আমি একজন নারী। কবে থেকে এই গ্রুপের সাথে এড আছি জানিনা তবে সবার পোস্টগুলো মনোযোগ সহকারে পড়ি। গ্রুপে অনেকেই স্বামীর পরকিয়া সমস্যা নিয়ে পোস্ট করেন।
কে কিভাবে নিবেন জানিনা তবে এ বিষয়ে আমার সামান্য ধারণা নিম্নরুপ। ২০১৬ সালে কর্মক্ষেত্রে আমার সাথে একজন মহিলার দেখা হয় যিনি তার স্বামীর পরকিয়ার নালিশ নিয়ে এসেছিলেন। কথা প্রসঙ্গে জানতে পারি ওনার, ওনার স্বামী এবং আমার বাড়ি একই জেলায় পাশাপাশি। যেহেতু আমরা মানুষ এবং প্রথম যার কথা শুনবো তার টাই রাইট মনে হবে তাই আমিও মহিলার ব্যথায় ব্যথিত হলাম।
ঐ মহিলা তার স্বামীর বিরুদ্ধে তার স্বামীর কলিগের পরকীয়ার অভিযোগ এনেছিলো। এই বিষয়টা এতটাই তিক্ত ছিলো যে তার স্বামী শেষমেশ তাকে ডিভোর্স দেয় এবং মহিলা নারী নির্যাতন মামলা করলে লোকটা জেলে গিয়ে সাসপেন্ড থাকে অনেক বছর। বর্তমানে ঐ লোকের সাসপেনশন উইথড্র হয়েছে এবং সে কিছুতেই তার সাবেক স্ত্রীকে গ্রহণ করেনি।
মহিলাকে আমি প্রথম খুব হেল্প করতাম মানবিক কারণে। একসময় বুঝতে পেরেছি এই সংসার জোড়া লাগবেনা তখন নিজে থেকে উদ্যোগ নিয়েছিলাম যাতে মামলা উইথড্র করার বিপরীতে মহিলা একটা ভালো এমাউন্ট পেয়ে বাচ্চা নিয়ে ভালো থাকে। আমার টার্গেট ছিলো ১৫-২০ লাখ, কিন্তু ঐ মহিলা এটাতে রাজী ছিলোনা। তার একটাই কথা সংসার করতে হবে নইলে চাকুরী খেয়ে দিবে। এই মামলা প্রায় ১০ বছর চলেছে।
এখন আসি মূল কথায়। আমরা যারা বাসায় বসে ভাবি যে, আমার হাজব্যান্ড অফিসে গিয়ে তার কলিগের সাথে প্রেম করে বা আরো যে কারো সাথে পরকীয়া করে। অথবা, আপনি আপনার স্বামীর পরকীয়ার প্রমান হাতেনাতে পেয়েছেন তাই অশান্তি শুরু করে দিছেন। আপনি সবই ভাবলেন, সবই করলেন কিন্তু একটা বারও কি এটা ভাবছেন যে আপনার কাছে একটা সংসার আছে, বাচ্চা আছে এবং দিনশেষে স্বামী কিন্তু ঠিকই বাসায় আসতেছে।
মানুষের লাইফে প্রেম ভালোবাসা ভালোলাগা এটা অস্বাভাবিক কিছুনা। সময়ের সাথে সব প্রেম হারিয়ে যাবে এবং এটা দীর্ঘস্থায়ী কিছুনা। বরং আপনার স্বামীর এরকম কিছু টের পেলে আপনি নিজেকে প্রিপেয়ার করুন এবং তাকে বোঝান যে আপনার মতো তাকে কেউ ভালোবাসেনা। আমি কোনোভাবেই পরকীয়া প্রমোট করতেছি না,,,আমি শুধু হাউকাউ না করার পরামর্শ দিচ্ছি।
এতে কি হয় জানেন? আপনার হাউকাউ সহ্য করতে না পেরে আপনার বর পুনরায় শান্তি ও স্বস্তি খুঁজতে কোথাও না কোথাও যাবে। ভুল মানুষের জীবনেই হয়, তাকে ভালোবেসে ঐ পথ থেকে ফেরান। সংসার করতে চাইলে কখনোই সংগীর ওপর চড়াও হইয়েন না। আজকাল কেউ কাউকে ছেড়ে দেয়ার পাত্র নয়,,ঐ সংসারটা কিন্তু মহিলার হাউকাউ করার কারণেই শেষ হইছে।
আরেকটা কথা, বর সময় দেয়না, আগের মতো তোয়াজ করেনা বলে যে সে সারাদিন পরকীয়া করে বেড়ায় সেই ভাবনা থেকেও বের হয়ে আসতে হবে। একজন কর্মজীবী মহিলা হিসেবে বুঝি, কর্মক্ষেত্রে একজন পুরুষ কতটা কষ্ট করে, এখানে কাজ করতে করতে আর প্রেমটা ঠিক আসেনা। আর যেসব পুরুষের চরিত্র খারাপ সেটা আলাদা বিষয়।
এক্ষেত্রেও আমি এটাই বলবো, হাজার যায়গায় শুয়ে থাকুক, দিনশেষে ঘরেই ফিরতে হবে
...।
মন্তব্যঃ
হাতে গণা কিছু ছেলের মৌলিক চরিত্র খারাপ।
এরপর এ পথে আসার কারণ কিছুটা সে নিজে, কিছুটা তার পরিবার।
আপনি মৌলিক চরিত্র খারাপদের নিয়ে বলছি না, বাকিদেরটা বলছিঃ
মূলত পুরুষের মতন স্বচ্ছ ও স্বল্পতে তুষ্ট প্রাণী খুব কমই আছে, দিনশেষে সে চায় একটু প্রশান্তি।
এটা যখন বাসায় পায় না, যাদের সুযোগ থাকে তারা হাত বাড়ায়। যাদের সুযোগ থাকে না হয় তারা হয় প্রো ম্যাক্স পারভার্ট নয়ত চুপমেরে বাকিদের লীলাদেখে।
আবার, নিজে বাসার কূটকৌশল সামলাতে না পেরেও একই দশা হয়।
এখানকার ভাইয়ের অবস্থা জানি না। ধরে নিই তিনি মৌলিকভাবে খারাপ না, যেহেতু আপুও চাকরি করতেন, ফলে বাসায় তিনি সময় দিতেন না (পারতেন না বলব না, কারণ লেখিকা নিজেই বুঝেন ঘটনা কি)। ফলে এত এত সময়ের ক্ষুধার্ত কোথাও ঝুটা খাবার পেলে কি ফেলে দিবে?
অবশ্যই পরকীয়া মারাত্মক কবীরা গুনাহ। এখানে আমি স্রেফ মনস্তাত্ত্বিক দিকটা তুলে ধরলাম।