রুচির দৈন্য, রুচির দুর্ভিক্ষ , হিরো আলম এখন জাতীয় ইস্যু। বিদগ্ধজন, প্রিয় ব্যক্তিত্ব মামুনুর রশীদ জাতীয় চরিত্রের একটি দিকের স্বরূপ উদ্ঘাটন করেছেন মাত্র।
তা নিয়ে বিস্তর আলোচনা চলছে। সমালোচনা, ট্রল, শ্লেষ, হুমকি- কী নয়? চলারই কথা॥
হঠাৎ করে চোখের সামনে স্পষ্ট হয়ে উঠছে দৈন্য।
কিন্তু এ দায় কার? তেলে - জলে, ঘোড়া - গাধায়, সব একাকার হয়ে যায় কখন?
আচ্ছা, হিরো আলমের মত সংস্কৃতিবান মানুষ তো এই সমাজের অংশই । এবং নতুনও নয়। হিরো আলমের মত পারফরমার আমাদের সমাজে অতীতেও ছিল। কিছু মানুষের মনোরঞ্জন করত তারা । পথে-ঘাটে-প্রান্তরে। হাটে- মেলা-আড্ডায়। ছিল না?
সেই থাকা আর এই থাকায় প্রধান যে পার্থক্য- সেইসব পারফরম্যান্স কখনও রাজপথে , সুশীল সমাজে, রুচিবান শিক্ষিত সমাজে এসে দাঁড়াতো না। চেয়ার পেতো না। তারা কখনও এরকম ব্যাপক ফলোয়ার পায়নি, প্রচার পায়নি, সবার কাছে পৌঁছায়ওনি ফলে এরকম জাতীয় রূপ পায়নি।
প্রযুক্তি এখন সবাইকে এক প্লাটফর্মে এনে দাঁড় করিয়েছে। আজ রানু মন্ডল বিরাট শিল্পী হয়ে ওঠে, আজ এরকম আরো অনেককে জানি যারা সংগীত- শিল্প- সাহিত্যের সাথে আজীবন সম্পর্কহীন , অকষ্মাৎ বিরাট শিল্পী, সাহিত্যিক। ইউটিউব ভিডিও সয়লাব। অনেক টিভি চ্যানেল।প্রচারেই প্রসার, প্রচারের হাজারও মাধ্যম। ফলে, উঠে এসেছে সেই লেভেলে- সবার সামনে, রাখঢাকহীন, শ্রেনীবৈষম্যহীন। এই যেমন এখন আমিও লিখছি।
এখন মেধা নয়, মান নয় কেবল সাহস করে প্রকাশ করতে পারলেই হল। কারন যে কোন কিছুকে উপভোগ করার মত শ্রেনীর বোদ্ধা, সমঝদার রয়েছে। স্তরে স্তরে সাজানো এই সমাজে।
যে সমাজ রুচির ভিত্তিতে, শিক্ষার ভিত্তিতে , মননের ভিত্তিতে, ধনের ভিত্তিতে, মানের ভিত্তিতে বহু স্তরে ভাগ হয়ে ছিল তা সব এখন এক জায়গায় এসে দাঁড়িয়েছে ।
এখন সংখ্যাই সব নির্ধারন করছে। কত লাইক, কত শেয়ার, কত প্রচার।
সংখ্যাগরিষ্ঠের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সর্বত্র। ভালো তো, ভালো না?
অত শিল্পমান, সংগীতমান, কাব্যমান…. মান মান করে মান করার দিন শেষ। এখন সংখ্যার কথাই চূড.ান্ত। তবু মান চাই?
সবার মানকে মোটামুটিভাবে একমানে এনে কীভাবে এগিয়ে যাওয়া যায় - সেই পদক্ষেপ নিতে হবে। সুদূরপ্রসারী পরিকল্পিত পদক্ষেপ।
———-
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে মার্চ, ২০২৩ রাত ১০:১০