সামহোয়্যার ইন ব্লগের একজন অন্যতম জনপ্রিয় ব্লগার জনাব চাঁদ গাজী। গতকাল তিনি আমার একটি পোষ্টে একটি প্রশ্ন করেছিলেন। প্রশ্নটির উত্তর একটু দীর্ঘ হয়ে যাওয়া এটাকে একটি পোস্ট হিসেবে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম। আমি অন্য সবার মত যত্ন করে কোনো পোস্ট লিখতে পারিনা। আমি একজন কামলা শ্রেণীর মানুষ। বেশিরভাগ সময়ই পেটের ধান্দায় থাকতে হয়। সামান্য একটা সময় পেলে ব্লগে আসি। সবার পোস্ট পড়ি। নিজেও আবোল তাবোল কিছু লেখার চেষ্টা করি । কিন্তু সময় থাকে না বলে পড়তেও পারি না ............................................................................................................................................................................
স্যার আপনি হয়তো জানেন, কোন দেশের নাগরিক যখন অন্য একটি দেশে শিক্ষা গ্রহণ করতে যায় তখন সে আন্তর্জাতিক ছাত্র হিসেবে পড়তে যায়। ফলে তার পড়াশোনার খরচ হয় অনেক বেশি। এখানে যারা বাংলাদেশের ছাত্র ছাত্রীরা পড়াশোনা করে তাদের বাবা-মায়ের অনেক টাকা আছে। এই কারণে তারা মনাস, মানাথ, সান ওয়ে, টেইলর এই সব প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করে।
মালয়েশিয়াতে শিক্ষা ও একটা বাণিজ্য। এখানকার অনেক বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশে প্রতিনিধি নিয়োগ দিয়ে রেখেছে। অনেক অখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়ের ও এজেন্সি আছে বাংলাদেশে। শ্রমিক আমদানির মতো ছাত্র আমদানি ও এখানে একটা লাভজনক ব্যবসা। এই ব্যবসায় বাংলাদেশীদের সাথে সাথে অনেক মালয়েশিয়ান ও জড়িয়ে পড়েছে।
আমি বেশ কিছুদিন আগে দিন আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় দেখতে গিয়েছিলাম। ওখানে আমার পরিচিত একজনের এলাকার একটি মেয়ে পড়তে এসেছে। প্রথম বছর এসে ইংরেজি কোর্স করবে। তারপর ইংরেজি কোর্স শেষ হলে আসল কোর্স শুরু হবে।
বাংলাদেশীদের কাছে আরেকটি আকর্ষণীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ইউ পি এম বা ইউনিভার্সিটি পুত্রা মালয়েশিয়া। এখানে প্রচুর সংখ্যক বাংলাদেশী এইচডি করতে আসেন। এমনকি সরকারি খরচে সরকারি কর্মকর্তারা ও এখানে পিএইচডি করে থাকেন। আমি এমন একজনকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, যেহেতু সরকারি টাকায় আপনারা পিএইচডি করেন সেহেতু আপনি বাংলাদেশের কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি করতে পারতেন। তাতে বিশ্ববিদ্যালয়টি লাভবান হতে পারত। জবাবে তিনি বললেন বিদেশে একটা সময় কাটানোর সুযোগ কে হাতছাড়া করতে চায় এখানে সরকারি সব সুযোগ সুবিধা ভোগ করা যায় অথচ কাজ করতে হয় না। বাংলাদেশের চাকরির সব সুযোগ-সুবিধা ভোগ করেও ওখানে এইচ ডি ডিগ্রী সম্পন্ন করা সম্ভব। উনি আমাকে জানিয়েছেন , বর্তমানে প্রায় দেড় হাজার বাংলাদেশি এখানে পিএইচডি করছেন এদের মধ্যে বিরাট সংখ্যক কি সরকারি কর্মকর্তা।
ইউনিভার্সিটি পুত্রা মালয়েশিয়া ছাড়াও আরেকটি বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় হলো, ইউ টি এম বা ইউনিভার্সিটি টেকনোলজি মালয়েশিয়া। এটি বাংলাদেশের বুয়েট এর মত।
এছাড়া ইউনিভার্সিটি মালায়া এখানকার একটি অন্যতম বিশ্ববিদ্যালয়। আরেকটি অন্যতম বিশ্ববিদ্যালয় হল এ কে এম। এটা কি বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় বলা হয়।
বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়াতে ডাক্তারি পড়তে এসেছে এরকম কখনো শুনিনি। বরং কোটা প্রথার সুবিধা নিয়ে মালয়েশিয়া থেকে প্রতি বছর প্রায় 20-25 জন শিক্ষার্থী বাংলাদেশের সরকারি মেডিকেল কলেজগুলোতে পড়তে যায়।
আমার হার্ট এর চিকিৎসার সময় আমি যে হাসপাতালে ছিলাম সেটার কার নাম আই জে এন, এটা মালয়েশিয়ার জাতীয় হার্ট ইনস্টিটিউট। শুনেছি এখানে একজন বাংলাদেশী ডাক্তার আছেন। তবে তার সাথে আমার দেখা হয়নি। আমার জানা মতে সব মিলিয়ে 4 /5 জনের বেশি ডাক্তার এখানে আছে কিনা সন্দেহ। আমার নিজের ধারণা, টাকা পয়সা খরচ করে মালয়েশিয়াতে পড়তে না এসে বাংলাদেশের কোনো সরকারি বা ভালো বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করা উচিত।
এখানে কোন বাংলাদেশী ডাক্তার এর চাকরি পাওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে আমার মনে হয় না।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই মে, ২০১৯ রাত ১০:১৫