somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মুছে যাক গ্লানি ঘুচে যাক জরা.........অগ্নি স্নানে সূচি হোক ধরা!

১২ ই এপ্রিল, ২০১৭ সকাল ১১:৫৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আগামী ১৪ই এপ্রিল পহেলা বৈশাখ। বাংলা মাসের প্রথম দিন। এই পহেলা বৈশাখকে কেন্দ্র করে হবে হরেক রকম অনুষ্ঠান। রং-বেরং এর পোষাক পড়ে উৎসবে মেতে উঠবে কিছু মানুষ।


পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠানকে আমাদের প্র্যাকটিসিং মুসলিম ভাইয়েরা অনেক দিন থেকেই নাজায়েজ শিরকী-কুফরী অনুষ্ঠান বলে আসছে।এই নিয়ে অনলাইনে অনেক লেখা লেখি হচ্ছে। বিভিন্নজন বিভিন্নভাবে মতামত প্রকাশ করছে।


আমরা কি জানি? যে, এই দাবির পক্ষে আমাদের সকল ওলামা মাশায়েখদের ঐক্যমত আছে। তবুও অনেক না-বুঝ মুসলিম এটা মানতে চাননা। তাদেরকে সহজে বোঝানোর জন্য আমি এই লেখাটি লিখলাম। এই নিয়ে অনেক লেখালেখি আছে, তবে আমার আলোচনা নিম্ন লিখিত ৩ টি মূল পয়েন্টে ফোকাস করছি।

১ মঙ্গল শোভাযাত্রা;
২. ছায়ানটের বৈশাখীবরণ;
৩. মেলা (গান-বাজনা, অবাধ মেলামেশা, উল্কি আঁকা)

এখন একটু বিস্তারিত আলোকপাত করা যাক।

১ মঙ্গল শোভাযাত্রাঃ আচ্ছা, মঙ্গল শোভা যাত্রা কি উদ্যেশ্যে (নিয়্যতে) করা হয়?করা হয় এই উদ্যেশ্যে যে আমাদের দেশের মানুষের মঙ্গল (ভালো) কামনা করা এবং এই মঙ্গল কামনার মাধ্যম হিসেবে বিভিন্ন মূর্তি মাথায় করে, পেঁচা, বাঘ, উদ্ভট আকৃতির বিভিন্ন মুখোশ পড়ে, ঢোল ঢাক্কর বাজিয়ে র্যা লি করা হয়।
এখানে প্রথম কথা হচ্ছে এখানে যেই উদ্যেশ্যে করা হচ্ছে এখানেই কিন্তু শিরক হয়ে যাচ্ছে। কেননা এখানে মঙ্গল কামনা করা হচ্ছে “র্যা লির মাধ্যমে/মূর্তির মাধ্যমে”। আর কেউ যদি বলেন, “আমি তো আল্লাহর কাছে করছি”...এই কথাটি কিন্তু এখানে গ্রহনযোগ্য নয়, কেননা আল্লাহর কাছে চাইতে হলে মূর্তির মাধ্যমে কেন?

তাছাড়া, এই মঙ্গল শোভাযাত্রার সাথে সনাতন ধর্মালম্বীদের বিভিন্ন মঙ্গল যাত্রার সাদৃশ্য আছে। যেমন গণেশ পূজা উপলক্ষ্যে মঙ্গল যাত্রা, শ্রীকৃষ্ণ এর জন্মদিন উপলক্ষ্যে শোভাযাত্রা, বিভিন্ন রথযাত্রা ইত্যাদি। এইগুলোর সাথে মঙ্গল শোভাযাত্রার কিন্তু বেশ মিল পাওয়া যায়। এই মিলটি কিন্তু সনাতন ধর্মীয় অনুষ্ঠানের সাথে মিল। তাছাড়া, এবারের মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রতিপাদ্য হচ্ছে “আনন্দলোকে মঙ্গলালোকে, বিরাজ সত্য সুন্দর”। আপনারা যদি একটি অনুসন্ধান করেন তাহলে দেখবেন এই লাইনটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পূজার গানের অধ্যায়ে বিদ্যমান আছে। তাহলে আমরা এ থেকে কি বুঝলাম? এটা কি শিরকের অনুকরণ নয়?

২. ছায়ানটের বৈশাখীবরণঃ ছায়ানটের বৈশাখী বর্ষবরণ বাংলা নববর্ষের অন্যতম একটি প্রথা। এই প্রথার মধ্যেও কিন্তু মারাত্মক শিরক-কুফর বিদ্যমান। ছায়ানটের শিল্পীরা সূর্য ঠিক উঠার সময় রাগ ভৈরবী গেয়ে নতুন বছরকে স্বাগত জানায়। এটা কিন্তু সূর্য পূজারীদের একটা অনুকরণ। মুসলিমদের সূর্য উঠার সময় নামাজ পড়া নিষেধ, কারন এই সময় সূর্য পূজারীরা পূজা করে। হয়ত এখানে পূজা করা হচ্ছেনা, কিন্তু এখানে স্পষ্টতই সূর্য পূজার অনুকরণ করা হচ্ছে।

