somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পৃথিবীর যত সব আজব-অদ্ভুত ... আজকের বিষয়-বিখ্যাত নারী স্পাই (কত অজানা রে পার্ট-২৯)

২১ শে মার্চ, ২০১৩ বিকাল ৪:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

না আজ আমাদের এমআরনাইন "মাসুদ রানা"এর শয্যাসঙ্গীদের কথা বলবো না। ব্রিটিশদের জিরোজিরোসেভেন জেমস বন্ডের শয্যাসঙ্গীদের কথাও বলবো না। পরিচয় হবে বাস্তবতার সাথে। মাদকতা পূর্ন দুইটা চোখ, অপুর্ব একটা মুখ আর মাথার ভিতর একটা ক্ষুরধার ব্রেন, স্পাই হতে আর কি লাগে ??? আজ বলবো দুনিয়ার বিখ্যাত কিছু স্পাই এর কথা যারা শুধু তাদের সৌন্দর্য দিয়েই প্রতিপক্ষকে বোকা বানাতো না, তাদের ছিল অসাধারন বুদ্ধিমত্তা। চলেন তাদের সাথে দেখা করে আসি ...

১০) Isabella Marie Boyd


Belle Boyd অথবা বিচ্ছিন্নতাবাদীদের কাছে "ক্লিওপেট্রা" হিসাবে পরিচিত ছিলেন তিনি। আমেরিকান সিভিল ওয়ারে {মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গৃহযুদ্ধ (১৮৬১-১৮৬৫)হল যুক্তরাষ্ট্রে সংগঠিত এক আঞ্চলিক বিরোধ যা মূলত মার্কিন ফেডারেল সরকার আর বিপ্লবী ১১ টি দাস-নির্ভর প্রদেশের মাঝে সংগঠিত হয়। রাষ্ট্রপতি জেফারসন ডেভিস এর নেতৃত্বে এই ১১ টি প্রদেশ পুর্বেই নিজেদেরকে মূল যুক্তরাষ্ট্র হতে আলাদা ঘোষণা করেছিল এবং নামকরণ করেছিল কনফেডারেট স্টেটস অব আমেরিকা। এদের বিরুদ্ধে ছিলো রাষ্ট্রপতি আব্রাহাম লিঙ্কন-এর ইউনিয়ন সরকার আর মার্কিন রিপাবলিকান দল, যারা দাস-প্রথার বিস্তারের ঘোর বিরোধী ছিল।} একজন কনফেডারেট গুপ্তচর হিসাবে কাজ করতেন। তিনি তার বাবার হোটেল "ফ্রন্ট রয়েল" পরিচালনা করতো এবং ১৮৬২ সালে কনফেডারেল জেনারেল স্টোনওয়াল জ্যাকসনের কাছে মূল্যবান তথ্য সর্বরাহ করতো। ইসাবেলা হঠাৎ করেই গুপ্তচরবৃত্তি কর্মজীবন শুরু করেন। ১৮৬৬ সালের তার একাউন্ট অনুযায়ী ৪ই জুলাই ১৮৬১ সালে ইউনিয়ন সেনাবাহিনীর সেনাদের একটি দল তার বাড়ির বাইরে কনফেডারেল পতাকা দেখতে পায়, তারা পতাকাটি ছিড়ে ফেলে এবং তার জায়গায় একটি ইউনিয়ন পতাকা ঝুলিয়ে দেয়। এই ঘটনা তাকে রাগান্বিত করে কিন্তু যখন সেনাদের মধ্যে একজন তার মায়ের সাথে দূর্ব্যবহার করে, তখন সে রাগে উন্মাদ হয়ে যায়, সে একটানে তার বাবার বন্দুক বের করে এবং গুলি করা ঐ সৈন্যকে মেরে ফেলে।
১৮৬২ সালের মে মাসে ইউনিয়ন জেনারেল জেমস সিল্ড তার বাড়ির কাছের একটি হোটেলে অবস্থান করে। ইসাবেলা ঐ রুমের ক্লজেটে লুকিয়ে থাকে এবং ইনফর্মেশন গেদার করে কনফেডারেল কর্নেল টুর্নাল আ্যাশবিকে রিপোর্ট করে।
প্রথমবার বার ধরা খাওয়ার সময় সে তার চাকরের hollowed-out watch case এ করে তথ্য পাচার করছিল। সেবার তাকে বলা হয় নেক্সট টাইম তাকে মৃত্যুদন্ড দেওয়া হবে। সে ভয় না পেয়ে স্পাই হিসাবে তার কাজ চালিয়ে যেতে থাকে। তার অসমসাহসীকতাপূর্ন কাজের জন্য তাকে "Southern Cross of Honor","captain" and honorary "aide-de-camp" সম্মানে ভুষিত করা হয়। ১৮৪৪ সালের ৯ই মে জন্ম নেওয়া এই স্পাই ১৯০০ সালের ১১ই জুন হার্ট এটাকে মারা যান।

