somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ইন্টারনেট ব্যবহারে আরও কঠোর আইন হচ্ছে

১৫ ই জুন, ২০১৫ রাত ৯:০১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

২০০৬ সালের তথ্য ও যোগাযোগ-প্রযুক্তি আইন বহাল
রাখার পাশাপাশি সরকার ইন্টারনেটভিত্তিক সন্ত্রাস
দমনে আরও কঠোর বিধানসংবলিত নতুন আইন করার
উদ্যোগ নিয়েছে। এতে ‘সাইবার-সন্ত্রাস’-এর জন্য
সর্বোচ্চ ২০ বছরের সাজা এবং পরোয়ানা ছাড়াই
সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে আটকের বিধান থাকছে।
প্রস্তাবিত আইনের খসড়ায় বলা হয়েছে, পুলিশ
সন্দেহজনক কম্পিউটার জব্দ করতে প্রয়োজনে ‘দরজা-
জানালা ভাঙা’সহ যেকোনো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা
নিতে পারবে। এ ছাড়া দেশের সীমানার বাইরে এ-
সংক্রান্ত কোনো অপরাধ হলে তা দেশের আদালতে
বিচারের এখতিয়ারও এই খসড়ায় রাখা হয়েছে।
অনলাইনের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক কোনো অপরাধ
সংঘটিত হলে তাকেই সাইবার-সন্ত্রাস হিসেবে গণ্য
করা হবে বলে খসড়ায় বলা হয়েছে। আইনে আরও প্রস্তাব
করা হয়েছে, দেশের ভেতরে ইন্টারনেট-সেবার
পরিকাঠামোর প্রতি হুমকি বিবেচনায় দেশের
যেকোনো স্থানে নিয়ন্ত্রক তদন্ত চালাবেন। এ ধরনের
অপরাধে দোষী ব্যক্তির অনধিক ১৪ বছর কারাদণ্ড বা
অনধিক এক কোটি টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড হবে।
তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি আইন নিয়ে বিতর্কের মুখে
সম্প্রতি সাইবার নিরাপত্তা আইন ২০১৫-এর খসড়া চূড়ান্ত
করা হয়েছে। এতে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব,
অখণ্ডতা, নিরাপত্তা ও অন্যান্য বিদেশি রাষ্ট্রের
সঙ্গে বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক, জনশৃঙ্খলা ও
নিরাপত্তা রক্ষার স্বার্থে একটি জাতীয় ইন্টারনেট
(সাইবার) নিরাপত্তা সংস্থা গঠনেরও প্রস্তাব করা
হয়েছে। তবে এই সংস্থা কাদের দিয়ে কীভাবে গঠিত
হবে, সে বিষয়ে খসড়ায় কোনো বিধান রাখা হয়নি।
আভাস পাওয়া গেছে, ভবিষ্যতে জারি করা প্রজ্ঞাপনে
নির্দিষ্ট করা শর্তে এই সংস্থা গঠিত হবে।
বাক্স্বাধীনতা ও ব্যক্তির গোপনীয়তার অধিকার
রক্ষায় কাজ করে এমন একটি বৈশ্বিক সংগঠন আর্টিকেল
নাইনটিনের বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক
পরিচালক তাহমিনা রহমান প্রথম আলোর প্রশ্নের
জবাবে বলেন, খসড়াটি বর্তমানে যেভাবে রয়েছে, তা
নতুন উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। অনলাইনে বাক্স্বাধীনতা
আরও সংকুচিত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে উল্লেখ
করে তিনি খসড়াটির নানা দিক পর্যালোচনা করে
সুপারিশ তুলে ধরার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানান।
তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় রাজশাহী
বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক জুলফিকার
আহম্মদকে এই খসড়া তৈরির দায়িত্ব দিয়েছিল। তিনি
প্রথম আলোকে বলেন, নতুন আইনটি হবে ২০০৬ সালের
সম্পূরক।
জনমত যাচাই ও মতামত সংগ্রহের জন্য সাইবার
নিরাপত্তা আইনের খসড়া সম্প্রতি তথ্য ও
যোগাযোগপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ
করা হয়।
২০০৬ সালের আইনের আওতায় থাকা নিয়ন্ত্রক সংস্থা,
কন্ট্রোলার অব সার্টিফায়িং অথরিটিজ (সিসিএ) এই
নতুন আইনের অধীনেও কাজ করবেন। জাতীয় নিরাপত্তা
উপদেষ্টার উপদেশক্রমে সাইবার নিয়ন্ত্রক ‘জাতীয়
নিরাপত্তা অথবা নাগরিকের অর্থনৈতিক ও সামাজিক
কল্যাণে নিয়োজিত কিছু কম্পিউটার সিস্টেম বা
নেটওয়ার্ককে সংকটাপন্ন তথ্য পরিকাঠামো’ হিসেবে
ঘোষণা করবেন। তবে বাংলাদেশে বর্তমানে জাতীয়
নিরাপত্তা উপদেষ্টার কোনো পদ নেই। বর্তমানে
সিসিএ পদে কর্মরত আছেন ফখরুদ্দিন আহমেদ চৌধুরী।
তাঁর দপ্তরটি তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের
অধীন।
খসড়ায় কোনো ব্যক্তি অনুমতি ছাড়া বা জ্ঞাতসারে
অন্য কারও কম্পিউটার নেটওয়ার্কের ক্ষতি করলে, তথ্য
মুছে ফেললে বা বিকৃত করলে কিংবা কোনো ব্যক্তি
প্রতারণার অভিপ্রায়ে প্রেরকের বরাবর ইলেকট্রনিক
মেসেজে ‘বস্তুগতভাবে ভুল’ তথ্য পাঠালে এবং তাতে
কোনো ব্যক্তির লোকসান বা ক্ষতি হলে অনধিক পাঁচ
বছরের কারাদণ্ডের প্রস্তাব করা হয়েছে।
খসড়ায় সাইবার আইনে উল্লিখিত অপরাধ ছাড়াও
আলাদাভাবে কয়েকটি অপরাধকে সাইবার-সন্ত্রাস বলে
চিহ্নিত করা হয়েছে। এই অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তির
সর্বোচ্চ ২০ বছর ও সর্বনিম্ন চার বছরের সশ্রম
কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। ইন্টারনেটের
মাধ্যমে বিদেশি বন্ধুরাষ্ট্রের নিরাপত্তায় বিঘ্ন
ঘটালে তা সাইবার-সন্ত্রাস বলে গণ্য হবে।
খসড়ার ১৩ ধারার ‘খ’ উপদফায় বলা হয়েছে, অন্য কোনো
রাষ্ট্রের নিরাপত্তা বিঘ্নিত বা তার সম্পদের ক্ষতি বা
বিনষ্টের চেষ্টা সাইবার-সন্ত্রাস বলে গণ্য হবে। এর
অনুসন্ধান, প্রসিকিউশন ও বিচারিক কার্যক্রম
পরিচালনার জন্য আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক
সহযোগিতার প্রশ্নে অপরাধ-সম্পর্কিত বিষয়ে
পারস্পরিক সহায়তা আইন, ২০১২-এর সব বিধান প্রযোজ্য
হবে। খসড়ায় বলা হয়েছে, কোনো আন্তর্জাতিক
সংস্থাকে কোনো কাজ করতে বা করা থেকে বিরত
রাখার চেষ্টা করাও হবে সাইবার-সন্ত্রাস। এতে
‘ব্যক্তি ও সত্তার’ পাশাপাশি ‘বিদেশি নাগরিকের’
শাস্তির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। বলা হয়েছে,
বাংলাদেশের অখণ্ডতা, সংহতি, জননিরাপত্তা বা
সার্বভৌমত্ব বিপন্ন করার জন্য জনসাধারণ বা
জনসাধারণের কোনো অংশের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টির
মাধ্যমে সরকার বা কোনো সত্তা বা কোনো ব্যক্তিকে
কোনো কার্য করতে বা করা থেকে বিরত রাখতে বাধ্য