তারপর, “এসো হে বৈশাখ, এসো এসো...” গান গাওয়া হয়। এটা কিন্তু প্রকৃতি পূজারই একটা অনুকরণ। বৈশাখকে কেন ডাকাডাকি কর হয়? তার কি কোন শক্তি আছে? তারপর এই গানেরই আরেক লাইনে আছে “মুছে যাক গ্লানি, ঘুচে যাক জরা, অগ্নি স্নানে সূচি হোক ধরা”। এই লাইনটি সরাসরি শিরক এটা কিন্তু অনেকেই বোঝেন না। এখানে বলা হচ্ছে, গ্লানি, জরা ইত্যদি অগ্নিস্নানে মুছে গিয়ে এই পৃথিবী পবিত্র হবে। আগুন অগ্নি পূজক ও সনাতন ধর্মালম্বি একাংশের কাছে পবিত্র। এই জন্য অনেক হিন্দি বাংলা সিরিয়ালে দেখবেন অভিনেতা-নেত্রীরা মঙ্গল প্রদীপের কাছে হাত নিয়ে মাথায় মুছে নেয়। কোন মুসলিমই কিন্তু এটা বিশ্বাস করেন না, কিন্তু গুন গুন করে গেয়ে শিরকী গুনাহে লিপ্ত হচ্ছেন। দেশের সমস্ত ওলামা মাশায়েখরা কিন্তু এই কারনেই এই রমনা বটমূলে(অশত্থমূল) এসব অনুষ্ঠানের বিরোধিতা করেন। কারন, এখানে অংশগ্রহন করে বহু মুসলিম শিরকী গুনাহে লিপ্ত হন। এখানে কিন্তু আর কোন উদ্যেশ্য নেই। কিন্তু অনেকেই একে বাঙালিত্বের বিরোধী বলে ওলামা মাশায়েখদের গালাগাল দিয়ে থাকেন, এটা কিন্তু অর্বাচীনদের মতন আচরণ।বাঙালি সংস্কৃতি ততক্ষন পর্যন্ত মুসলিমরা পালন করতে পারবে, যতক্ষন না এটা ইসলামিক নিয়ম কানুনের বিরুদ্ধে যায়।

৩। মেলা (গান-বাজনা, অবাধ মেলামেশা, উল্কি আঁকা)- বৈশাখী মেলাকে কেন্দ্র করে এমন কাজ হয় যা ইসলামের দৃষ্টিতে হারাম। যেমনঃ অবাধ মেলা মেশা, উল্কি আঁকা, -বাজনা। বিভিন্ন জায়গায় বাদ্যযন্ত্র সহকারে গান গাওয়া হয় যা, ইসলামে হারাম। এইসব জনসমাবেশকে কেন্দ্র করে নারী পুরুষের অবাধ মেলামেশা হয় যা হারাম। এখানে মেয়েরা শ্লীলহানিতার শিকার হয় যার উদাহরণ আপনারা দুই বছ আগে টি এস সি তে দেখেছিলেন।

সর্বোপরি বাংলা নববর্ষ এমন করে পালন করা হচ্ছে যেন এটা ঈদ উৎসবের সমান মর্যাদা দিয়ে দাওয়া হচ্ছে। কিন্তু ইসলামে দুই ঈদ ব্যাতিত অন্য কোন উৎসব নেই। তাই ঈদের মত গুরুত্ত্ব নিয়ে বর্তমাননে যেভাবে নববর্ষ পালন করা হচ্ছে সেটা আমাদের দেশের সব আলেমই নিষেধ করেছেন।

তাই, মুসলিম ভাই বোনদের প্রতি অনুরোধ আপনারা বোঝার চেষ্টা করুন। উপরিউক্ত তিনটি পয়েন্ট নিয়ে গভীর ভাবে ভাবুন। তারপর সিদ্ধান্ত নিন।

বিঃদ্রঃ এই লেখাটি শুধু ঐসকল মুসলিম ভাই বোনদের জন্য যারা মনে প্রানে নিজেকে মুসলিম ভাবেন, কিন্তু দ্বিধায় ভুগছেন, যে নববর্ষ অনুষ্ঠানে যাবেন কি যাবেন না।
এই লেখাটি তাদের উদ্যেশ্যে নয় যারাঃ
১। সেক্যুলার।
২।নাস্তিক।
৩। সংশয়বাদী।
৪। যারা মনে করেন “আমি সবার আগে বাঙালী এবং পরে অন্য কিছু”।
৫। সনাতন ও অন্যান্য ধর্ম পালনকারী।

যেহেতু লেখাটি আপনাদের জন্য নয়, তাই আপনারা এটা পড়ে নিজের মতামত দিলে উপেক্ষা করা হবে। শুধু, অনুরোধ করছি গালাগাল দেবেন না,ধন্যবাদ।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ১২:০৯
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ০৩ রা মে, ২০২৪ সকাল ৮:০২

গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।


... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদীর পরিবার সংক্রান্ত আপডেট

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯


মার্চ মাস থেকেই বিষয়টি নিয়ে ভাবছিলাম। ক'দিন আগেও খুলনায় যাওয়ার ইচ্ছের কথা জানিয়েও আমার বিগত লিখায় কিছু তথ্য চেয়েছিলাম। অনেক ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও মেহেদীর পরিবারকে দেখতে আমার খুলনা যাওয়া হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×