somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সুনন্দা

০৬ ই জুন, ২০১৩ রাত ১০:১৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



ব্লগে চার বছর পূর্তি হলো। কিন্তু বরাবরের মত নিরামিষ পোস্ট নিয়ে হাজির হলাম। ইচ্ছে ছিল চার বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে একটা আশার গল্প লিখে পোস্ট দিবো। গত কিছুদিন এমন ব্যস্ততা গেল যে গল্পের গ ও লিখতে পারলাম না। আজকে তো আর এক মহা ব্যস্ততর দিন গেলো। সকাল থেকে দুই জেলায় ঘুরে কেবলমাত্র বর্তমান নিবাসে ফিরলাম।

বাস্তবদৃশ্যে ব্লগ খাওয়ায় পড়ায় না। কিন্তু ব্লগ আমার মনের খাবার জোগায়। আবার রুচি মাফিক পড়াশুনা করায়। নিয়মিত অনেক কিছু জানতে ও শিখতে পারছি এখান থেকে। শুরু থেকেই সামুতে আছি। অন্য ব্লগে নিক খুললেও তেমন সচল না। সামুর ঋণ কখনো শোধ করার মত নয়। সুখে দুখে সুদিনে দুর্দিনে সামুর পাশে ছিলাম থাকবো। ভাল থেকো সামু। ভাল থাকবেন সুপ্রিয় ব্লগাররা।


১। সুনন্দা

ভুলে গেছি সুনন্দা ভুলে গেছি শব্দ
শব্দের অন্তরায় শব্দ বাক্যের অন্তরায় বিন্যাস
তাই আমি সন্যাস হয়ে পথে নেমেছি
গত রাত্রির তুমুল বৃষ্টি ঠেলে
কবিতার খাতায় পাতায় পাতায় বৃষ্টি।

সুনন্দা!
খাতার কান্না থামানো গেল না
কলম থেকে কালি ঝরে অনবরত
কান্না রেশ বেশ মোটা দাগে উঠে আসে
কবিতার খাতা ফেলে পাপ মোচনে নেমেছি
মরণের ওপারে বুঝি সবুজ দ্বীপ
অপত্য গাছগাছালি দেবদারুর বন
অদূরে ফুলের বাগান
ঝাউশাখে পাখির গান।

আমি এক প্রকার মরেই আছি সুনন্দা
আমার নাও চলছে কয়েক শত দিন রাত্রির
জমাট কোটর ঠেলে কুয়াশার আড়ালে।

আমার ভাল থাকা গুলো সব তোমার দান
তাই সন্ন্যাস হয়ে পেছনে ফেলে এসেছি
তুলে নিও যত্ন করে শিউলী ভোরে
শিয়রে রেখে দিয়ো হরিদ্রা ঘুম
আমি চলছি দ্বীপ মূলে
কষ্টের বোঝা কাঁধে তুলে।

২। নির্মল

বেঁচেবর্তে আছি। রোদের প্রতাপে আছি। ছায়ায় ছায়ায় আছি। চিন্তা করিস না নির্মল। তুই থাক হিসেবের পাতা ছিন্ন করে। অশরীরি আত্মা হয়ে। স্নিগ্ধ রাতের তারা হয়ে। আমি আছি। আমি আছি হাঁড়ি পাতিলে। আমি আছি ভাঙ্গা কুলোয়। আমি আছি দিন ভিখারীর চুলোয়। নির্মল তুই থাক সুখের আকাশে। যেখানে মেঘেরা ভাসে। কথা বলে খেয়ালে বেখেয়ালে। মেঘের গাঁয়ে হেলান দিয়ে চাঁদ হাসে। নির্মল তুই এক প্রকার সুখেই আছিস। দুখের ঘরে বন্দী ছিলি। সাত কুলে এক মা ছিল তোর আপন। পরাণের পরাণ। তোর মা তোকে একটা বাই সাইকেল কিনে দিয়েছিল। সাইকেল চালিয়ে তুই পথ থেকে পথে ঘুরতি। সবুজের বুকে হারাতি। তোর স্বপ্ন ছিল একদিন বড় হবি। এরোপ্লেন কিনবি। সবুজ ছাড়িয়ে নীল আকাশে উড়বি। আকাশে মেঘ কেটে কেটে তুলোর মত ওড়াবি।

