আমি খুব ভালো নৌকা বাইতে (চালাতে) পারি। আমি যখন টু থ্রি-তে পড়ি তখন থেকেই আমি ভালো নৌকা চালাই। নৌকা চালানোতে রয়েছে আমার দীর্ঘ দিনের অভিজ্ঞতা।
ঢাকা জেলার দোহর উপজেলার বটিয়া গ্রামের খালের পশ্চিম পাড়ে যেখানে আমাদের বাড়ি অবস্থিত সেটাকে আসলে একটা ছিট মহল হিসেবে ধরা চলতো সেই সময়। অর্থাৎ ওই জায়গা থেকে খাল পার হয়ে জয়পাড়া বাজার এবং বটিয়ার মূলগ্রামের সাথে সংযুক্ত হওয়ার কোন সুযোগ ছিল না ।
এজন্য আমাদের অনেক আগে থেকেই নৌকা ছিল। আর নিজেদের নৌকা থাকার সুবাদে নৌকা চালানোটা আমার শেখা হয়ে গেছে অনেক আগেই যেটা ছিল একটা দারুন অভিজ্ঞতা।
সেই সময় কত মানুষকে যে আমরা খালের এপার ওপার পার করে দিয়েছি বর্ষাকালে তার কোন লেখা জোকা নাই এবং এই কাজের জন্য আমাদেরকে কেউ কোন বকশিশও দিত না । অর্থাৎ মানুষ বিনা পয়সাই আমাদেরকে দিয়ে খাল পার হয়ে যেতে পারত।
আমি একটা হাতে বৈঠা নিয়ে একটানা ২/৩ ঘন্টা নৌকা বাইতে (চালাতে) পারতাম। নৌকা আমার খুব প্রিয় একটি বাহন।
স্কুল ছুটির পর বিকালে মাঝে মাঝে নৌকা নিয়ে বের হয়ে পড়তাম বিশেষ করে শুক্রবার দিন বিকেলবেলা নৌকা নিয়ে অনেক দূরে চলে যেতাম সর্বশেষ মনে আছে আমরা কয়েকজন বন্ধু-বান্ধব মিলে নৌকা নিয়ে অনেক দূরে সদন মার্কেট বলে একটা জায়গা ছিল সেখানে গিয়েছিলাম।
আজ নৌকাকে খুব মিস করছি। ১৯ বছর হয় নৌকা বাওয়ার সুযোগ পাই না। বাড়ি পাশ দিয়ে বয়ে গেছে ছোট্ট একটা সুতো নদী। এটাকে বলে সাহেব খালির খাল। এই খালে আমার নৌকা বাওয়ার প্রথম পাঠ।
এখন নারিশা পার হয়ে যাবে জয়পাড়ার দিকে যেতে থাকলে অনেকগুলো ব্রিজ পাওয়া যায় । অথচ এক সময় সাহেব খালির খাল পার হওয়ার জন্য কোথাও কোন ব্রিজ ছিল না বললেই চলে । এই খালের মত বড় ব্রিজ গুলোর মধ্যে জয়পাড়া বাজারে একটা ব্রিজ ছিল । আরেকটা ব্রিজ ছিল মাঝির কান্দা হতে যে ব্রিজের উপর দিয়ে নবাবগঞ্জ যাওয়া যেত সেটা।
আমি যখন প্রথম নৌকা চালানো শুরু করি সেই সময় সাহেব খালিরখাল দিয়ে অনেক পাল তোলা নৌকা যেত । অনেক নৌকা আবার মাঝিরা গুণ টেনে নিয়ে যেত। এই বড় বড় নৌকাগুলো বিভিন্ন ধরনের মালামালে পরিপূর্ণ থাকতো । এইসব মালামালের মধ্যে ছিল চাল এবং আম কাঁঠাল ও নানা ধরনের ভুষি মাল।
The great boat, I miss you so much!
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই মার্চ, ২০২৪ রাত ১:৫৫