somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মেঘের দেশে (ছড়াগুচ্ছ)

০৯ ই জুন, ২০১১ রাত ৯:২৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


১. মেঘের বাড়ি

আকাশ ঢেকে মেঘের বাড়ি
মেঘের পরে মেঘ
সূর্য্যি মামা যাচ্ছে চলে
ডাকছে শুধু ভেক।

মনটা তার ভীষণ খারাপ
দিচ্ছে যেন আড়ি
আর আসবোনা কাল আসবো
যাও পাখিরা বাড়ি।

লাল সোনালী ধূসর মিলে
খেলছে মেঘের ভেলা
আঁকছে যেন খুকুমনি
ছড়িয়ে রঙের মেলা।

গাছের ফাঁকে রাত্রি নামে
পৃথ্বী বড্ড একা
চাঁদ হেসে কয়
পেলাম তোমায়
ভাবছো কেন সখা।

সাঝ বেলাতে কত স্মৃতি
বুনছে নানীমা
নামিয়ে তালা সাজিয়ে ডালা
একটু শোননা।

খুকু হাসে খুকু কাঁদে
খুকু ভয়ে লুকায়
লক্ষী পেঁচা নাক উচিয়ে
কি হয়েছে সুধায়।

২. রাজকুমারী মৌরিলতা

আজব দেশের
আজব কথা
রাজকুমারী মৌরিলতা
হেসে হেসে গান গায়
সুযোগ পেলে পান খায়।

সঙ্গে থাকে খরগোশ ছানা
তাইরে নাইরে ছুঁতে মানা
একটু খানি ছুঁলে তাকে
পা ছড়িয়ে কাঁদতে থাকে।

এক চিমটি আদর দিলে
মুখে তার হাসি মেলে
ভেংচি কেটে চোখ রাঙালে
শিউলী ফোটে সাত সকালে।

৩. মেঘের দেশে

যাক চলে যাক সূয্যি মামা
খুকুর গায়ে নতুন জামা
জ্বলজ্বলে তার চুমকি
নামটি তার রুমকি।

মেঘে মেঘে অনেক বেলা
বৃষ্টি যেন খায় ছোলা
খুকুর সাথী ভোলাভালা
নামটি তার নাগরদোলা।

মেঘ বৃষ্টি সূয্যি মিলে
দূর দেশে সব যাচ্ছে চলে
সঙ্গে আছে রুমকি দোলা
পানসি আছে তার ছাতা খোলা।

ঘুরতে ঘুরতে মেঘের দেশে
তারা যেন রাজকুমারী বেশে
সবাই মিলে খায় খই
মিষ্টি মুখে বিলায় দই।

রুমকি মনির সব সঙ্গী সাথী
সাথে নিয়ে চাঁদের রাতি
এমনি করে যেন দিন গত হয়
স্বপ্নগুলো সব সাজানো রয়।

৪. সব সুন্দর

সব সুন্দর
সব সুন্দর
পৃথিবী সুন্দর
চাঁদ সুন্দর।

আকাশ আছে
মেঘও সুন্দর
তারা আছে
রাত সুন্দর।

পূর্ণিমা সুন্দর
জোছনা সুন্দর
সুন্দর সূয্যিমামা
সৌন্দর্যের কোন
সীমারেখা নেই
নেই দাঁড়ি-কমা।

৫. সাবাস দিলে

সাবাস দিলে পাই যে সাহস
বুকে পাই বল
মন যখনই উদাস থাকে
হয় যেন সম্বল।

রাস্তার ধারে ছোট্ট শিশু
কাঁদছে খাওয়ার জন্য
দুটো পয়সা দিতে পারো
কিনে খাবে অন্ন।

হাসিতে সে তাতা থৈথে
একটু খানি ছোঁয়ায়
বুক তোমারও ভরবে যে
একটু খানি দোয়ায়।

বৃথা সম্পদের কাঙাল হইওনা
সবকিছুই তো নশ্বর
সবার মুখে হাসি দেখে
হাসবেন স্বয়ং ঈশ্বর!