নির্মল আমি ছিলাম তোর পথের দোসর। তোর পদরেখার পাশে আমার পদরেখা ছিল। আমরা একদিন সৈকতে বালিয়ারীর বুকে পা রেখে বলেছিলাম দেখ নির্মল আমরা বড় হয়ে যাচ্ছি। আমাদের পা বড় হয়ে যাচ্ছে। আমাদের পা যেদিন হাতির পদরেখা স্পর্শ করবে আমরা একদম বড় হয়ে যাবো। নির্মল আমি বড় হতে পারিনি। তুই হয়েছিস। তুই একদম আকাশের ত্রিসীমানা ছুঁয়ে আছিস। নীলের গায়ে হাত বুলিয়ে যখন মেঘেরা থাকে, আমি শ্বেত ভালুক দেখি। গলা উচানো মেঘটা দেখে জিরাফ'ই মনে হয়। ছুটন্ত রঙীন মেঘগুলো দেখে মনে হয় ভীতু চিত্রা হরিণগুলো ছুটে চলছে। পিছনে ধাবমান নেকড়ে মেঘগুলোকে তখন বকে দিতে ইচ্ছে করে। চিত্রা হরিণের দলটা পালানোর আগেই বুক ফুলিয়ে আর একটা স্তম্ভাকার মেঘ ছুটে আসে। আমার মনে হয় এইতো সৈকতের হাতিটা ফিরে আসলো। তুই পদরেখা ছোঁয়ার বদলে দুরন্ত মাহুতের ন্যায় হাতির পিঠে সওয়ার হয়েছিস। তোর বুকের ছাতি দেখে নেকড়ে মেঘগুলো পালিয়ে বাঁচে।

নির্মল তুই চলে গেছিস তোর মত করে। তোর আশৈশব দোসরটিকে সৈকতে ফেলে। তোর পদরেখা মুছবে বলে সাগর সরে গেছে ক্রমাগত দূরে। আমি পড়ে আছি ভাঙ্গা শঙ্খ বুকে ধরে।


৩। চুরি হয়ে যাচ্ছে

চুরি হয়ে যাচ্ছে বেড়ার আড়াল
কানের বিশ্বাস শ্রান্তির নি:শ্বাস
বালিশে মাথা রেখে কান পাতি ওপাড়ে
সিঁদেল চোর চুরি করবে
সাধের মুকুট টিপয়ের ধন
গৃহস্থ বুঝেনা চোরের মন
চোর চেনেনা মানিক রতন
দ্বৈরথে দুই কুশীলব
শুধু্ই তঞ্চকতার কুহুরব।


৪। বিষণ্নতার কন্দ

আজকের দিনটা যে উপোস গেলো
কেউ দেখলো না হাপুস নয়নে
বদনের হতচ্ছাড়া দশা
কেউ দেখলো না আনমনে।

ঘরের চালে বৃষ্টির জল
আমি খেয়ে আছি জলের শব্দ
শব্দের ছন্দ কপাট বন্ধ
আমি খেয়ে আছি বিষণ্নতার কন্দ।

শব্দের ভিতর ভীষণ একা
আকাশে নেই সূর্যের দেখা
আষাঢ়ের দিন কদম ডালে
পাতায় পাতায় ফুলে ফুলে
দেখার নয়ন রেখেছি দূরে
আসবে কি সে এই দুপুরে।


ছবি: নিজস্ব এ্যালবাম।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই জুন, ২০১৩ রাত ১১:২৯
৩৯টি মন্তব্য ৪০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দ্যা এডামেন্ট আনকম্প্রোমাইজিং লিডার : বেগম খালেদা জিয়া

লিখেছেন ডি এম শফিক তাসলিম, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৪

১৯৪৫ সালে জন্ম নেয়া এই ভদ্রমহিলা অন্য দশজন নারীর মতই সংসার নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন, বিয়ে করেছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের অন্যতম সুশাসক শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান কে! ১৯৭১সালে এ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×