করার উদ্দেশ্যে কোনো ব্যক্তির কম্পিউটার ব্যবহারকে
ব্যাহত করে বা করার চেষ্টা করে অথবা অন্য কোনো
ব্যক্তির কম্পিউটার নেটওয়ার্কে অবৈধভাবে প্রবেশের
চেষ্টা করে অথবা এ রকম কাজে কোনো ব্যক্তিকে
ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হতে বা প্ররোচিত করে অথবা কোনো
কম্পিউটার নেটওয়ার্কে ভাইরাস প্রবেশ করানোর
চেষ্টা করে, তাহলে তা সাইবার-সন্ত্রাস বলে গণ্য হবে।
প্রস্তাবিত বিধানে বলা হয়েছে, মামলার অভিযোগ
গঠনের তারিখ থেকে ছয় মাসের মধ্যে বিচারকাজ শেষ
করতে হবে। এই সময়ে না পারলে কারণ লিপিবদ্ধ করে
আরও তিন মাস সময় নিতে পারবেন আদালত। আর নয়
মাসের মধ্যে বিচার শেষ করতে না পারলে হাইকোর্ট
বিভাগ ও নিয়ন্ত্রককে জানিয়ে মামলা চলমান রাখতে
পারবেন।
সাইবার নিরাপত্তা আইনের অধীন অপরাধসমূহ
আমলযোগ্য ও অজামিনযোগ্য করার প্রস্তাব করা
হয়েছে। বিচার হবে ২০০৬ সালের আইনের অধীনে গঠিত
সাইবার ট্রাইব্যুনালে। জামিনের বিষয়ে শর্ত দেওয়া
হয়েছে, রাষ্ট্রপক্ষকে শুনানির সুযোগ দিতে হবে,
বিচারকের মনে যুক্তিসংগত বিশ্বাস থাকতে হবে যে
অভিযুক্ত ব্যক্তি বিচারে দোষী সাব্যস্ত না-ও হতে
পারেন। পুলিশ যখন সন্দেহভাজন কাউকে গ্রেপ্তার বা
তল্লাশি করতে যাবে, তখন তাঁকে কোনো যুক্তিসংগত
কারণ নথিভুক্ত করতে হবে না, তার মনে বিশ্বাসের উদয়
ঘটলেই চলবে। খসড়ার ২০ ধারায় বলা হয়েছে, নিয়ন্ত্রক
বা তাঁর দ্বারা ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বা পুলিশ
কর্মকর্তার যদি এরূপ বিশ্বাস করার কারণ থাকে যে এ
আইনের অধীন কোনো অপরাধ কোনো স্থানে সংঘটিত
হয়েছে বা হচ্ছে বা হওয়ার আশঙ্কা আছে, তাহলে অনুরূপ
বিশ্বাসের কারণ লিপিবদ্ধ করে তিনি যেকোনো সময়
অভিযান চালাবেন।
কোনো সত্তা, অর্থাৎ প্রতিষ্ঠান যদি সাইবার-সন্ত্রাসে
দোষী সাব্যস্ত হয়, তাহলে তার সাজা কে ভোগ করবে,
সে বিষয়ে খসড়ায় বলা হয়েছে, ‘সত্তার প্রধান, তিনি
চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, প্রধান নির্বাহী
বা অন্য কোনো নামে অভিহিত হোক না কেন,
কোম্পানির ক্ষেত্রে প্রত্যেক মালিক, প্রধান নির্বাহী,
পরিচালক, ম্যানেজার, সচিব বা অন্য কোনো
প্রতিনিধি সাজা খাটবেন।
গোপনীয়তা লঙ্ঘন : খসড়ায় আরও বলা হয়েছে, অনুমতি
ছাড়া ছবি তোলা ও প্রকাশ বা প্রেরণ কারও ‘ব্যক্তিগত
গোপনীয়তা লঙ্ঘন পরিস্থিতির’ ক্ষেত্রে অপরাধ হবে।
হ্যাকিংসহ এ রকম লঙ্ঘনের দায়ে অনধিক ১০ বছর
কারাদণ্ডের প্রস্তাব করা হয়েছে। খসড়ায় ‘ব্যক্তিগত
গোপনীয়তা লঙ্ঘনের’ ব্যাখ্যায় বলা আছে, (অ) কোনো
ব্যক্তি গোপনীয়ভাবে অনাবৃত হতে পারেন, এমতাবস্থায়
তাঁর ব্যক্তিগত এলাকায় তাঁর নজর এড়িয়ে চিত্রবন্দী
করা হয়েছিল; অথবা (আ) সরকারি বা ব্যক্তিগত এলাকা-
নির্বিশেষে কোনো ব্যক্তি তাঁর ব্যক্তিগত এলাকার
এমন কোনো অংশে ছিলেন, যা জনসাধারণের কাছে
দৃশ্যমান হবে না।

