somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মীরাক্কেলের জামিলের জোকস্‌ এমন খারাপ কিছু না!! X( X(

১৮ ই মে, ২০১৩ রাত ১০:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমি তখন ক্লাস সিক্স এ পড়ি। বিশ্বকাপ বাছাইয়ের কোয়ার্টার ফাইনাল। তখন দুপুর বেলা, একটু মন খারাপ। রেডিওতে ক্রিকেট ধারা ভাষ্যকার ঘোষণা দিলেন বৃষ্টির কারনে ওভার কমিয়ে বাংলাদেশকে এক অসম্ভব টার্গেট দেয়া হয়েছে, যেটা কিনা পূর্ন ওভারের খেলায় ৩০০এর বেশী রান হতো। মন খারাপ করে রেডিও বন্ধ করে দিলাম। চোখের কোণে পানি এসে গেল। আহা, বাংলাদেশ বিশ্বকাপে যেতে পারবে না??

কিন্তু কে জানত যে একজন হৃষ্টপুষ্ট ব্যাক্তি সেই অসম্ভব রান তাড়া করার সাহস দেখাবেন? বাইরে ছিলাম, বিকালে মুখ গোমড়া করে খালার বাসায় গিয়ে দেখলাম, হুলুস্থুল অবস্থা!! আকরাম খান নাকি সেই অসম্ভব রান তাড়া করে বাংলাদেশকে জয়ের কাছে নিয়ে যাচ্ছেন। এক এক রান নেয়া হচ্ছে তো আশে পাশের সব এলাকা থেকে চিৎকার শুনতে পাচ্ছি!! শেষ রান নেবার পর সবাই রাস্তায় নেমে গেল। আমার বুকটা উত্তেজনায় গুড় গুড় করতে লাগল। বাংলাদেশ বিশ্বকাপে তাহলে খেলতে পারবে!!

সেমি-ফাইনালে আয়ারল্যন্ডকে হারিয়ে দেয়ার মূহুর্তে সারা বাংলাদেশ এক সাথে উল্লাসে ফেটে পড়েছিল। সেদিন অনেকেই কেঁদেছিলেন মনের আনন্দে। সেই থেকেই আমাদের ক্রিকেট পাগলামি শুরু। আমরা আম পাবলিকরা নিজের দেশকে কত ভালবাসি সেটা ক্রিকেট পাগলামি না দেখলে বোঝা যাবে না।

এখন আসি, জি বাংলার মিরাক্কেল নামক একটা থার্ড ক্লাস কৌতুক অনুষ্ঠানের কথায়। যেখানে কিনা জামিল নামক এক কুলাঙ্গার কলকাতার দর্শকদের সামনে বাংলাদেশের ক্রিকেট দল ও এর সদস্যদেরকে অত্যন্ত কুৎসিত ভাবে অপমান করে কৌতুক করেছে, আর সেটা শুনে কলকাতার দাদারা ও এক চটি ফিল্ম নায়িকা ফ্যা ফ্যা করে হেসেছে।

বিশ্বাস করেন ভাই, এইসব জোক্স গুলা বুলেটের মত বুকে লেগেছে। একজন বাংলাদেশী কিনা অন্য দেশে গিয়ে আমাদের গর্ব ক্রিকেট টিমকে নিয়ে এভাবে কৌতুক পারে!! সে নিজেই প্রকারান্তরে স্বীকার করেছে, সে টাকার প্রয়োজনে নিজের ওয়াইফকেও বিক্রি করতে দ্বিধা করবে না!

এখন আসি কিছু বুদ্ধিজীবি পাবলিক কিভাবে সেই জোকস্‌ গুলোকে একদম আদা জল খেয়ে ডিফেন্ড করছে!!

আসুন তাদের যুক্তি গুলো দেখি।

১। “জামিল ক্ষমা চেয়েছে”, “সে স্বীকার করেছে যে ভুল করেছে”...... জামিল কোন দুধের বাচ্চা না। সে একটা বুইড়া দামড়া। এখানে কোন ব্যাক্তিগত ব্যাপার না, বাংলাদেশ ক্রিকেট টিম তথা বাংলাদেশের অংশ নিয়ে কৌতুক করেছে। সে মাথা খাটিয়ে, চিন্তা ভাবনা করে এইসব কুৎসিত জোকস্‌ গুলো বানিয়েছে। এখানে এটা কোন ভুল না, স্বজ্ঞানে এটা করেছে। তার ক্ষমা চাওয়ার খ্যাতাপুরি।

২। জোক্‌স ইজ জোক্‌স এটা নিয়ে সিরিয়াস হবার দরকার কি?...............জোকস্‌গুলা কিন্তু আমাদের বাংলাদেশ ক্রিকেট টিমকে নিয়ে করা হয়েছে, কোন চিপা গলির সলিমুদ্দি কলিমুদ্দির টিমকে নিয়ে করা হয়নি! আপনার বাবাকে মাকে নিয়ে যদি আপনার এলাকায় কুৎসিত জোক্‌স প্রচলিত হয়, তখন কি আপানারা “জোকস্‌ ইজ জোকস্‌” বলবেন??

৩। “ইন্ডিয়ানরা সচিন, সৌরভ, ভগবান সবাইকে নিয়ে জোক্‌স করে, আমাদের করলেই দোষ”............এদের কথা শুনলে মনে হয় ব্রেইন নামক জিনিষ্টা এরা বহু আগেই পায়ুপথ দিয়ে নির্গত হয়ে গিয়েছে!! আরে ওরা সচিনকে নিয়ে যা ইচ্ছা তাই করুক আমাদের কি? তাই বইলা অন্য দেশে গিয়ে নিজ দেশের অপমান এভাবে মেনে নেয়া যায়? নাকি ইন্ডিয়াকে তোরা নিজের দেশ মনে করস??

পরিশেষে মিরাক্কেল প্রেমীদেরকে বলব.........একটু চোখ খুলে দেখেন, ইন্ডিয়ান পাবলিকরা বাংলাদেশ ক্রিকেট টিমকে, বাংলাদেশকে কিভাবে অপমান করে। ক্রিক ইনফো, টাইমস্‌ অব ইন্ডিয়াতে বাংলাদেশ বা বাংলাদেশের খেলা বিষয়ে ইন্ডিয়ান পাঠকরা কি পরিমান অপমান সূচক মন্তব্য করে!!

জামিল কলকাতায় গিয়ে কিভাবে পারল তাদের আনন্দের খোড়াক হতে?? এখানে রাগের চেয়ে কষ্টটাই বেশি হয়েছে!! আরও বেশী কষ্ট লেগেছে এদেশিয় কিছু সুশীলদের সেই ব্যাপারে সমর্থন দিতে। বাংলাদেশ পাকিস্তানের খেলায় কিছু জারজ যেমন পাকিস্তানকে সমর্থন করে, এরা সেই একই গোত্রের!!
১৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদীর পরিবার সংক্রান্ত আপডেট

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯


মার্চ মাস থেকেই বিষয়টি নিয়ে ভাবছিলাম। ক'দিন আগেও খুলনায় যাওয়ার ইচ্ছের কথা জানিয়েও আমার বিগত লিখায় কিছু তথ্য চেয়েছিলাম। অনেক ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও মেহেদীর পরিবারকে দেখতে আমার খুলনা যাওয়া হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×