৯) Nancy Wake


একটি ব্রিটিশ এজেন্ট হিসাবে তিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষের দিকে কাজ শুরু করেন। তিনি মিএ বাহিনীর সবচেয়ে সতর্ক ও ছদ্দবেশী স্পাই ছিলেন। জার্মানদিগের গুপ্ত পুলিশ গেস্টাপো তাকে "হোয়াইট মাউস" বলতো, সে সময় সে ছিল গেস্টাপোর মোস্ট ওয়ান্টেড লিস্টেড স্পাই এবং ১৯৪৩ সালে তার মাথার দাম ঘোষনা করা হয় ৫ মিলিয়ন ফ্রাংক। ১৯৪৪ সালের এপ্রিল মাস থেকে ফ্রান্সের সম্পূর্ণ মুক্তি পর্যন্ত, তার ৭,০০০ maquisards(ফ্রান্স রেজিসটেন্সের গেরিলা ব্যান্ড) ২২,০০০ হাজার SS জার্মান সেনার সাথে যুদ্ধ। তাতে ১৪০০ জার্মান সেনা নিহত হয়। অপরদিকে মাএ ১০০ জন maquisards গেরিলা নিহত হয়। সে একজন জার্মান SS সৈন্যকে খালি হাতে হত্যা করে কারন একটি রেইডের সময় সে এলার্ম বাজিয়ে জার্মান সেনাদের সতর্ক করার চেষ্টা করছিল। যুদ্ধের পর তিনি "the George Medal", "the United States Presidential Medal of Freedom", "the Médaille de la Résistance" ও তিনবার "the Croix de Guerre" সম্মানে ভুষিত হন। তিনি যুদ্ধের পর জানতে পারেন যে গেস্টাপো তার হদিস না বলার জন্য তার স্বামীকে টর্চার করে মেরে ফেলেছে। যুদ্ধের পর তিনি ব্রিটিশ বিমান মন্ত্রণালয় গোয়েন্দা বিভাগে চাকরি নেন এবং প্যারিস এবং প্রাগ এর দুতাবাসে কাজ করেন। ১৯১২ সালের ৩০শে অগাষ্ট জন্ম নেওয়া এই স্পাই এখনো বেচে আছে। (কার গোমর যে ফাস করতাছে তা আল্লাহই জানে)

৮) Margaret Kemble Gage


তিনি ছিলেন General Thomas Gage এর স্ত্রী। General Thomas Gage আমেরিকান রিভলুশনারি ওয়ার চলা কালে ব্রিটিশ আর্মির নেত্রীত্ব দিয়েছিলেন। তো ইতিহাস বলে যে মার্গারেট কেম্বল সমার্থন করতো আমেরিকান রিভলুশনারি যুদ্ধকে এবং তার নিজের স্বামীর উপরেই সে স্পাইং করতো। যারা ভাবছেন যে সে তার স্বামীর সাথে বেইমানী করেছে তাদের বলছি, সে ছিল জন্মগত ভাবে আমেরিকান। ১৭৭৫ সালে তাকে গুপ্তচরবৃত্তির অপরাধে ইংল্যান্ডে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। ১৭৩৪ সালে জন্ম নেওয়া এই মহিওসি নারী ১৮২৪ সালে মারা যান।

