somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একাধিক আসনে অর্থাৎ ব্যক্তি যে এলাকার বাসিন্দা নন সেই এলাকায় নির্বাচন করা কতটা নৈতিক

৩১ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রাচীন গ্রিসে যখন গণতন্ত্রের সূচনা হয় তখন এথেন্সের সবাই একত্রে বসে তাদের দেশের যাবতীয় আইন কানুন ইত্যাদি তৈরি করত বলে শুনেছি । অর্থাৎ সেই সময় প্রত্যক্ষ গণতন্ত্র চালু ছিল।

বর্তমানে দেশের জনসংখ্যা বিপুলভাবে বেড়ে যাওয়াতে প্রত্যক্ষ গণতন্ত্র আসলে কোন দেশেই চালু রাখা সম্ভব নয়। ফলে সময়ের দাবি ও প্রয়োজন মেটাতে পরোক্ষ গণতন্ত্র এসেছে ।
অর্থাৎ অর্থাৎ দেশের সব মানুষ একত্রে বসে এখন আর আইন কানুন তৈরি করতে পারে না।

বিকল্প হিসেবে তারা তাদের এলাকা থেকে এক জনকে নির্বাচিত করে সংসদে প্রতিনিধি পাঠায় । এই ভাবে সারা বাংলাদেশ থেকে ৩০০ জন প্রতিনিধি নির্বাচিত হয়ে আসেন বলে পরোক্ষভাবে সারা বাংলাদেশের সবাই সংসদে বসে আইন তৈরি করছেন এবং অন্যান্য কার্যসম্পাদন করছেন বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে।

এটাকেই আমি পরোক্ষ গণতন্ত্র বলেছি । বইয়ের ভাষাটা আমি আসলে জানি না।


গণতন্ত্রের এই রীতি অনুসারে, বাংলাদেশের ক্ষেত্রে পুরো বাংলাদেশকে ৩০০ টি সংসদীয় আসনে বিভক্ত করা হয়েছে।

প্রতিটি আসনের জনগণ তাদের মধ্য থেকে একজনকে প্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত করে বাংলাদেশের পার্লামেন্টে অর্থাৎ জাতীয় সংসদে পাঠাবেন ।

সেই ব্যক্তি জাতীয় সংসদে যাওয়া মানেই হচ্ছে সেই এলাকার ২ লক্ষ ৩ লক্ষ বা ৪ লক্ষ লোকের প্রতিকী ভাবে জাতীয় সংসদে গমন করা ও তাতে অংশগ্রহণ করা।

ধরে নিলাম, সংসদীয় আসন ১ এর ৪ লক্ষ জনগণ আছে । এই চার লক্ষ জনগণ তাদের মধ্যে যারা ভোটাধিকার প্রয়োগের যোগ্য বলে বিবেচিত তারা ভোট প্রদানের মাধ্যমে তাদের এলাকার একজন ব্যক্তিকে নির্বাচিত করে জাতীয় সংসদে পাঠাবেন ।

অর্থাৎ আমি বলতে চাইছি এই প্রতিনিধিটি তাদের এলাকার হবেন ।

অন্য কোন এলাকা থেকে এসে তাদের এলাকার প্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত হবেন না।

কেননা মূল যে বিষয়টা সেটা হচ্ছে এলাকার তারা সবাই যেহেতু পার্লামেন্টে যেতে পারছে না । তাদের এলাকার একজন প্রতিনিধি তারা পার্লামেন্টে পাঠাচ্ছেন ।

এখন আমরা কোন কোন ক্ষেত্রে লক্ষ্য করেছি, যে কোন রাজনৈতিক দল সংসদীয় আসন একের প্রতিনিধি হিসেবে এই এলাকার কোন লোককে মনোনীত না করে সংসদীয় আসন ২০০ এর কোন বাসিন্দাকে নিয়ে এসে এই এলাকায় নির্বাচনে দাঁড় করিয়ে দেয় এবং ধরে নেয়া যাক এই ব্যক্তিটি নির্বাচনে জয়লাভ করে পার্লামেন্টে গেল।

তাহলে নৈতিকভাবে এই লোকটি কি সংসদীয় আসন এক এর জনগণের প্রতিনিধিত্ব করতে পারে?

