গত ১০ ডিসেম্বর ২০২০ পার্বত্য তিন জেলা পরিষদ পুনর্গঠন করা হয়েছে। প্রতি জেলায় একজন চেয়ারম্যান এবং ১৪ জন সদস্য নিয়ে গঠিত হয়েছে জেলা পরিষদগুলো।
রাঙ্গামাটি, বান্দরবান এবং খাগড়াছড়ি তিন জেলায় তিন জন চেয়ারম্যান এবং ৪২ জন সদস্য নিয়ে গঠিত পরিষদগুলোতে মোট ৪৫ জন জনপ্রতিনিধি দায়িত্ব পেয়েছেন।
জেলা পরিষদগুলোতে বাঙালি-অবাঙালি বৈষম্য কতটুকু তা কি জানেন? পার্বত্য জেলাগুলোতে বসবাসরত বাঙালি-অবাঙালি জনসংখ্যার অনুপাতে যদি পরিষদগুলোর প্রতিনিধি সংখ্যা নির্ধারিত হতো, তাহলে এসব পরিষদে প্রতিনিধিদের সংখ্যা চিত্রটা কেমন হতো, তা কি জানেন?
বান্দরবানে ৫৫ শতাংশের বেশি মানুষ বাঙালি। জনসংখ্যার ভিত্তিতে যদি সেখানে জেলা পরিষদ গঠিত হতো তাহলে চেয়ারম্যান বাঙালি হওয়ার কথা। সেই সাথে ১৫ জনের পরিষদে অন্তত ৮ জন হতেন বাঙালি জনপ্রতিনিধি। কিন্তু বাস্তবে হয়েছে মাত্র ৪ জন বাঙালি সদস্য।
রাঙ্গামাটিতে ৪০ শতাংশের বেশি মানুষ বাঙালি, সেই হিসেবে রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদে অন্তত ৬ জন প্রতিনিধি বাঙালি হওয়ার কথা। কিন্তু হয়েছে ৪ জন।
খাগড়াছড়িতে ৪৮ শতাংশের বেশি মানুষ বাঙালি, সেই হিসেবে জেলা পরিষদে সদস্য হওয়ার কথা অন্তত ৭ জন। কিন্তু হয়েছে মাত্র ৪ জন।
সিএইচটি রিসার্চ ফাউন্ডেশন ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী জনসংখ্যানুপাতে জেলা পরিষদগুলোতে জনপ্রতিনিধিত্বের সংখ্যার তুলনামূলক যে চিত্র পেয়েছে তা নিচের ছকটিতে দেখে নিতে পারেন।
এই বৈষম্য যত দিন থাকবে, পাহাড়ের অশান্তিও ততদিন থাকবে। কিন্তু এটা আসলে কোনোভাবেই কাম্য না। তাই পাহাড়ের যারা শান্তির স্বপ্ন দেখেন তাদের এখন ভাবার সময় এসেছে, কাউকে বঞ্চিত করে নয়, বরং যার যার যথাযথ প্রাপ্য দিয়েই সমতা প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
সকলের চিন্তা, চেতনা, মননশীলতায় এটা প্রোথিত করে দেয়ার সময় হয়েছে যে, জন্মগত কারণে কেউ বঞ্চনার শিকার হতে পারে না। এখানে আমাদের বড় পরিচয় হোক, আমরা সবাই মানুষ, একই রাষ্ট্রের সমমর্যাদার নাগরিক, রাষ্ট্রীয় অধিকারও প্রত্যেকের সমান।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা জানুয়ারি, ২০২১ রাত ৮:৩৮