সাবাস দিবেন ঈশ্বর তোমায়
জয় মানবতার জয়
সামনে তুমি এগিয়ে যাও
নেইকো তোমার ভয়।

৬. ভুল

ভুল বানানে পটু সবাই
আমারো একই দশা
ভুল জীবনে চলছে সবাই
তারপরও তো হাসা।

ভুলের মাসুল গুনতে গুনতে
দিন হয়ে যায় গত
না জানি সারাজীবন ভর
ভুল আছে কত শত।

ভুল ঠিকানায় কভু কি যায়
পত্র পাঠাও যত
মনের কোনে উঁকি দেয়
বিগড়ে মাথা নত।

ভুল বানান নয়ত কোন
বুক কাঁপানো ভুল
এর চেয়ে ঢের মন্দ
যখন ভুলেতে মশগুল।

৭. ময়ুরপঙ্খী

নানুর মুখটি মনে পড়ে
মুখে থাকতো মিষ্টিপান
সকালসন্ধ্যা হামানদিস্তায়
যেন চলতো ছন্দগান।

এক চিমটি খেয়ে দেখো
আর যেননা চাও
অনেক হয়েছে আরনা খোকা
এখন তবে যাও।

সারাদিন এঘর ও ঘর
ঘুরতেন তিনি বেশ
গুছিয়ে রাখতেন কাপড় চোপড়
বাঁধতেন আবার কেশ।

নানুর হাতের পিঠাপুলি
তুলনা যার নাই
ব্যস্ত সবাই খাওয়ার দ্বন্দ্বে
কে কতটা পাই।

সন্ধ্যাকালে বসতাম সবাই
বিছিয়ে মাদুর দাওয়ায়
গল্প কথায় ভাসতো যেন
ময়ুরপঙ্খী হাওয়ায়।

৮. সুন্দর হলো সন্ধ্যাবাতি

সব সুন্দরই সুন্দর বটে
যেমন সুন্দর ফুল
সুন্দর তেমন পূর্ণিমা রাত
সুন্দর নদীর কূল।

সুন্দর প্রিয়ার মুখটি যেমন
তেমন সুন্দর চুল
চেহারা সুন্দরে নয়তো মানুষ
চিনতে করোনা ভুল।

সুন্দর হলো গুনের প্রকাশ
সুন্দর হলো আলো
সুন্দর হলো সন্ধ্যাবাতি
হৃদয় মাঝে জ্বালো।

৯. ভাবনা সাজাও

ভাল লাগেনা ভাল লাগেনা
সময় অসময়ে এই গান
তার চেয়ে ভাল হেরেগলায়
জোড়ে সোরে দাও তান।

ইচ্ছে করে রাঁধো বসে
নতুন কোন খাদ্য পদ
খাওয়াও তুমি বন্ধু ডেকে
নাহলে নাও নিজেই স্বাদ।

পারলে তুমি খোলো চিঠি
একটা একটা তুলে চাও
দেখবে তখন স্মৃতির নদে
বইবে সব রঙীন নাও।

আবার পারো টেনে নিতে
আগেই পড়া পুরাতন বই
আস্তে আস্তে গুনো পৃষ্ঠা
নয়শত নিরানব্বই।

ইচ্ছে হলে বাজাও বাঁশী
ইচ্ছে হলে বাঁধো কেশ
কিছুই যখন নেই করার
চলে যাও মেঘের দেশ।

ভাবনা সাজাও গল্প বানাও
মেঘে মেঘে ছড়াও হাসি
কুড়িয়ে আনো মনি মুক্তা
ছড়া বুনো রাশি রাশি।

