বাড়ির উঠানে দাঁড়িয়ে উত্তর-পূর্বদিকে তাকালে গুরু সতাং পাহাড়ের চূড়া দেখা যায়। আর দশটা পাহাড় চূড়ার চেয়ে বেশখানিকটা উঁচু এবং ত্রিভূজাকৃতির চূড়াটি দেখতে একটু অন্যরকম। অনেকবার ইচ্ছে হয়েছে, স্পর্শ করে আসার। কিন্তু সেটা হয়ে উঠেনি।
সেখানকার বাসিন্দা রামা পাংখোয়া গুলশাখালী হাই স্কুলে কিছু দিন লেখাপড়া করেছিলেন। তখন একবার বড়দের সাথে যাওয়ার পরিকল্পনাও হয়েছিল। কিন্তু শেষপর্যন্ত আর যাওয়া হয়নি। তবে নওয়াপাড়া বিজিবি ক্যাম্প হওয়ার পর এলাকার অনেকেই গিয়েছেন। তাদের কাছ থেকেই সেখানকার পাংখো পাড়ার গল্প শুনেছি।
সম্প্রতি লংগদু উপজেলা প্রকৌশলী ড.প্রকৌ.মোঃজিয়াউল ইসলাম মজুমদার পাংখো পাড়া ভ্রমণ করে এসে যে বর্ণনা দিয়েছেন সেটা পড়ে নতুন করে ডাক শুনছি। তবে এ ডাক শুধু গুরু সতাং ভ্রমণের ডাক না, বরং শুনছি বাংলার দার্জিলিং খ্যাত সাজেকের মতো আরো একটি নান্দনিক পর্যটন স্পট হয়ে উঠার ডাক।
সাজেকের সব বৈশিষ্ট্যই আছে এখানে, আছে তার চেয়েও বেশি কিছু। পর্যটকরা গুরু সতাং পাহাড় চূড়া থেকে পশ্চিম দিকে তাকালেই দেখতে পাবেন কাপ্তাই লেক-এর নয়নাভিরাম দৃশ্য, সাথে আকাশের সাথে মিতালি করা পশ্চিমের পাহাড়সারি। এতদিন উপযুক্ত জহুরির চোখ পড়েনি বলেই আমাদের সামনে থাকার পরও থেকে গেছে এক অদৃশ্য দেয়ালের আড়ালে।
এবার হয়তো সে ধৈন্য ঘুচবে গুরু সতাং পাড়ারের, ভ্রমণপিপাসু মানুষের নতুন গন্তব্য হয়ে উঠবে সে। এর জন্য প্রয়োজন হবে, গুলশাখালী থেকে পূর্বদিকে ১৫ কিলোমিটার রাস্তা। এলজিইডির ব্যান্ডিংয়ের জন্যই এটা বাস্তবায়ন করতে যথাসাধ্য করার চেষ্টা করছেন উপজেলা প্রকৌশলী জিয়া সাহেব। আশা করি, সংশ্লিষ্ট অন্যরাও উনাকে এটা বাস্তবায়ন করতে সহযোগিতা করবেন।
এটা হলে এ অঞ্চলের মানুষের জীবন-মান উন্নয়নে যুক্ত হবে অবিশ্বাস্য এক নতুন মাত্রা, নতুন পথ, নতুন উপাদান। সেটা কত দ্রুত এবং বৈচিত্র্যময় হবে সেটা বুঝতে হলে সাজেকের দিকে তাকালেই সহজে ধারণা পাওয়া যাবে।
তবে কিছু মানুষ আছেন, যারা রাস্তার অপেক্ষায় থাকেন না, বরং রাস্তা নির্মাণের পথ দেখান। এমন মানুষরাই খুঁজে বের করেছেন বান্দরবানের কেওকাড়াডং, তাজিংডং, রাঙামাটির সাজেকসহ আরো অনেক পর্যটন স্পট। তারা চাইলে যেকোনো সময় নামতে পারেন গুরু সতাং অভিযানে। হয়তো অনন্তকাল ধরে আকাশে মাথা তোলে তাদের পানেই চেয়ে আছে গুরু সতাং-এর চূড়া।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে আগস্ট, ২০২১ বিকাল ৫:৩৬