আপনার মুখের উচ্চারিত প্রতিটি শব্দ বোমার চেয়েও শক্তিশালী।
ফিলিস্তিনে গত দুই সপ্তাহের অধিক সময় ধরে অবিরাম বোমা বর্ষণ করে বেসামরিক নাগরিকদের পাইকারি হারে হত্যা করা হচ্ছে।আমাদের কিছু করবার নেই, এই সময়ের মানুষ হয়ে এমন ভাববার কোন সুযোগ নেই।সব সময়ই আমাদের কিছু না কিছু করবার আছে।বৈশ্বিক ক্ষমতা সম্পর্কের প্রান্তে অবস্থানকালে নিজের জীবদ্দশায় চলমান গণহত্যার সাক্ষী হয়ে মনে হতে পারে আমাদের তেমন কিছু করবার নেই। ভয়ের সংস্কৃতিতে এক ধরনের নৈরাশ্য চেপে বসতে পারে, - ঠিক এটাই বৈশ্বিক ক্ষমতার খেলোয়াড়দের কাম্য।জনগণের মধ্যে নৈরাশ্য নিপীড়কের জন্যে বিজয়ের স্থায়িত্বের সুসংবাদ। নীরব দর্শকের অবস্থান সম্পূর্ণ উল্টে যেতে পারে, যদি দর্শক থেকে আমরা সক্রিয় সাক্ষী হওয়ার প্রস্তুতি নিতে শিখি এবং গণহত্যার সক্রিয় সাক্ষ্য দিতে শুরু করি।এই দায়িত্ব যদি গভীরভাবে নিতে আগ্রহী হই, তার উপায় ও কৌশল কি হতে পারে?
আমার পর্যবেক্ষণে সক্রিয় সাক্ষী হওয়ার উপায়ঃ
প্রথমতঃ বলবেন না, আমি ফিলিস্তিনে কি হচ্ছে জানিনা, কিংবা বুঝি না। জানা-বোঝা আপনার জন্যে ফরজ।ফিলিস্তিনে কি হচ্ছে তা না জানার অর্থ একভাবে আপনি আপনার অজ্ঞতা ও মূর্খতা দিয়ে এই জাতিগত শুদ্ধিকরণকে জারী রাখতে অবদান রাখছেন।সক্রিয় সাক্ষী হতে হলে আপনাকে আধুনিক জমানার ৭৫ বছর ধরে চলা এই দীর্ঘ ও গভীর সংকটকে আগাপাশ তোলা জেনেবুঝে ঘরে ঘরে নিজেকে বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে শানিত করে তৈরি করতে হবে।
দ্বিতীয়তঃ জায়নবাদ এবং ইহুদীবাদের মধ্যে সুস্পষ্ট পার্থক্য করতে শিখতে হবে। জায়নবাদের ধ্বংসাত্মক ও বিষাক্ত দিকগুলো জেনে বুঝে যেমন প্রতিরোধ করতে হবে, তেমনি একই সাথে ইহুদিবাদী ধর্ম, জীবনধারার প্রতি সম্মান বজায় রাখতে হবে।দুনিয়ার বুকে ইহুদী সম্প্রদায়েরও আর সকল মানব সম্প্রদায়ের মত নিশ্চিন্তে এবং নিরাপদভাবে টিকে থাকবার এবং বিকশিত হওয়ার পরিস্থিতিতে সামিল হতে হবে, দায়িত্ব নিতে হবে।
তৃতীয়তঃ ইউরোপের কুখ্যাত হলোকাস্ট এবং ইউরোপে ইহুদী জাতির প্রতি বিদ্বেষ যথা অ্যান্টি-সেমিটিজম সম্পর্কে ওয়াকিবহাল হতে হবে।অ্যান্টি-সেমিটিজম সম্পূর্ণ পরিত্যাজ্য করতে হবে। জার্মান নাৎসিদের সৃষ্ট মহাঅনৈতিক ইহুদীনিধনযজ্ঞকে জ্ঞান-প্রজ্ঞা-করুণার সাথে জেনে-বুঝে ইহুদী জাতির টিকে থাকা ও বিকাশের অধিকার কায়েম করতে হবে।
চতুর্থতঃ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ইসরাইলের সম্পর্কের গাঁটছড়া বিশ্বরাজনীতির এক কেন্দ্রীয় স্থান হিসাবে জানা-বোঝা চালিয়ে যেতে হবে।
অক্টোবর ২৭, ২০২৩
উইস্কন্সিন, যুক্তরাষ্ট্র
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে অক্টোবর, ২০২৩ রাত ১০:৩৮