১০. কষ্ট ফড়িং

মেঘের পরে মেঘ জমলেই
ইচ্ছে গুলো নাচে
ফড়িং হয়ে হেথায় হোথায়
নয়তো সবুজ গাছে।

বৃষ্টি যেন কান্না হয়ে
ঝরে অবিরাম
টুপ বৃষ্টি টাপ বৃষ্টি
শব্দ সবিরাম।

বৃষ্টির জলে যায় ধূয়ে যায়
যত জঞ্জাল দূরে
কষ্ট ফড়িং পাবে কি পাখা
হাওয়ায় পালাবে উড়ে।

১১. ছড়িয়ে পড়ছে আলো

বিশ্ব ছেড়ে মহাবিশ্বে
ছড়িয়ে পড়ছে আলো
মানবের জয় সবখানেতে
সবকিছু হোক ভাল।

ভালই ভালই চলছে সবই
চলছি আমি চলছো তুমি
হোক পরাজয় বিভেদ যত
চলুক সবাই একই মতো।

এমনি করতে চলতে চলতে
একদিন এই জগৎ মাঝে
কালো যত পালাবে লাজে
জ্বলবে আলো সকাল সাঝে।

১২. সুখের দিন

আসুক ধরায় সুখের দিন
মনে বাজুক মধুর বীন
সমুদ্রে জল রাশি রাশি
সবার মুখে সুখের হাসি।

সূর্য আকাশ চন্দ্র মিলে
হাসির ঝিলিক সাগর জলে
খেলছে বাতাস দুষ্টু সাগর
এযেন এক সুখের নগর।

পাল তুলে সব নৌকা চলে
পাখিরা সব ডানা মেলে
উড়ছে পাখি খেলছে তারা
এসুখ যেন নাহয় সারা।

১৩. কবিতা

কবিতা এক অনুভূতি তাই
সবার মাথায় আসে
কেউবা লিখে খাতার পরে
কেউবা হৃদয়ে পুষে।

কেউ কবিতায় ছন্দ ছড়ায়
কেউ কবিতায় গান
কেউবা কাঁদে কবিতা মাঝে
কারো উদাস মন।

ইচ্ছে হলে লিখতে পারো
নেইতো কোন মানা
দেখ আবার দাওনা কেঁদে
হও কবিতার রানা।

১৪. বসন্ত দিন

আজ আমাদের সুখের দিন ভাই
আজ আমাদের সুখের দিন
হাসবো কাঁদবো নাচবো সবাই
মিলবে কন্ঠ এক অভিন।

আজ আমাদের সুখের দিন ভাই
আজ আমাদের সুখের দিন
সুখের দিনে সবার কন্ঠ
যেন থাকে চির নবীন।

কন্ঠে থাকবে উদ্যমতা
ছাড়িয়ে সকল বাঁধা
জয় পরাজয় সে কিছু নয়
সবার মন সাদা।

আজ আমাদের সুখের দিন ভাই
আজ আমাদের সুখের দিন
রঙ ছড়িয়ে গোলাপ হাসে
শুরু হলো বসন্ত দিন।

১৫. কবিতার স্বাদ

কবিতায় যে স্বাদ থাকে
কেউ কখনো জানে
ছন্দসুধা খোঁজ করে যে
সেই বুঝি মানে।

ছন্দে হাসে নদীর কূল
ছন্দে চলে ভ্রমর
ছন্দে আবার মৌমাছিরা
দুলিয়ে চলে কোমর।

মৌমাছি আর ভ্রমর যত
গন্ধে ব্যাকুল হয়
কবিতাতে পিয়াসী মন
সুগন্ধ খুঁজে পায়।

১৬. রুস্তম মিয়া

রুস্তম মিয়া মানুষ ভাল
নয় তো তেমন বদ
মাঝে মাঝে হাড়ি ভাঙ্গে
বউয়ের নাকে দেয় খত।

মধ্যে মধ্যে তামাক টানে
ছড়িয়ে দুই খানা পা
কথায় কথায় বলে শুধু
জীবনে তো কিছুই হলো না।

