somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কেন এই অনাহূত বিতর্ক?

১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:০১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত একজন বিচারপতি। গেল অক্টোবরে তিনি অবসরে যান। কিন্তু তিনি ইতিমধ্যে বড় ধরনের বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন। প্রধান বিচারপতিকে নিয়ে তার নানা বিরূপ মন্তব্য একাধিকবার সংবাদপত্রের শিরোনাম হয়েছে। প্রধান বিচারপতিকে নিয়ে তিনি বিতর্কের জন্ম দিয়েও ক্ষান্ত হননি, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন প্রধান বিচারপতির ‘ভূমিকা’ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। প্রশ্ন হচ্ছে, আপিল বিভাগের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি কি প্রধান বিচারপতি সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য করতে পারেন? সাম্প্রতিককালে তিনি এমন ‘বেশ কিছু’ কাজ করেছেন, যা তাকে বিতর্কিতই করেছে। তিনি তার ‘পদের’ প্রতি কোনো সম্মান দেখাননি। গত ৮ ফেব্র“য়ারি তিনি সুপ্রিমকোর্টের মাজার গেটের পাশে রাস্তার ওপর আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, ‘আমি তার (প্রধান বিচারপতি) কোনো আদেশ মানি না। মানব না।’ তিনি প্রধান বিচারপতির পদত্যাগও দাবি করেছিলেন। অতীতে কোনো অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এভাবে প্রকাশ্যে সুপ্রিমকোর্টের এলাকার ভেতরে সংবাদ সম্মেলন করেননি। বিচারপতি চৌধুরী করলেন। অতীতে কোনো বিচারপতি প্রধান বিচারপতির পদত্যাগ দাবি করেননি। এখন বিচারপতি চৌধুরী এ ধরনের দাবি তুলে নতুন একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন। বিচার বিভাগের ভাবমূর্তির জন্য এটা কোনো ভালো খবর নয়। কিন্তু তার একটি বক্তব্যে আমি অবাক হয়েছি, যখন তিনি সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেছিলেন, প্রধান বিচারপতি সিনহা খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছেন! কী ভয়ংকর কথা। এ ধরনের কথাবার্তা তো আমরা রাজনৈতিক ব্যক্তিদের মুখে শুনি। একজন বিচারপতির মুখে কি এ ধরনের বক্তব্য শোভা পায়? প্রধান বিচারপতি তো কোনো ‘রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব’ নন। তিনি কেন একটি রাজনৈতিক দলের প্রধানের রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়ন করবেন? বরং বিচারপতি চৌধুরীর বক্তব্যটিই স্পষ্ট একটি রাজনৈতিক বক্তব্য এবং তা প্রধান বিচারপতিকে বিতর্কিত করার শামিল। বিচার বিভাগের জন্য একটি খারাপ নজিরও বটে। বিচারপতি চৌধুরীকে নিয়ে যে ‘বিতর্ক’, তার অবসান হওয়া বাঞ্ছনীয়। তিনি এরপর আর অনাকাঙ্ক্ষিত কোনো বক্তব্য দেবেন না, এটাই প্রত্যাশা করি। তিনি ‘প্রধান বিচারপতির আদেশ মানবেন না’- এ কথা তিনি বলতে পারেন না। প্রধান বিচারপতি একজন ব্যক্তি নন, একটি প্রতিষ্ঠান। এ প্রতিষ্ঠানকে ‘বিতর্কিত’ করা অন্যায়। ন্যূনতম সৌজন্যবোধ থাকলে একজন সিনিয়র বিচারপতি এ ধরনের মন্তব্য করতে পারেন না। তবে অবসরে গিয়ে রায় লেখা কতটুকু সাংবিধানিক, কিংবা কতটুকু যৌক্তিক, এ প্রশ্নকে হালকাভাবে দেখার সুযোগ নেই। অনেক বিচারপতিই এ কাজটি করেন। কিন্তু কখনও এ বিষয়টি প্রকাশ্যে আসেনি। প্রধান বিচারপতি এ বিষয়টি সামনে নিয়ে এলেন। স্পষ্টতই তিনি উচ্চ আদালতে একটি সংস্কার চান। এটা মঙ্গল ও ন্যায়পরায়ণতার স্বার্থে যুক্তিসঙ্গত। একটি সংক্ষিপ্ত রায় হয়ে গেল। পূর্ণ রায় একজন নাগরিক পেলেন ১৫ মাস পর- এটা তো হতে পারে না? এটা তো একজন নাগরিকের অধিকার খর্বের শামিল। পূর্ণ রায় লিখতে একজন বিচারপতি কিছুটা সময় নিতেই পারেন। কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে তিনি মাসের পর মাস সময় নেবেন। প্রধান বিচারপতি এ ব্যাপারে একটি সংস্কার আনতে চাচ্ছেন। আমি তাকে স্বাগত জানাই। অতীতে কোনো প্রধান বিচারপতিই এ ধরনের কোনো উদ্যোগ নেননি। তবে প্রধান বিচারপতির এ বক্তব্য নিয়ে ‘রাজনীতি’ হোক এটা আমরা চাই না। তার বক্তব্যের ভেতরে ‘অন্য কোনো কিছুর গন্ধ’ খোঁজাও ঠিক নয়। উচ্চ আদালত নিয়ে আমরা আর বিতর্ক চাই না। প্রধান বিচারপতি একটি প্রতিষ্ঠানও বটে। এ ‘প্রতিষ্ঠান’কে বিতর্কিত করা কখনও কোনো মঙ্গল ডেকে আনবে না।

সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:০৪
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমরা কেন এমন হলাম না!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪১


জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমানের দেয়াল

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৪




অভিমানের পাহাড় জমেছে তোমার বুকে, বলোনিতো আগে
হাসিমুখ দিয়ে যতনে লুকিয়ে রেখেছো সব বিষাদ, বুঝিনি তা
একবার যদি জানতাম তোমার অন্তরটাকে ভুল দূর হতো চোখের পলকে
দিলেনা সুযোগ, জ্বলে পুড়ে বুক, জড়িয়ে ধরেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১

লিখেছেন শোভন শামস, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৫


তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

One lost eye will open thousands of Muslims' blind eyes

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭



শিরোনাম'টি একজনের কমেন্ট থেকে ধার করা। Mar Mari Emmanuel যিনি অস্ট্রেলীয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের একটি চার্চের একজন যাজক; খুবই নিরীহ এবং গোবেচারা টাইপের বয়স্ক এই লোকটি যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×