৭) Josephine Baker


তিনি ছিলেন আমেরিকায় জন্ম নেওয়া ফ্রেন্চ ডান্সার, সিংগার ও আভিনেত্রী। তার নিক নেম ছিল “Bronze Venus”, the “Black Pearl”, “Créole Goddess”। তিনিই প্রথম আমেরিকান-আফ্রিকান অভিনেতা যিনি "মেজর মোশন পিকচারে" অভিনয় করেন এবং আমেরিকা সেন্ট্রাল হলে পারফর্ম করে বিশ্বব্যপি খ্যাতি লাভ করেন। তিনি আফ্রিকান-আমেরিকান সিভিল রাইট মুভমেন্টের সাথেও জরিত ছিল। মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র (Martin Luther King, Jr.) গুপ্তহত্যার শিকার হয়ে নিহত হবার পর তাকে করেট্টা স্কট কিং (মা.লু. কিং জু. এর স্ত্রী) আনঅফিশিয়ালি লিডারশিপ অফার করেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ফ্রেন্চ রেজিসটেন্স কে সাহায্য করার জন্য প্রথম আমেরিকান ওমেন হিসাবে ফ্রেন্চ মিলেটারি অনার "the Croix de guerre" অর্জন করেন। এই গুনী মহিলা্ ১৯০৬ সালের ৩রা জুন জন্ম গ্রহন করেন এবং ১২ই এপ্রিল ১৯৭৫ সালে মৃত্যু বরন করেন।

৬) Noor Inayat Khan


এটা আমাদের অরিজিনের অতীত ইতিহাস। কি ভাবে শুরু করবো বুঝতাছি না। নুর এনায়েত খান, যার বাবা ছিলেন হযরত এনায়েত খান, যিনি ছিলেন একজন সুফি সাধক এবং মিউজিশিয়ান। নুর এনায়েত খান ছিলেন একজন চাইল্ড স্পেশালিষ্ট, যিনি বাচ্চাদের জন্য বই লিখতেন, ১৯৩৯ সালে তার বাচ্চাদের জন্য লেখা প্রথম বই "Twenty Jataka Tales" প্রকাশিত হয়। ১৯৪০ সালে নুর একজন স্বেচ্ছাসেবিকা হিসাবে ফ্রেন্চ উইমেন আক্সেলারি এয়ার ফোর্সে যোগ দেন। তার বহু ভাষা জানা থাকার কারনে তাকে ইনটেলিজেন্ট এজেন্সিতে নিয়োগ করা হয়। সেখানে তাকে স্পাই হিসাবে ট্রেনিং দেওয়া হয়, অস্ত্রপ্রশিক্ষন দেওয়া হয় এবং ইয়েস "সি ইজ লাইসেন্স টু কিল"। তার কোড নেম দেওয়া হয় "Madeleine"। ফাইনালি, নুর এনায়েত খান একটা ফল্স পাসপোর্ট, কিছু ফ্রাং ও একটা পিস্তল নিয়ে তার নতুন কর্মস্থল প্যারিসের উদ্দেশ্যে যাএা শুরু করে। জার্মানি ইনটেলিজেন্সের হাতে ধরা পরার আগে তিনি ফ্রান্সে তিন মাস স্পাই হিসাবে তথ্য সংগ্রহ করেন। একজন ফ্রেন্চ পাইলট টর্চারের মুখে তার অবস্থান গেস্টাপোর কাছে ফাঁস করে দেয় এবং গেস্টাপো তাকে গ্রেফতারের জন্য বিশাল জাল ফেলে এবং একজন ফ্রেন্চ ডাবল এজেন্টকে ব্যবহার করে ১৯৪৩ সালের অক্টোবরে তাকে গ্রেফতার করা হয়। জার্মান সিক্রেট এজেন্টরা ইনটারোগেট করে কোন তথ্য বের করতে ব্যর্থ হয় কিন্তু তার রুম সার্চ করে তার গোপন নথি খুজে পান যার সাহায্যে জার্মানরা তার নামে ফ্রেন্চ ইনটেলিজেন্সকে ফল্স ইনফর্মেশন পাঠানো শুরু করে। কিন্তু আমাদের নুর তার কোড ভুল বলার কারনে ফ্রেন্চ ইনটেলিজেন্স জার্মানিদের চাল বোঝে যায়। তিনি ফ্রান্সে অবস্থিত জার্মান জেল থাকে ২ বার পালানোর ব্যর্থ চেষ্টা করেন। ভবিষতে পালাবে না এই মর্মে কনফার্মেশন নিতে ব্যর্থ হয়ে ২৭শে নভেম্বর তাকে "for safe custody" এর জন্য জার্মানীতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। পরবর্তী ১০ মাস হাজার বার টর্চার ও ইনটারোগেটের মুখোমুখি হলেও তিনি তার আসল নামটাও প্রকাশ করেন নি। এ সময় তাকে ২৪ ঘন্টা হাতকরা পরিয়ে রাখা হতো। প্রিজন সেলেও তাকে শিকলবদ্ধ করে রাখা হতো। জার্মান ইমটেলিজেন্স তাকে "highly dangerous" হিসাবে ক্লাসিফাই করে। জার্মানরা তাকে এতোটাই সতর্কতার সাথে জার্মানিতে পাঠায় যে ফ্রেন্চ ইনটেলিজেন্সের তালিকায় তার ফাইলের উপর "Nacht und Nebel" সিল দেওয়া হয়। ( "Nacht und Nebel" মানে হলো condemned to "Disappearance without Trace")। যুদ্ধের পর জেলের ডাইরেক্টর বলেন, "Inayat Khan remained uncooperative and continued to refuse to give any information on her work or her fellow operatives."।
১১ই সেপ্টেম্বার ১৯৪৪ সালে নুর ও সাথে আরও তিনজন SOE agent Yolande Beekman, Eliane Plewman ও Madeleine Damerment কে Karlsruhe prison থেকে Dachau Concentration Camp আনা হয়।
১৩ই সেপ্টেম্বার ১৯৪৪ সালে ভোর বেলা এই চারজন স্পাই কে মাথার পিছনে গুলি করে হত্যা করা হয়। হত্যার পর সাথে সাথে তাদের মৃতদেহ পুড়িয়ে ফেলা হয়। ১৯৫৮ সালে ঐ ক্যাম্পের বেঁচে যাওয়া একজন প্রিজনার প্রকাশ করেন যে হত্যার আগে নুর এনায়েত খানকে একজন high-ranking SS officer, "Wilhelm Ruppert"(পরবর্তীতে তাকে ফাঁসি দেওয়া হয়) সারা রাত নির্মম ভাবে প্রহার করে।
তিনি George Cross(১৯৪৯ সালে তিনি মরোনত্বর এই সম্মান পান, পৃথিবীতে এখন পর্যন্ত মাএ চারজন নারী এই সম্মান পেয়েছেন), Croix de Guerre, Mentioned in Dispatches সম্মান লাভ করেন। এবং ব্রিটিশরা তার কথা ভুলে যায়। ২০১২ সালে তার সম্মানে লন্ডন গর্ডন স্কয়ারে একটি আবক্ষ মূর্তি উম্মোচন করা হয়।
মৃত্যুর আগের মুহুর্তে তিনি চিৎকার করে বলেন "লিবর্টি"।
১৯১৪ সালের ১লা জানুযারি জন্ম নেওয়া এই সাহসী নারী মাএ ৩০ বছরে মারা যান। তিনি ছিলেন ভারতবর্ষের বিখ্যাত সুলতান "টিপু সুলতান" এর বংশধর।