গোলা ভর্তি ধান
পুকুর ভর্তি মাছ
সারি সারি নারিকেল
তাল সুপারি গাছ।

গাছের তলে রোস্তম মিয়া
ভাবছে এখন বেশ
এক বছরে হারাইলাম
শ খানা কেশ।

গেল বছরেও হারাইছিলাম
তিন নম্বর বউ
এ বছর কি শূন্য যাবে
কাছে আসবে না কেউ।

১৭. কি দরকার

ভাবতে বসলেই দিন পার
কি দরকার এত ভাববার
আজ আছিতো কাল
যাত্রা সবার পরপার।

চাইলেও তো একদিন
হাত খুলে মনের ভুলে
পারবো না বা
চলবে না হাত চুলে।

তার চেয়ে ভাল
খাতা খুলে কলম তুলে
মনের ভুলে আঁকি
দিচ্ছি যেন সময়টাকে ফাঁকি।

১৮. আকাশ মেঘের কথা

আকাশ মেঘে চলছে খেলা
চলছে হাওয়ার কথা
কান পেতে শুনি আমি
তাদের মনের ব্যথা।

আকাশ বলে
ও মেঘ ভাই
বলনা আমায় তুই
কেমন করে ঐ জমিনটা
একটু খানি ছুঁই।

মেঘ বলে যে
ও আকাশ ভাই
দেনা তোর নীল ধোয়া
সাদার মাঝে এঁকে দেনা
তোর আদরের নীলচে ছোঁয়া।

আকাশ বলে কেমন করে
পরিয়ে দেই নীল পার
একটু হেসে মেঘ বলে
এত ভাবার কি দরকার।

১৯. স্নিগ্ধ পাখি

স্নিগ্ধ পাখি উড়ায় হাওয়ায়
মেলে ডানা দু'চোখ জুড়ায়
দূর আকাশে দূর নীলিমায়
গান গেয়ে যায় অসীম চূড়ায়।

পাখির গানে মনে প্রাণে
উজার করে রাত্রী আনে
প্রদীপ নিভে জোনাক জ্বলে
শাল বিথীকার ছায়াতলে।

রাতের পরে রাত আসে
সন্ধ্যা হাওয়ায় পাখি ভাসে
ছড়িয়ে সুধা মন ক্ষুধা
আসবেতো কাল যেন দ্বিধা।

২০. কোলাব্যাঙের অফিস ছুটি

মেঘ গুড়গুড় মেঘ গুড়গুড়
কোথায় তোমার বাড়ি
সাথে নেনা আমায় তুই
নাহলে দিবো আড়ি।

একটু হেসে বললো কেসে
যাচ্ছি চলে মামার দেশে
যাবি নাকি লক্ষী কোলা
খেলবো দু'জন নাগর দোলা।

এইনা শুনে কোলাব্যাঙ
করছে শুধু ঘ্যাঙর ঘ্যাং
নিচ্ছে সে অফিস ছুটি
সঙ্গে নিবে কলা রুটি।

