় পৌছে দিয়ে তূর্য্য নিজের বাসায় ফিলে গেল। সারাটা পথ ভাবল। না মনের মধ্যে পরিবর্তন হয় নি। বার বার মনে হয়েছিল অরুর সাথে আর দেখা করবে না।
(চলবে)
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে নভেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৪:৫৫
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বরিষ ধরা-মাঝে শান্তির বারি

লিখেছেন বিষাদ সময়, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:১৬





মাসের আধিক কাল ধরে দাবদাহে মানব প্রাণ ওষ্ঠাগত। সেই যে অগ্নি স্নানে ধরা শুচি হওয়া শুরু হলো, তো হলোই। ধরা ম্লান হয়ে, শুষ্ক হয়, মুমূর্ষ হয়ে গেল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=নীল আকাশের প্রান্ত ছুঁয়ে-৭ (আকাশ ভালোবেসে)=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:১৯

০১।



=আকাশের মন খারাপ আজ, অথচ ফুলেরা হাসে=
আকাশের মন খারাপ, মেঘ কাজল চোখ তার,
কেঁদে দিলেই লেপ্টে যাবে চোখের কাজল,
আকাশের বুকে বিষাদের ছাউনি,
ধ্বস নামলেই ডুবে যাবে মাটি!
================================================
অনেক দিন পর আকাশের ছবি নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫২


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।

পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।

জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সমস্যা মিয়ার সমস্যা

লিখেছেন রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ), ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭

সমস্যা মিয়ার সিঙ্গারা সমুচার দোকানে প্রতিদিন আমরা এসে জমায়েত হই, যখন বিকালের বিষণ্ন রোদ গড়িয়ে গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে, সন্ধ্যা পেরিয়ে আকাশের রঙিন আলোর আভা মিলিয়ে যেতে শুরু করে। সন্ধ্যা সাড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

এই মুহূর্তে তারেক জিয়ার দরকার নিজেকে আরও উন্মুক্ত করে দেওয়া।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৬ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৬


তারেক জিয়া ও বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে আমি ব্লগে অনেকবারই পোস্ট দিয়েছি এবং বিএনপি'র নেতৃত্ব সংকটের কথা খুব স্পষ্টভাবে দেখিয়েছি ও বলেছি। এটার জন্য বিএনপিকে সমর্থন করে কিংবা বিএনপি'র প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×