৫) Anna Chapman


১৯৮২ সালের ২৩শে ফেব্রুয়ারি জন্ম নেয়া মাএ ২৮ বছর বয়সী আ্যানা চাপম্যান, রাশান সুন্দরী ও মডেল, বিলাসবহুল জীবন জাপনে অভ্যস্ত, যার বাবা একজন কুটনীতিক, বাস করতো নিউ ইয়ার্কে, ২৭শে জুন ২০১০এ অন্য ৯ জনের সাথে গ্রেফতার হয় ইউএস এটর্নি জেনারেল কে আগে না জানিয়ে আইনবহির্ভুত ভাবে Russian Federation’s external intelligence agency, the SVR (Sluzhba Vneshney Razvedki) এর অপারেশন চালানোর অপরাধে। ৮ই জুলাই ২০১০ সালে তাকে রাশিয়ায় ফেরত পাঠানো হয়। বাইদাওয়ে, তার আইকিউ ১৬২ (যারা নাক শিটকাইতাছেন তাদের বলছি, আইনস্টাইনের আইকিউ ১৬০ এর উপরে।)

৪) Violette Szabo


তিনি ছিলেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ব্রিটিশ সিক্রেট এজেন্ট। ৪২ দিনের কঠিন প্রেমের পর ১৯ বছর বয়সী Violette, Etienne Szabo(৩১), যিনি একজন ফ্রেন্চ অফিসার ছিলেন, তাকে বিয়ে করেন। তাদের একমাএ কন্যা, যার নাম তানিয়া, জন্ম নেয়ার অল্প কয়েকদিন পর Etienne মারা যান, তিনি ১৯৪২ সালে the Battle of El Alamein গুলিবিদ্ধ হন। তার মৃত্যুর পর Violette British Special Operations Executive (SOE) এ যোগ দান করেন। ২৬শে জুন ১৯২১ সালে জন্ম নেওয়া এই সাহসী নারী মাএ ২৪ বছর বয়সে স্পাই হিসাবে কর্মরত থাকা অবস্থায় ৫ই ফেব্রুয়ারি ১৯৪৫ সালে নিহত হন।

