কীভাবে?
২০১৫ সালের ১০ জানুয়ারি রাঙামাটি মেডিক্যাল কলেজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছিলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ভিডিও কন্ফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর সে অনুষ্ঠান বাঞ্চাল করতে সর্বাত্মক হামলা চালিয়ে রাঙামাটি শহরকে কয়েক দিনের জন্য অচল করেদিয়েছিল সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন জেএসএস এবং তার অঙ্গসংগঠনের ক্যাডাররা।
তাদের সশস্ত্র আক্রমণের শিকার হয়ে যুবলীগের কর্মী মনির হোসেনকে জীবন দিতে হয়েছিল, রক্ত দিতে হয়েছিল সাংবাদিকসহ আরো অনেককে।
বাঙালিরা জীবন দিয়ে, রক্ত দিয়ে প্রতিষ্ঠা করেছে রাঙামাটি মেডিক্যাল কলেজ।
কিন্তু ফলাফল কী হয়েছে?
প্রতি বছর রাঙামাটি মেডিক্যাল কলেজে পার্বত্য তিন জেলার ১৩ জন করে উপজাতীয় শিক্ষার্থী কোটায় ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাচ্ছে। অথচ, যে বাঙালিরা জীবন দিয়ে, রক্ত দিয়ে এটি প্রতিষ্ঠা করেছে সেই পার্বত্য বাঙালিদের জন্য এই কলেজে কোনো কোটা নেই।
এখন প্রশ্ন হলো, পাহাড়ের কি শুধু উপজাতীয়রাই কোটা পাওয়ার যোগ্য? আর পাহাড়ের বাঙালিরা কি উপজাতীয়দের চেয়ে বেশি শিক্ষিত?
মোটেই না, বরং পাহাড়ের বাঙালিরা উচ্চ শিক্ষায় উপজাতীয়দের চেয়ে অনেক পিছিয়ে আছে।
তারপরও এমন সিদ্ধান্ত সাম্প্রদায়িকতার ঘৃণ্য উদাহরণ ছাড়া আর কী হতে পারে?
এই বৈষম্যমূলক সিদ্ধান্ত যারা নিয়েছেন এবং বাস্তবায়ন করে চলেছেন, তাদের হীনমানসিকতার প্রতি তীব্র ঘৃণা থাকল।
রাষ্ট্রীয় অর্থে পরিচালিত একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তার নাগরিকদের মধ্যে এই বৈষম্য সৃষ্টির কৈফিয়ত চাওয়ার অধিকার দেশের প্রতিটি নাগরিকের রয়েছে। রাষ্ট্রের উচিৎ তার নাগরিকদের কাছে এর উপযুক্ত ব্যাখ্যা তুলে ধরা।
কোটা দিলে পার্বত্য তিন জেলাবাসীকে দিতে হবে, কোনো বিশেষ জনগোষ্ঠিকে নয়। আর উপজাতীয় জনগোষ্ঠিকে আলাদাভাবে দিতে হলে, তার সাথে বাঙালিদেরকেও জনসংখ্যানুপাতে সমসংখ্যক কোটা দিতে হবে।
এটা বাঙালিদের জন্য দয়ার দান নয়, বরং তাদের অধিকার। কেননা, তারাই রাঙামাটি মেডিক্যাল কলেজ প্রতিষ্ঠায় জীবন দিয়েছে, রক্ত দিয়েছে। আর প্রতিষ্ঠানও চলে তাদের দেওয়া ট্যাক্সের টাকায়, এটা রাষ্ট্রের মনে রাখা উচিৎ।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই মার্চ, ২০২১ দুপুর ১:৪২