আমার মনে হয়, পারে না।

কেননা, সে সংসদীয় এক আসনের কোন স্থায়ী বাসিন্দা নয়। সে ওই এলাকার জনগণের সাথে কোনোভাবেই সম্পৃক্ত না।

তাকে আসলে অতিথি পাখি হিসেবে ভাড়া করে এনে এই আসনের প্রার্থী করা হয়েছে।

এরশাদের পতনের পর পঞ্চম সংসদ এবং পরবর্তী দুই একটি সংসদ নির্বাচনে দেখা গেছে কোন কোন নেতা বা ব্যক্তি একাধিক সংসদীয় আসনে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন এবং এটা সেই সময় বৈধ ছিল।‌

আমি বুঝতে পারি না এটা কিভাবে বৈধ হয় । এক জন ব্যক্তি একই সাথে পাঁচটি আসনে কিভাবে নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দিতা করতে পারেন?

তিনি তো একই সঙ্গে ওই পাঁচটি আসনের এলাকার বাসিন্দা নযন এবং সবকটি এলাকার তিনি ভোটার ও নন। নৈতিকভাবে তিনি পাঁচটি আসনের জনগণের প্রতিনিধি হিসেবে কিভাবে নির্বাচিত হতে পারেন?

অথচ পঞ্চম সংসদে কিংবা সপ্তম সংসদে এটা স্পষ্টভাবে দেখা গেছে।

পঞ্চম সংসদে বেগম খালেদা জিয়া একই সাথে পাঁচটি আসনে নির্বাচন করে পাঁচটি জয়লাভ করেছেন ।

একইভাবে জাতীয় পার্টির হোসেন মোহাম্মদ এরশাদ পাঁচটি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পাঁচটি আসনে জয়লাভ করেছেন ।

এখন যেহেতু একই সাথে পাঁচটি আসনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা সম্ভব নয় ও প্রতিনিধিত্ব করা সম্ভব নয়।

তাহলে আইন কোন বিবেচনায় তাদেরকে পাঁচটি আসনে নির্বাচন করার অনুমতি দেয় ? বিষয়টি লক্ষ্য করার মতো।
পঞ্চম সংসদে জাতীয় পার্টির নেতা ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ , মিজানুর রহমান চৌধুরী তাদের নিজ এলাকার সংসদীয় আসনে নির্বাচনে পরাজিত হন । পরে উপনির্বাচনে তাদেরকে এরশাদের চারটি আসনে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল ।

সেখান থেকে দুইটিতে তারা নির্বাচিত হয়ে আসেন। একই ভাবে বেগম খালেদা জিয়ার পাঁচটি আসনের ক্ষেত্রে ছেড়ে দিয়েছিলেন । সেখানেও বিভিন্ন ব্যক্তির পরবর্তীতে নির্বাচিত হয়েছেন।

২০১৮ সালের নির্বাচনে দেখা গেছে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী মির্জা ফখরুল ইসলাম এলাকায় নির্বাচন না করে বগুড়ার একটি আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছেন। কিন্তু তিনি বগুড়ার স্থায়ী বাসিন্দা
নন। এবং এই এলাকার তিনি সঙ্গত ভাবে তিনি এই এলাকার জনগণের প্রতিনিধিত্ব করার নৈতিক অধিকার রাখেন না।


বিষয়টি ভেবে দেখার মত।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:২৩
৮টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জীবন চলবেই ... কারো জন্য থেমে থাকবে না

লিখেছেন অপু তানভীর, ০২ রা মে, ২০২৪ সকাল ১০:০৪



নাইমদের বাসার ঠিক সামনেই ছিল দোকানটা । দোকানের মাথার উপরে একটা সাইনবোর্ডে লেখা থাকতও ওয়ান টু নাইন্টি নাইন সপ ! তবে মূলত সেটা ছিল একটা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। প্রায়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ ঠেকাতে পুলিশি নির্মমতা

লিখেছেন এমজেডএফ, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১১



সমগ্র যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসগুলোতে বিক্ষোভের ঝড় বইছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ কর্মসূচী অব্যাহত রয়েছে। একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিক্ষোভ দমনের প্রচেষ্টা চালালেও তেমন সফল... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ ০১

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:০৭

সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।

হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩



সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×