৩) Liu Hulan


মাএ ১৫ বছর বয়সী লুই হুলান ছিলেন চাইনিজ সিভিল ওয়ারের(the Guomindang ও Communist Party এর মধ্যকার যুদ্ধ) সময় কমুনিষ্ট পার্টির একজন স্পাই ছিল। তিনি কমিনিষ্ট পার্টির যোদ্ধাদের জন্য খাবার,গামবুট, পোশাক ও তথ্য আদানপ্রদান করতো। ১৯৪৭ সালের ১২ই জানুয়ারি Guomindang সেনারা লুই হুলান এর গ্রাম চারপাশ থেকে ঘিরে ফেলে এবং তাদের ঘরবাড়ি তছনছ করে। তারা গ্রামের সবাইকে একজায়গায় জরো করে এবং কারা কারা কমুনিষ্ট পার্টির সাথে জড়িত তা জিঙ্গাস করে। কিন্তু কেও উত্তর না দিলে একজন বিশ্বাসঘাতক লুই সহ বাকি সবাইকে দেখিয়ে দেয়। Guomindang লিডার প্রথমে অল্প বয়সী লুই এর মানসিকতা পরিবর্তনের চেষ্টা করে, সেই চেষ্টায় ব্যর্থ হবার পর তার সামনে বাকি সদস্যদের মাথা কেটে ফেলার আদেশ দেন। তাতেও লুই ভয় না পেয়ে গ্রামবাসীদের বিদায় জানায় এবং তলোয়ারের সামনে মাথা পেতে দেয়।

২) Charlotte de Sauve


এইটাও ইতিহাস। Charlotte de Sauve ছিলেন একজন ফরাসি অভিজাত নারী এবং King Henry of Navarre(পরে তিনি King Henry IV of France হন) এর মিসট্রেস। কিন্তু তার আসল পরিচয় হলো তিনি ছিলেন Queen Mother Catherine de' Medici' এর গোয়েন্দা সংঘ "Flying Squadron" (সুন্দরী নারীদের নিয়ে গঠিত একটি গুপ্ত সংগঠন যাদের হাইক্লাস অফিশিয়াল রেংক পার্সনদের সিডিউস করে তথ্য বের করার জন্য ব্যবহার করা হতো) এর সদস্য। Charlotte de Sauve কিং হেনরির ছোট দুই ভাইকে এমন ভাবে সিডিউস করেন যে তারা রাজা হবার স্বপ্ন ভুলে গিয়ে তার পিছনে পরে থাকতো। (বাংলা করে কাহিনী বরবাদ করছি, ইংরেজীতে রানীর নিজের ডাইরির কয়েকটা লাইন পড়ুন,
“Charlotte de Sauve treated both of them [Navarre and Alençon] in such a way that they became extremely jealous of each other, to such a point that they forgot their ambitions, their duties and their plans and thought of nothing but chasing after this woman”। স্পাই এর বস বলতেই হবে কি বলেন ???