২১. দিচ্ছি সাঁতার

ছড়ায় ছড়ায় দিচ্ছি জানায়
মনের কথা শত
পারবো কি ছড়ায় দিতে
কষ্ট আছে যত।

দিচ্ছি আমি দিচ্ছি সাঁতার
বিশাল সাগর পাড়ি
পারবো কি হতে পার
বাঁধার যত সারি।

এমনি করে হয়ত যাবে
সারাজীবন ভর
যেতে হবে অনেক দূর
কে আপন কে পর।

২২. বৃষ্টির রানী মেঘাবতী

ঐ আমাদের মেঘের বাড়ি
ঐ আমাদের গাঁও
মেঘের সাথে দেখা হলো
বৃষ্টিতে তুমি নাও।

বৃষ্টির রানী বুদ্ধিমতী
মেঘাবতী নাম
তার সাথে দেখা হলে
দিও সালাম।

খুশীতে সে উচ্ছ্বল হবে
হবে চোখ ছলছল
নাইয়ে দিবে তোমায় তখন
হাসবে কলকল।

২৩. মেঘের চাষে বৃষ্টি

উৎসাহ আর উদ্দীপনায়
চলছে মেঘের চাষ
তাতে যদি উৎপাদন হয়
ফসল বারো মাস।

মেঘের চাষে বৃষ্টি হলে
সে যে দারুণ কথা
ছন্দ ছড়ায় নামবে হেসে
বৃষ্টির রানী লতা।

লতার মুখে মিষ্টি হাসি
দিচ্ছে ছড়ায় বৃষ্টি
বৃষ্টি যেন মেঘে মেঘে
মেলে সুখ দৃষ্টি।

২৪. কোলাব্যাঙ ডাক্তার

মেঘের বাড়ি মেঘের ঘর
কোলাব্যাঙ ডাক্তার
চোখে দিয়ে চশমা
একটুও হাসেনা।

বর্ষা দিনে ডোবা থৈথে
ডাক্তার আছে রোগী কই
রেগে মেগে চশমা ছাড়ে
প্যাক প্যাক গান ধরে।

