বিশ্বখ্যাত ছড়াকার লুতফর রহমান রিটন আমার চোখ খুলে দিয়েছেন। সেই চোখ দিয়ে আবিষ্কার করেছি আমার প্রিয় কবি শামসুর রহমান একজন রাজাকার ছিলেন এবং তা্ঁর 'স্বাধীনতা তুমি' কবিতাটি হায়দার হোসনের গানের মতই উদ্দেশ্য প্রণোদিত। এই কবিতায় তিনি লিখেছেন "স্বাধীনতা তুমি/রবিঠাকুরের অজর কবিতা, অবিনাশী গান।/স্বাধীনতা তুমি/কাজী নজরুল ঝাঁকড়া চুলের বাবরি দোলানো/মহান পুরুষ, সৃষ্টিসুখের উল্লাসে কাঁপা-" অথচ স্বাধীনতার প্রাণ পুরুষ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের কথা কবিতায় উল্লেখ নাই। কত বড় স্পর্ধা! আমাদের স্বাধীনতা আন্দোলনে রবীন্দ্রনাথ বা নজরুল ইসলাম অংশগ্রহন করেন না করলেও তাদের স্বাধীনতার সাথে তুলনা করেছেন। শামসুর রাহমান জীবীত থাকা অবস্থায় একবারও কবিতাটি সংশোধন করে বঙ্গবন্ধু নাম উল্লেখ করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করনে নাই। তিনি স্বাধীনতার ইতিহাসকে অস্বীকার করেছেন, জাতির পিতাকে অস্বীকার করেছেন।
তার রাজাকারী উদ্দেশ্য স্পষ্ট হয়ে ধরা দেয় যখন লিখেন- "স্বাধীনতা তুমি/শহীদ মিনারে অমর একুশে ফেব্রুয়ারির উজ্জ্বল সভা/স্বাধীনতা তুমি/পতাকা-শোভিত শ্লোগান-মুখর ঝাঁঝালো মিছিল।" তাঁর কাছে ৭মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ গুরুত্বপূর্ণ নয়। রেসকোর্সের উল্লেখ তার কবিতায় নেই। আছে শহীদ মিনারের কথা। আজকাল শিক্ষকরা শহীদ মিনারে সভা করে সরকারকে বিব্রত অবস্থায় ফেলে- এই ধরনের ঘটনা ঘটবে জেনেই তিনি শহীদ মিনারের সভার কথা উল্লেখ করেছেন। সেখানে স্বাধীনতা খুঁজে পেয়েছেন। এখানেই শেষ নয়, স্বাধীনতার পক্ষের সরকারের বিরুদ্ধে উসকানী দেয়ার জন্য ঝাঁঝালো মিছিলের কথা লিখেছেন। সরকারকে বেকায়দায় ফেলার সকল নির্দেশনা কবিতায় দিয়েছেন। স্বাধীনতা অর্জনের পরে উচিত ছিল কবিতায় শান্তি মিছিলের কথা লিখার। তিনি তা লিখেন নাই। কেন লিখেন নাই? কারন উনি একটা ছাগু, স্বাধীন দেশে উনি শান্তি পাবেন কেন!
ছাত্রলীগকে বিতর্কিত করার জন্য এই কবিতায় লিখেছেন -" স্বাধীনতা তুমি/বটের ছায়ায় তরুণ মেধাবী শিক্ষার্থীর/শানিত কথার ঝলসানি-লাগা সতেজ ভাষণ।" অর্থাৎ ভাষণ দিতে হলে মেধাবী হ্ওয়া লাগবে। যারা বিশ্বজিতকে কোপায়, মায়ের পেটের শিশুকে লাথি দিয়ে হত্য করে, গর্ভবতী নারীকে গুলি করে, ধর্ষণে সেঞ্চুরী করে তারা যেন মেধাবী নয়। তিনি স্বাধীনতার পক্ষের কবি হলে লিখতেন "স্বাধীনতা তুমি/ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীর/অস্ত্রের ট্রেনিং, আত্না শুকিয়ে দেয়া উদ্ধত থ্রেট।"
প্রগতিশীল মুক্তমনাদের হেয় করে লিখেছেন-" স্বাধীনতা তুমি পিতার কোমল জায়নামাজের উদার জমিন।" জায়নামাজের উদার জামিনে তিনি স্বাধীনতা খুঁজে পেয়েছেন। কতটা সাম্প্রদায়িক হলে জায়নামাজে স্বাধীনতা খুঁজে পান একজন কবি! বাংলাদেশের সৃষ্টি লগ্ন হতেই তিনি জঙ্গীবাদকে উতসাহিত করেছেন। হাছন মাহমুদ সাহেব বা ছড়াকার লুতফর রহমান রিটন সাহেব গবেষণা করলে ফ্রান্সের প্যারিসে হামলা, দেশের অভ্যন্তরে ব্লগার হত্যায় আনসারুল্লা টিমের দায় স্বীকার এবং আইএসের সাথে কবির সংশ্লিষ্টতা আবিষ্কার হ্ওয়া ওয়ান-টুর ব্যাপার। তিনি যে পাকিপ্রেমি ছিলেন তা স্পষ্ট হয় "স্বাধীনতা তুমি বন্ধুর হাতে তারার মতন জ্বলজ্বলে এক রাঙা পোস্টার"- এই উক্তিতে। কতটা উদ্ধত পাকিপ্রেমি হলে স্বাধীনতার কবিতায় তিনি লিখতে পারেন 'তারার মতন জ্বলজ্বলে'- কারন তার সাথে চাঁদ সর্ম্পকিত। আর চাঁদ তারা মানেই হচ্ছে পাকিন্তান।
তার অসত উদ্দেশ্য পরিষ্কার হয় কবিতার শেষ লাইনে "স্বাধীনতা তুমি/বাগানের ঘর, কোকিলের গান,/বয়েসী বটের ঝিলিমিলি পাতা,/যেমন ইচ্ছে লেখার আমার কবিতার খাতা।" একবার অনুধাবন করুণ-"যেমন ইচ্ছে লেখার আমার কবিতার খাতা"- কি ভয়ংকর সংবিধান বিরোধী উচ্চারণ। এই লাইনটি লেখার মাধ্যমে তিনি সরকার এবং রাষ্ট্রবিরোধী প্রচারনা চালানোর উস্কানী দিয়েছেন। আর যারা সরকার ও রাষ্ট্রবিরোধী প্রচারণা চালানোর উস্কানী দেয় তারা সকলে রাজাকার। তিনি যদি স্বাধীনতার স্বপক্ষের কবি হতেন তবে অবশ্যই লিখতেন "৫৭ধারা মেনে লেখার আমার কবিতার খাতা।"
এখন সময় এসেছে এদের মুখোশ খুৃলে দেবার। লুতফর রহমান রিটন যেভাবে হায়দার হোসেনের মুখোশ খুলে দিয়েছেন আসুন আমরা সেই চেতনায় উজ্জীবীত হয়ে বাকীদের মুখোশ খুলে দেই।
উতসর্গ: শ্রদ্ধেয় ছড়াকার লুতফর রহমান রিটনের পদপদ্মে।
মহামতি লুতফর রহমান রিটনের আবিষ্কারের লিংক:
হায়দার হোসেনের ‘স্বাধীনতা’ গান নিয়ে বিতর্ক
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:৩৬