সূত্রঃ প্রথমআলো অনলাইন।
http://m.prothom-alo.com/bangladesh/article/553975/
ইন্টারনেট-ব্যবহারে-আরও-কঠোর-আইন-হচ্ছে
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই জুন, ২০১৫ রাত ৯:০২
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারতে পচা রুটি ভাত ও কাঠের গুঁড়ায় তৈরি হচ্ছে মসলা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৩০

আমরা প্রচুর পরিমানে ভারতীয় রান্নার মশলা কিনি এবং নিত্য রান্নায় যোগ করে খাই । কিন্তু আমাদের জানা নেই কি অখাদ্য কুখাদ্য খাচ্ছি দিন কে দিন । এর কিছু বিবরন নিচে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মন যদি চায়, তবে হাতটি ধরো

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৪৩

মন যদি চায়, তবে হাতটি ধরো
অজানার পথে আজ হারিয়ে যাব
কতদিন চলে গেছে তুমি আসো নি
হয়ত-বা ভুলে ছিলে, ভালোবাসো নি
কীভাবে এমন করে থাকতে পারো
বলো আমাকে
আমাকে বলো

চলো আজ ফিরে যাই কিশোর বেলায়
আড়িয়াল... ...বাকিটুকু পড়ুন

One lost eye will open thousands of Muslims' blind eyes

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭



শিরোনাম'টি একজনের কমেন্ট থেকে ধার করা। Mar Mari Emmanuel যিনি অস্ট্রেলীয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের একটি চার্চের একজন যাজক; খুবই নিরীহ এবং গোবেচারা টাইপের বয়স্ক এই লোকটি যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাকরি বয়সসীমা ৩৫ বৃদ্ধি কেনো নয়?

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪২



চাকরির বয়সসীমা বৃদ্ধি এটা ছাত্র ছাত্রীদের/ চাকরি প্রার্থীদের অধিকার তবুও দেওয়া হচ্ছে না। সরকার ভোটের সময় ঠিকই এই ছাত্র ছাত্রীদের থেকে ভোটের অধিকার নিয়ে সরকার গঠন করে। ছাত্র ছাত্রীদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঁচতে হয় নিজের কাছে!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৮

চলুন নৈতিকতা বিষয়ক দুইটি সমস্যা তুলে ধরি। দুটিই গল্প। প্রথম গল্পটি দি প্যারবল অব দ্যা সাধু।  লিখেছেন বোয়েন ম্যাককয়। এটি প্রথম প্রকাশিত হয় হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ জার্নালের ১৯৮৩ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর সংখ্যায়। গল্পটা সংক্ষেপে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×