২৫. বাসার খুকী

হাঁটতে গিয়ে পা পিছলে
ধপাস করে পড়ে
বাসার খুকীর মনটা খারাপ
কাঁদছে গলা ছেড়ে।

স্কুলে আজ ভীষণ চাপ
অংক মেলে না
বাসায় এসে ঘরের কোণে
কান্না থামেনা।

একটু খানি মুচকি হাসি
আদর মাখা মুখ
বইবে তখন খুকীর মনে
অসীম স্বপ্ন সুখ।

২৬. খুকী এখন বড় মানুষ

স্বপ্ন ঘোরে খুকু হাসে
কখনো বা কাঁদে
বউঝিরা খোশগল্পে
মা তখন রাঁধে।

সবাই তখন চুপচাপ
ফিসফিসিয়ে বলে
খুকুমনি ভারী সুন্দর
পুঁথির মালা গলে।

খুকুমনি বড় হয়
যায় হেসে দিন খেলে
কেনা চায় হাসতে সদা
সবার আদর পেলে।

এমনি করে খুকু এখন
অনেক বড় মানুষ
কবিতায় সে ফোঁটায় পদ্ম
কবিতা তার ফানুশ।

২৭. মেজাজ পারদ মিটার

মন মেজাজের অবস্থা তো
ভীষন রকম খারাপ
উঠে গেছে মিটারে পারদ
আর নিবেনা চাপ।

আমি এখন বসে বসে
মেঘের গান গাই
মেজাজ টাকে হালকা করার
পারদ মিটার চাই।

মেঘের গানে বৃষ্টি যদি
টিপটিপিয়ে নামে
পুরনো মিটারে কাজ চলবে
নতুনের নেই মানে।

২৮. মেঘলা দিনে

মেঘ গুড়গুড় মেঘলা দিনে
করিস কি তুই ভাই
আয়না আমরা হেসে খেলে
বৃষ্টি নামাই।

নাচবো আমরা গাইবো শুধু
মেঘ বৃষ্টির গান
ব্যাঙ মামা বুক উচিয়ে
ধরবে কলতান।

ব্যাঙ নাচবে আমরা নাচবো
নাচবে দিদিমা
দোলনা ছেড়ে খুকুমনি
নাচবে ধিতাং তা।

২৯. খোকা বাবু

খোকা বাবু খোকা বাবু
একটু ফিরে চাও
তোমার জন্য এনে দিবো
সাত সাগরের নাও।

মুখটি তোমার কালো কেন
বিষাদ মেঘে ঢাকা
ঐ দেখনা কালো কোকিল
ডাকছে শুধু কাকা।

এইনা শুনে খোকাবাবু
খলখলিয়ে হাসে
কাগজ নৌকা বানিয়ে সে
ছলছলিয়ে ভাসে।

৩০. এই মেঘ এই বৃষ্টি

মেঘ বৃষ্টি মেঘ বৃষ্টি
মেঘ হলেই বৃষ্টি
তা না হলে হবে
যত্ত অনাসৃষ্টি।

তার চেয়ে ভাল
এই মেঘ এই বৃষ্টি
এই রোদ্দুর এই কায়া
এই আলো এই ছায়া।

এই বৃষ্টি টুপ
ব্যাঙ দিলো ডুব
হাসে খুকু সোনা
আমায় কেউ ছুঁইওনা।

৩১. ছন্দ

জীবনটাই তো ছন্দে ভরা
ঝর্নার যেমন রুপ
সেও চলছে ছন্দপায়ে
মেঘ বৃষ্টি টুপ।

টুপটুপিয়ে খুকু চলে
নদীর যেমন ছন্দ
সাগরটানে যায় ছুটে সে
ফুলের যেমন গন্ধ।

গন্ধে মাতাল প্রজাপতি
পাখির যেমন ডানা
নীলাকাশে হাওয়ায় উড়ে
গন্তব্য নেই জানা।

৩২. একটা কিছু

ইচ্ছে হলো সাদা পাতায়
আঁকছি কিছু বাঁকা লাইন
আঁকা শেষে দেখি শুধু
দাঁড় হয়েছে নেড়া পাইন।

হাঁত ঘুরিয়ে আঁকছি আম
নাহয় খেঁজুর নাহয় জাম
নাহয় কাঁঠাল নাহয় লিচু
হচ্ছে তো একটা কিছু।

৩৩. ছোট্ট পরী

ছোট্ট পরী ছোট্ট পরী
মিষ্টি দুষ্টু হাসি
ছোট্ট পরী ঘুমকুমারী
ছোট্ট পরী খুশী।

ছোট্ট পরী ছোট্ট পরী
আদর মাখা মুখ
ছোট্ট পরী প্রজাপতি
ছোট্ট পরী সুখ।

ছোট্ট পরী ছোট্ট পরী
অবাক চোখ দৃষ্টি
ছোট্ট পরী মেঘবতী
ছোট্ট পরী বৃষ্টি।

৩৪. এক যে ছিল মামদো ভূত

এক যে ছিল মামদো ভূত
বাড়ি শ্যাওড়া গাছ
হকচকিয়ে ভয় দেখাতো
খেতো আস্ত মাছ।

রাত হলেই সে ঘোমটা মাথায়
ঘুরতো হেথা হোথা
হাত উচিয়ে ছুঁয়ে দিতো
তাল গাছের মাথা।

এই ভয়েতে খুকুমনি
ভয়েই থাকতো বেশ
মামনিটা ভুত তাড়িতে
ছিড়ে নিবে কেশ।

এই না শুনে খুকুমনি
খলখলিয়ে হাসে
ঘুমপুরীতে দোল খায় সে
এই না আষাঢ় মাসে।

খুকুমনি বড় হয়
জানে সব কথা
ভুত মানে শুধুই শূন্য
ভুত মানে যাতা।

৩৫. আজব বিষয়

জীবনটাতো আজব বিষয়
খুকুর হাতে আঁকা
আজ আছে সবকিছু
কাল আবার ফাঁকা।

অল্পতেই গিন্নি হাসে
অল্পতেই কাঁন্না
ঢের হয়েছে কাঁদা তোমার
এখন চাপাও রান্না।

খুকী কাঁদে পা দাপিয়ে
ভেঙ্গে বাদর লাঠি
এনে দিবো পুঁথির মালা
কাঁন্না করো মাটি।

৩৬. পাখি কথা

শালিক পাখি তোমার নাকি
গুনের নাই শেষ
ঠোটে তুমি রঙ মাখো
লেজে লাগাও কেশ।
বেশ বেশ বেশ!

