আমি যখন স্কুলে পড়তাম তখন আধূনিক নামে একটি ধূমপান বিরোধী সংস্থা ছিল। তারা একটি শ্লোগান দিতঃ বিড়ি খাবি খা/ মারা যাবি যা।
যারা প্রকাশ্যে পথে ঘাটে, চায়ের দোকানে ধূমপান করেন তাদের প্রতি অনুরোধ, আপনার নিজে ধূমপান করুন ভালো কথা। আপনার বাসায় গিয়ে খান। আপনার প্রাণ আপনার নিজের। আপনি মরতে চান আনন্দের সাথে মরে যান। কিন্তু অন্যদেরকে কেন মারেন। বাসায় ধূমপান করতে করতে মরে যান । কোন আপত্তি নেই।
বিশ্বের সব চেয়ে খারাপ অভ্যাসগুলোর মধ্যে ধূমপান অন্যতম। বাংলাদেশে ৩৫.৩% প্রাপ্তবয়স্ক (১৫ বছর বা ততোধিক) মানুষ (প্রায় ৩ কোটি ৭৮ লাখ) তামাক ব্যবহার করে (১৮% ধূমপান করে এবং ২০.৬% ধোঁয়াবিহিন তামাক ব্যবহার করে)।
বাংলাদেশে অপ্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যেও ধূমপানের হার মারাত্বকভাবে বেড়েছে। কেউ শখের বশে আবার কেউ বড়দের দেখে দেখে কৌতুহল বশতঃ ধূমপানে আসক্ত হয়ে পড়েছে।
এ ছাড়া বিভিন্ন পাবলিক প্লেস ও পাবলিক পরিবহনে প্রতিদিন প্রায় ৩ কোটি ৮৪ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হন। পাশাপাশি অপ্রাপ্তবয়স্কদের (১৩-১৫ বছর) ৫৯% পাবলিক প্লেসে পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা’র মতে, প্রতিবছর ১২ লাখ মানুষ সরাসরি ধূমপান না করে শুধুমাত্র ধূমপায়ীদের সংস্পর্শে থাকার কারণে প্রাণ হারাচ্ছেন। ভাবা যায়? আমাদের দেশে প্রতিদিন ধূমপান না করেও ধূমপানের ক্ষতির শিকার হচ্ছে।
বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী, পাবলিক প্লেসে ( যেখানে সাধারণ জনগণ চলাচল করেন বা একত্রিত হন) ধূমপান নিষিদ্ধ। এই আইন অনুযায়ী, কেউ প্রকাশ্য পাবলিক প্লেসে ধূমপান করলে তার ৫০ টাকা অর্থ দন্ডের বিধান রয়েছে। কিন্তু আজ পরযন্ত কাউকে প্রকাশ্যে ধূমপানের জন্য জরিমান করা হয়েছে এমনটি কখনোই শোনা যায়নি।
গবেষণায় দেখা গেছে, পাবলিক প্লেস ও পাবলিক পরিবহনে প্রতিদিন প্রায় ৩ কোটি ৮৪ লাখ মানুষ পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হন।নিজে ধূমপায়ী না হয়েও শুধুমাত্র অন্যের আসক্তির কারণে এই সাধারণ মানুষেরা অকাল মৃত্যুর ঝুঁকিতে পড়ছেন। তাই এই অকাল মৃত্যুর হাত থেকে জাতিকে রক্ষায় পাবলিক প্লেস ও গণপরিবহনকে শতভাগ ধূমপানমুক্ত করা প্রয়োজন। জনসাধারণকে সচেতন হতে হবে। একমাত্র আইনের যথাযথ প্রয়োগ এবং সচেতনতায় পাবলিক প্লেস এবং গণপরিবহনকে ধূমপানমুক্ত করা যেতে পারে।
আজকাল দেখা যায় স্কুলের শিশুকিশোররাও প্রকাশ্য ধূমপান করে। বিধান করা দরকার যে, শিশুকিশোরদের কাছে কোন ভাবেই সিগারেট বিক্রি করা যাবে না। দোকানদাররা কোন বিবেকে শিশুকিশোরদের কাছে বিড়ি সিগারেট বিক্রি করেন।
যে কোন বাজে নেশার শুরুটাই হয় বিড়ি সিগারেট দিয়ে। তাই জাতিকে ধূমপানের ক্ষতির হাত থেকে বাঁচাতে চাইলে প্রকাশ্যে ধূমপান প্রতিহত করতে হবে। বিড়ি খাবি খা/ মারা যাবি যা। তবে অন্যকে মারিস না। দেশটা সকলের। সবাই মিলে ভালো ভাবে বাঁচুন। ফুলের সুবাস নিন। বিড়িসিগারেটকে পায়ের তলায় পিষে ফেলুন। দেশ বাঁচবে। দেশের মানুষ বাঁচবে।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই অক্টোবর, ২০২৩ সকাল ১০:১০

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




