somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পৃথিবীর যত সব আজব-অদ্ভুত ... আজকের বিষয়-দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের টপ টেন ডেডলিয়েষ্ট স্নাইপাররা (কত অজানা রে পার্ট-২৪)

২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ২:১৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অনেক শার্পশুটার স্নাইপার ছিলেন যারা নিজের বাহিনীতে যেমন জনপ্রিয় ছিল ঠিক ততটুকুই অজনপ্রিয় ছিল বিপক্ষদলের শিবিরে। যুদ্ধে তাদের অবদান ছিল অনশ্বীকার্য। তাদের ভিতর যারা ডেডলিয়েষ্ট ছিল এমন ১০ জন স্নাইপারের সাথে আজ আপানদের পরিচয় করিয়ে দিব।
চলুন ...

১০) Stepan Vasilievich Petrenko:


দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় সোভিয়েত ইউনিয়নের ছিল অন্য যে কোন বাহিনীর চেয়ে দক্ষ স্নাইপার দল। প্রতিপক্ষ যখন ট্যাংক-কামান বানাচ্ছিল তখন সোভিয়েত বাহিনী তাদের স্নাইপার টিমকে আরও উচ্চত্তর ট্রেনিং দিচ্ছিল। আর এই মি. Stepan Vasilievich Petrenko ছিলেন সেই সেরা টিমের ভিতর সেরা। তার ৪২২ টি শিকার তার সহ-মার্কসম্যান ও বিপক্ষ দলের কাছে থেকে কনফার্ম সংখ্যা।

৯) Vasilij Ivanovich Golosov:


দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় সোভিয়েত ইউনিয়নের স্নাইপার টিমে ২৬১ জন মার্কসম্যান ছিল যারা প্রত্যাকে নিন্মে ৫০ জন করে শত্রুসেনা শিকার করেছে। #১০ এর মত Vasilij Ivanovich Golosov ও কনফার্ম ৪২২ টি শত্রু শিকার করছিলো।

৮) Fyodor Trofimovich Dyachenko:


এও মনে করা হয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে ৪,২৮,৩৩৫ জন রাশান "রেড আর্মি স্নাইপার ট্রেনিং" নিয়েছিল। এর ভিতর ৯,৫৩৪ জন ছিল হাইকোয়ালটি মার্কসম্যান যাদের কাজই ছিল জার্মান বাহিনীর যে সব অফিসার "difficult-to-replace" মানে খুবই গুরুত্বপুর্ন তাদের পরপারে পাঠানো। Fyodor Trofimovich Dyachenko ছিলেন তেমন একজন নন-আর্মি ট্রেইনি, ৪২৫ টি কনফার্ম কিলিং, সোভিয়েত সরকার তাকে তার “extraordinary heroism in connection with military operations against an armed enemy.” এর জন্য "the Distinguished Service Cross" পদকে ভূষিত করে।

৭) Fyodor Matveyevich Okhlopkov:


কাহিনী হলো সে আর তার ভাই একসাথে যুদ্ধ করতে যায় এবং একটি যুদ্ধে তার ভাই মারা যায়, তখন সে শপথ নেয় যে সে ঐ ডিভিশনের সবাইকে শিকার করবে, শুরু হয়ে গেল তার শিকার অভিযান, সে স্নাইপার গান দিয়ে কনফার্ম ৪২৯ টি হত্যা করেছিল এবং মেশিনগান দিয়ে আরও বেশী। ১৯৬৫ সালে তাকে সোভিয়েত বীর হিসাবে ভূষিত করা হয় এবং পুরস্কার হিসাবে "the Order of Lenin" নামের একটি কার্গো জাহাজ দেয়া হয়।

৬) Mikhail Ivanovich Budenkov:


৪৩৭ জন শত্রুসেনা শিকার করেছিলেন তার একমাএ স্নাইপার গান দিয়ে। কিন্তু তার বিশেষত এই যে তিনি ছিলেন একই সাথে একজন মেশিনগানম্যান ও একজন স্নাইপার। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে এমন যৌদ্ধা হাতে গোনা কয়েকজন ছিল। বাই দা ওয়ে, মেশিনগান দিয়ে কত শত্রুসেনা মারছে তার হিসাব নাই।

৫) Vladimir Nikolaevich Pchelintsev:


সাইকো কিলার ছিলেন ইনি। সাইকো এই অর্থে যে তার একমাএ সেটিসফেকশন ছিল জার্মান বাহিনীর সেনাদের হত্যা করা। সে যুদ্ধক্ষেত্রে যেমন শিকার করতো তেমনি জার্মান এরিয়া ঢুকেও সে শিকার করতো। তার বিশেষত হলো সে অফিসার রেংকের নিচে কাওকে হত্যা করতো না। সে ৪৫৬ জন অফিসারকে হত্যা করেছিল!