এই না শুনে বুলবুলিটা
লেজ নাচিয়ে হাসে
টুনটুনিটা লেজ বাঁকিয়ে
লজ্জায় কাশে।

দোয়েল পাখি ফুরুত ফুরুত
যায় না পাওয়া দেখা
শ্যামা ছুটছে গাছে গাছে
স্বভাবটা তার বাঁকা।

টিয়ে মাথায় টোপর দিয়ে
ময়না ভাবে কি
ফিঙের লেজে খাঁজ কেন
কাটে ভেংচি।

কোকিল ডাকে কুহুকুহু
চাতক ফটিক জল
ঘুঘুর ডাকে দুপুর নামে
বাঁদুর খায় ফল।

চড়ুই বাবুই দলাদলি
হচ্ছে কোলাহল
কাক চিলেতে সালিশ করে
মেটায় গন্ডগোল।

৩৭. অবুঝ পরী

মেঘের বাড়ি মেঘের ঘর
গল্প করি শোন
মেঘের দেশে থাকতো অনেক
দৈত্য পরী দানো।

দৈত্যের ভীড়ে পরীরা সব
করতো হাঁসফাঁস
ডানে বায়ে যেতে গেলে
সারে সব্বনাশ।

পরীরা সব গোলটেবিলে
করছে বসে আলাপ
দানোর ভীড়ে কি হবে
তাদের কার্যকলাপ।

মিটিং হলো সিটিং হলো
একটা পরী অবুঝ
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে
পৃথ্বী হবে সবুজ।