১) মাতাহারি


দুনিয়ার যত নারী স্পাই এর তালিকা আছে সব জায়গায় সর্বপ্রথমে আপনে পাবেন মাতাহারিকে। তিনি অতি ক্ষুদ্র সোনালী ব্রা ছাড়া প্রায় পুরোপুরি নগ্ন হয়ে নৃত্য করতেন। তার সৌন্দর্য ও আর্ট চারিদিকে বাতাসের বেগে ছড়িয়ে পরে এবং প্যারিসের সব পুরুষরা তাকে দেখার জন্য চলে আসে। তাকে দ্রুত স্পেন, Monte Carlo এবং জার্মানিতে শো করার জন্য ব্রাঞ্চ খুলতে হয়। তার জনপ্রিয়তা কমতে থেকে কারন আরও কম বয়সী ও প্রতিভাবান ডেন্সার পার্ফম করা শুরু করে ফলে তাকে হাইক্লাস সোসাইটি গার্ল হিসাবে কাজ শুরু করতে হয়। এই কাজে সমাজের উচু শ্রেনীর ও হাই র‌্যাংক অফিশিয়ালদের কাছে অবাধ যাতাযাত শুরু হয়। সে সময় তিনি ইউরোপের সর্বোচ্চ পারিশ্রমিকপ্রাপ্ত কলগার্ল ছিল। তার এই জনপ্রিয়তা এবং সংঘাতপূর্ন তিনটা দেশে তার অবাধ যাতাযাতের জন্য তাকে বিভিন্নদেশের ইনটেলিজেন্স এজেন্সি ব্যবহার করা শুরু করে। অনেকে তাকে ফ্রান্স ও জার্মানীর ডাবল এজেন্টও মনে করে। ১৯১৭ সালের জানুযারি মাসে জার্মান মিলেটারি এটাচড মাদরিদ থেকে বার্লিনে একটি রেডিও মেসেজ ট্রান্সমিট করে যাতে একজন জার্মান স্পাই (যার কোড নেম ছিল H-21)কে সাহায্যের জন্য অনুরোধ করা হয়। ফ্রেন্চ ইনটেলিজেন্স মেজেজটি ডিকোড করে এবং মাতাহারিকে এই কোডনেমের পারসন হিসাবে আইডেনটিফাই করে। তাকে জার্মান স্পাই সন্দেহে কারারুদ্ধ করা হয়, এবং ১৪ অক্টোবর ১৯১৭ সালে ফায়ারিং স্কোয়ার্ডে তাকে হত্যা করা হয়। ৩০ বছর পর তার প্রসিকিউটর বলেন, “we didn’t have enough evidence against her to flog a cat”।
স্পাই জগতে মাতাহারির আইডেনটিটি নিয়ে অনেক ধোয়াশা আছে। অনেকে মনে করে মাতাহারি কোন স্পাই ছিল না, তার বয়ফ্রেন্ড ছিল ডাবল এজেন্ট যে মুলত মাতাহারিকে ব্যবহার করতো তথ্য পাচারে জন্য। অনেকে মনে করে মাতাহারি নিজেই ডাবল এজেন্ট ছিল, তার পক্ষে ইনফর্মেশন আদায় করা খুব সহজ ছিল। অনেকে মনে করে মাতাহারি ছিল ফ্রেন্চ স্পাই, অনেকে মনে করে মাতাহারি জার্মান স্পাই। সব পরিচয়ের বড় পরিচয় ছিল সে একজন এক্সজোটিক ডান্সার ছিল। ;)

আমার "কত অজানা রে..." সিরিজের আগের তিনটা পোষ্ট ....

পৃথিবীর যত সব আজব-অদ্ভুত ... আজকের বিষয়-আইও জিমা দ্বীপের যুদ্ধ (কত অজানা রে পার্ট-২৬)

পৃথিবীর যত সব আজব-অদ্ভুত ... আজকের বিষয়-"পেভলভ'স হা্উস" দখলের জন্য নাজি-সোভিয়েত যুদ্ধ (কত অজানা রে পার্ট-২৭)

পৃথিবীর যত সব আজব-অদ্ভুত ... আজকের বিষয়-নিলামে বিক্রি হওয়া সবচেয়ে দামী গাড়ি (কত অজানা রে পার্ট-২৮)
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ৮:০৪
১০টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

---অভিনন্দন চট্টগ্রামের বাবর আলী পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে এভারেস্ট জয়ী---

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৯ শে মে, ২০২৪ দুপুর ২:৫৫





পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট জয় করেছেন বাবর আলী। আজ বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ৮টায় এভারেস্টের চূড়ায় ওঠেন তিনি।

রোববার বেসক্যাম্প টিমের বরাতে এ তথ্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সমাধান দিন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৩১




সকালে কন্যা বলল তার কলিগরা ছবি দিচ্ছে রিকশাবিহীন রাস্তায় শিশু আর গার্জেনরা পায়ে হেটে যাচ্ছে । একটু বাদেই আবাসিক মোড় থেকে মিছিলের আওয়াজ । আজ রিকশাযাত্রীদের বেশ দুর্ভোগ পোয়াতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে গরু দুধ দেয় সেই গরু লাথি মারলেও ভাল।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২০ শে মে, ২০২৪ রাত ১২:১৮


০,০,০,২,৩,৫,১৬, ৭,৮,৮,০,৩,৭,৮ কি ভাবছেন? এগুলো কিসের সংখ্যা জানেন কি? দু:খজনক হলেও সত্য যে, এগুলো আজকে ব্লগে আসা প্রথম পাতার ১৪ টি পোস্টের মন্তব্য। ৮,২৭,৯,১২,২২,৪০,৭১,৭১,১২১,৬৭,৯৪,১৯,৬৮, ৯৫,৯৯ এগুলো বিগত ২৪ ঘণ্টায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×