৪) Ivan Nikolayevich Kulbertinov:


সোভিয়েত রেড বাহিনীতে ৫৫,০০০ নারী স্নাইপার ছিল। এবং ২,০০০ জন যুদ্ধক্ষেত্রে একটিভ ছিল। তাদের ভিতর Ivan Nikolayevich Kulbertinov ছিল সফলদের ভিতর একজন নারী স্নাইপার শার্পশুটার। ৪৮৯ জন শিকার করা এই নারীকে নিয়ে কিছুটা প্রশ্ন আছে, অনেকে তাকে নারী হিসাবে কাউন্ট করে না, মানে বিলিভ করতে পারে না যে একজন নারী এতোটা হার্ডকোর হতে পারে। যুদ্ধের পর সে একদম গায়েব হয়ে যায় ফলে অনেকে বলে কোন পুরুষ এই নাম নিয়ে শিকার করেছে।

৩) Nikolay Yakovlevich Ilyin:


২০০১ সালে হলিউড মুভি "Enemy at the Gates" তৈরি করা হয়েছিল বিখ্যাত রাশান স্নাইপার Vasily Zaitsev এর উপর কিন্তু Nikolay এর উপর কোন মুভি তৈরি হয়নি। ৪৯৪ টি শিকার ও যুদ্ধক্ষেত্রে তার অবদান ও বীরত্ব এমনই যে তাকে নিয়েও মুভি করা যেত।

২) Ivan Mihailovich Sidorenko:


যুদ্ধের আগে তিনি ছিলেন একটি সম্ভ্রান্ত পরিবারের কলেজ পড়ুয়া ছেলে। ১৯৩৯ সালে তিনি স্নাইপার ট্রেনিং নেন এবং আবিষ্কার করেন যে তার গড গিফটটেড এইমিং এবিলিটি আছে। সোভিয়েত বাহিনী তার সর্বোচ্চ ব্যবহারও করেছিল। যুদ্ধে আহত হবার আগে তিনি ৫০০ টি শিকার করেছিলেন। সুস্থ হবার পর তিনি একজন স্নাইপার ট্রেইনার ও সামরিক শিক্ষক হিসাবে কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৪৪ সালে তাকে "Hero of the Soviet Union" খেতাবে ভুষিত করা হয়। তার বিখ্যাত কাহিনী গুলার ভিতরে একটা ছিল এমন যে সে বুলেট ব্যবহার করে একটি ট্যাংক, তিনটি অন্যান্য যানবাহন ধ্বংশ করেছিলেন। বুঝছেন কেমনে ?? তিনি যাষ্ট তেলের টেংকিতে এইম করেছিল।

১) Simo Häyhä:


তিনি লিষ্টের একমাএ নন-সোভিয়েত স্নাইপার যিনি রেড আর্মি সোলজার ছিলেন। তার ৫৪২ টি কনফার্ম কিলিং আর ৭০৫ টি আনকনফার্ম(তাকে ব্লেম দেওয়া হয়) কিলিং এর জন্য তাকে সবচেয়ে ডেডলিয়েষ্ট স্নাইপার হিসাবে গন্য করা হয়। যুদ্ধের আগে তিনি ছিলেন একজন কৃষক ও একজন শখের শিকারি। তার ঘর ভর্তি ছিল মার্কসম্যান চ্যামপিয়ানশিপ ট্রফিতে। তার বিশেষত ছিল সে কোন টেলিস্কোপ ব্যবহার করতো না, তার মানে সে যাকে শিকার করতো তাকে প্রায় না দেখেই শিকার, মানে লো ভিজিবিলিটি!!! তার মুখের চেহারা ছিল অস্বাভাবিক আকৃতির কারন তার মুখে প্রতিপক্ষ স্নাইপারের বুলেট লাগে। সাদা তুষারের মত পোষাক পরে সে তুষারবৃত্ত পাহাড়ি এলাকায় একাকি যুদ্ধ করতেন। এর জন্য তাকে ডাকা হতো “White Death”। যখন শত্রুবাহিনীতে গুজব উঠতো যে তাদের বাহিনীতে স্নাইপিং শুটে কেও মারা গেছে যে শট টি নেওয়া ছিল অসম্ভব তখন ধরে নেওয়া হতো হতভাগা সোলজারটি Simo Häyhä এর শিকার। তিনি ৯৬ বছর বয়সে মারা যান। মারা যাওয়ার আগে ১৯৯৭ সালে (এর কিছুদিন পর তিনি মারা যান) এক ইন্টারভিউ-এ তাকে প্রশ্ন করা হয় সে এতো ভাল একজন মার্কসম্যান হলো কিভাবে। তিনি সিমপ্লি জবাব দিছিলেন, “practice”।

ধন্যবাদ।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:৪৭
৩০টি মন্তব্য ২৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

---অভিনন্দন চট্টগ্রামের বাবর আলী পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে এভারেস্ট জয়ী---

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৯ শে মে, ২০২৪ দুপুর ২:৫৫





পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট জয় করেছেন বাবর আলী। আজ বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ৮টায় এভারেস্টের চূড়ায় ওঠেন তিনি।

রোববার বেসক্যাম্প টিমের বরাতে এ তথ্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×