৩৮. মিটু মন্টি ঘন্টি

মিটু মন্টি স্কুলে যায়
বাই সাইকেলে চড়ে
স্কুলেতে দেরী হবে
সাইকেল চালায় জোড়ে।

পথের মোড়ে লজেন্স কিনে
দুজন মিলে খায়
একটা করে লজেন্স তারা
ঘন্টির জন্য ন্যায়।

তাদের বন্ধু ঘন্টি
বেশ আদুরে মেয়ে
লজেন্স পেয়ে সে
খায় আনন্দে গেয়ে।

মিটু মন্টি ঘন্টি মিলে
পড়াশুনায় বেশ
বড় হয়ে মানুষ হবে
গড়বে নতুন দেশ।

৩৯. লেডিবার্ড ও খোকাবাবু

একটা ছিল লেডিবার্ড
চেহারাটা দারুণ
হাঁটছে সে আয়েশ করে
গায়ের রঙটা মেরুন।

খিদার চোটে খোকাবাবু
অনেক খানি কাত
সারাক্ষণ সে ঘ্যান ঘ্যান করে
খায় না তো ভাত।

ল্যাডিপোকা গড়গড়িয়ে
খোকার কাছে আসে
খোকাবাবু তাইনা দেখে
খলখলিয়ে হাসে।

খোকাবাবু ভাত খায়
খায় কাচা ছোলা
লেডিবার্ড আর খোকা মিলে
খেলছে সারাবেলা।

৪০. ছাগলছানা

ছাগলছানা দেখতে মানা
হাসিতে সে থৈথৈ
খুঁজেই মরে মা মনিটা
ঐ দুষ্টুটা কই।

ব্যাঙ ডাকে ঘ্যাঙর ঘ্যাঙ
কোকিল ডাকে কুকু
হারিয়ে গেছে ছাগলছানা
আয় না ফিরে তুতু।

পা দুখানা উচিয়ে সে
ডাকছে মা মনি
এই দেখনা আমি এখন
কত্ত কিছু চিনি।

৪১. সারাহমনি

আসবো আসবো করে তো
বৃষ্টি এলো না
এই না ভেবে সারাহমনি
জুড়েছে কান্না।

বৃষ্টি আসবে রিমঝিমিয়ে
মেঘের দুয়ার খুলে
সারাহমনি খেলবে নৌকা
পালখানি তার তুলে।

বৃষ্টি ঝড়ে গাছের পাতায়
ঝড়ে টুপটাপ
সারাহমনি খেলছে হেসে
সবাই চুপচাপ।

৪২. খোকা পথ ভোলা

রাজা খায় মাছ ভাজা
গজা খায় ছোলা
খোকা হলো ভোলাভালা
খুকু খায় দোলা।

সারস খায় পুঁটিমাছ
ব্যাঙ খায় মলা
খুকুর জামা ঢিলাঢালা
খোকা পথ ভোলা।

৪৩. উৎসব

খুকুমনি গান গায়
আগডুম বাগডুম
বিড়ালছানা আসে ছুটে
টাকডুম টাকডুম।

খুকুমনি বিড়ালছানা
নাচে ধিমধিম
খরগোশ ছানা হেসে বলে
হাট্টিমাটিম টিম।

খরগোশছানা বিড়ালছানা
তাইরে নাইরে না
ঐ দেখা যায় তাল গাছ
ঐ আমাদের গাঁ।

কাঠবিড়ালী আসে ছুটে
ধিন ধিনা ধিন ধান
মৌমাছিরা নেচে নেচে
ভন ভনা ভন ভন।

সবাই মিলে উৎসব করে
সবাই নাচে গায়
টিয়ে মাথায় টোপর দিয়ে
বউ আনতে যায়।

৪৪. মেঘের বাড়ি বহুদূর

মেঘের বাড়ি বহুদূর
চলতে হবে রাত্রি ভোর
গেলে চলেন তাড়াতাড়ি
ছাড়বে গাড়ী যাত্রাবাড়ী।

যাত্রাবাড়ীর হাওয়াই মিঠাই
খেতে গিয়ে বসবেন না ভাই
তাড়া আছে যেতে হবে
ভাল লাগেনা এইনা ভবে।

কি হচ্ছে বুঝিনা ছাই
গাড়ির তো কোন গতি নাই
তবে কি পারবোনা যেতে
পারবো না মেঘের সাথে খেতে।

৪৫. হাসি

খুকু হাসে খোকা হাসে
হাসে শাপলা ফুল
খলসে মাছ গড়িয়ে হাসে
হাসে খুকুর চুল।

দাদা হাসে দাদী হাসে
হাসে নদীর কূল
বোয়াল মাছ গড়িয়ে লাজে
হাসতে করে ভুল।

টেংরা হাসে ইলিশ হাসে
হাসে খুকুর মা
খরগোশ ছানা হেসে বলে
হাসতে মানা।

বাঘ হাসে ভালুক হাসে
হাসে সিংহ মামা
ল্যাজ উচিয়ে গাঁধা বলে
আর হাসবো না।

উৎসর্গঃ আমার গত পোষ্ট ছিল মেঘের বাড়ী । একটি ছড়াপোষ্ট। মেঘের বাড়ী পোষ্টে মন্তব্যকারী প্রিয় ব্লগারদের মন্তব্যের রেশ ধরে লেখা এই পোষ্টের ছড়াগুলো। যারা উক্ত পোষ্টে মন্তব্য দিয়ে ছড়া লিখতে সহায়তা করেছেন তাদের সবার উদ্দেশ্যে এই পোষ্ট উৎসর্গ করা হলো। জানিনা আপনাদের কেমন লাগবে । তারপরও ছড়াগুলো এক সাথে করার লোভ সম্বরণ করতে পারলাম না। সাথে ছড়ার নামটা জুড়ে দিলাম।

ছবিঃ নিজস্ব এলবাম।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই আগস্ট, ২০১১ রাত ৯:৫৬
১০৩টি মন্তব্য ১০৩টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×