অধ্যাপক আবদুল গফুর ভাষা আন্দোলনের একজন অগ্রসেনানী। তিনি ভাষা আন্দোলনের স্থপতি সংগঠন তমদ্দুন মজলিসের শুরু থেকে সক্রিয় নেতা এবং ভাষা আন্দোলনের মুখপত্র সাপ্তাহিক সৈনিক পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন। তিনি দেশের একজন বিশিষ্ট চিন্তাবিদ, প্রবীণ সাংবাদিক ও লেখক। পাকিস্তান আন্দোলন ও ভাষা আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণকারী জাতির এই কৃতী সন্তান অধ্যাপক আবদুল গফুরের সাক্ষাৎকারটি গ্রহণ করেছেন দৈনিক ইনকিলাবের সহ-সম্পাদক সৈয়দ ইবনে রহমত।
সৈয়দ ইবনে রহমত: স্যার, কেমন আছেন?
অধ্যাপক আবদুল গফুর: আলহামদুলিল্লাহ। ভালো আছি। বয়সের কারণে কিছু সমস্যা তো থাকেই। তবে এখনো চিন্তা করতে পারছি, লিখতে পারছি, এটাই বড় কথা।
সৈয়দ ইবনে রহমত: আপনার প্রাথমিক শিক্ষাজীবন সম্পর্কে যদি আমাদেরকে কিছু বলেন।
অধ্যাপক আবদুল গফুর: আমার জন্ম ১৯২৯ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি রাজবাড়ি জেলার দাদপুর গ্রামে। আব্বা আলহাজ মুনশী হাবিল উদ্দিন ছিলেন একজন কৃষক। তিনি আমাদের গ্রামে একটি মক্তব প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সেখানে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ার সুযোগ ছিল। বর্তমানে এটি প্রাইমারি স্কুল। আমি আমার আব্বার প্রতিষ্ঠিত মক্তবে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছি। তারপর পাবনায় তালিম নগর মাদরাসায় ভর্তি হই। সেখানে পড়েছি ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত। এরপর ফরিদপুর ময়েজ উদ্দিন হাই মাদরাসায় ভর্তি হই সপ্তম শ্রেণিতে। সেখান থেকেই ১৯৪৫ সালে হাই মাদরাসা ম্যাট্রিকুলেশনের সমমান পরীক্ষায় পাস করি। ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষায় স্ট্যান্ড করেছিলাম। আসাম ও বাংলায় সম্মিলিত মেধা তালিকায় আমার অবস্থান ছিল দ্বিতীয়।
সৈয়দ ইবনে রহমত: ঢাকায় এলেন কখন? কোথায় ভর্তি হয়েছিলেন?
অধ্যাপক আবদুল গফুর: ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষা দিয়ে প্রথমে হুগলি কলেজে ভর্তি হওয়ার জন্য গিয়েছিলাম। কিন্তু সেখানকার আবহাওয়া আমার ভালো লাগেনি। কলকারখানার ধোঁয়া আমার সহ্য হয়নি। তাই চলে আসি ঢাকায়। ঢাকায় এসে গভর্নমেন্ট ইসলামিক ইন্টারমিডিয়েট কলেজে ভর্তি হই, এখন যেটা সরকারি কবি নজরুল কলেজ হিসেবে পরিচিত। থাকতাম কলেজের প্যারাডাইস হোস্টেলে। মেধাবী এবং বৃত্তিপ্রাপ্ত স্টুডেন্ট হিসেবে কলেজে আমার টিউশন ফি এবং হোস্টেল ফি মাফ ছিল, শুধু খাওয়াবাবদ মাসিক ৮ টাকা দেওয়া লাগত। হোস্টেল ছিল বুড়িগঙ্গার কাছেই। তখন নদীর পানি অত্যন্ত স্বচ্ছ ছিল, আমরা দল বেঁধে গোসল করতাম, সাঁতার কাটতাম।
সৈয়দ ইবনে রহমত: ঢাকায় তখন পরিচিত কেউ ছিলেন?
অধ্যাপক আবদুল গফুর: আবদুর রহমান নামের এক লোক ছিলেন আমাদের এলাকার। তিনি লালবাগে থাকতেন। ঢাকায় এসে প্রথমে তার বাসাতেই উঠেছিলাম। কলেজে ভর্তি হওয়ার পর হোস্টেলে চলে আসি। আর ফরিদপুর ময়েজ উদ্দিন হাই মাদরাসায় আমার এক বছরের সিনিয়র ছিলেন, নাম এনামুল হক। তিনিও ঢাকায় গভর্নমেন্ট ইসলামিক ইন্টারমিডিয়েট কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন। আমি আসার পর এনামুল হক খুব খুশি হয়েছিলেন। সবার সাথে গর্বের সাথে আমার পরিচয় করিয়ে দিতেন, আর বলতেন, এই দেখো, আমার এলাকার আবদুল গফুর, অত্যন্ত মেধাবী স্টুডেন্ট, ম্যাট্রিকুলেশনে স্ট্যান্ড করা ছাত্র।
সৈয়দ ইবনে রহমত: পাকিস্তান আন্দোলনে যুক্ত হলেন কখন?
বিস্তারিত অংশ নিচের লিংকে
রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের মৌলিক ভিত্তি কী কী
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১২:২৫