একটা ছোট্র ঘটনা দিয়ে পোষ্টটি শুরু করি।
স্বামী-স্ত্রী দু'জনই চাকরীজীবি।
সকালে ঘুম ভেঙ্গে গেলো চিল্লাচিল্লির শব্দ শুনে।
ব্যপার কি! .....
স্ত্রী -স্বামীকে কিছু একটা দিয়ে অাঘাত করেছে।
ব্যলকনিতে একটু মুখ বাড়াতেই শোনা গেল "রীতিমত ইনকাম করে খাই"। উক্তিটি পুরুষের নয়, ঐ মহিলার।
বোঝা গেল, যেহেতু মহিলাটি ইনকাম করে-সুতরাং এরকম কর্ম জায়েজ।
তবে মনে রাখুন-সব চাকুরীজীবি মহিলারা কিন্তু উনার মত হতে চেষ্টা করেনা।
উপরোক্ত ঘটনাটি মনে রাখুন।
" পুরুষগন নারীদের উপর সুপ্রতিষ্ঠিত যেহেতু অাল্লাহ তাদের মধ্যে একের উপর অপরকে গৌরাবান্বিত করেছেন এবং এ হেতু যে, তারা স্বীয় ধন সম্পদ হতে ব্যয় করে থাকে; সুতরাং যে সমস্ত নারী পূণ্যবতী তারা স্বামীর অনুগত্য করে.........স্ত্রীদের মধ্যে যাহাদের অবাধ্যতার অাশংকা করো তাহাদের সদুপদেশ দাও, তারপর তাদের শয্যা বর্জন করো, এবং প্রহার করো, যদি তাহারা তোমাদের অনুগত হয় তবে তোমরা অন্য পথ অন্বেষণ করিও না। ........ (সুরা নিসা-৩৪)
উপরোক্ত অায়াতটিতে এক নব্য পন্ডিত ( বিবেক ও সত্য) কিছু ভুল খুঁজে পেয়েছেন। তাই তার সন্দেহ হয়, এটা অাল্লাহর বানী নয়(নাউযুবিল্লাহ)।
উনার সন্দেহঃ (১) স্বামীরা স্ত্রীদের জন্য খরচ করবে বলে তারা স্ত্রীদের উপর মর্যাদাবান এবং গেীরাবান্বিত থাকবে এটা কেমন কথা!
উনার সন্দেহঃ (২) স্বামীদের বলা হয়েছে স্ত্রীদের প্রহার করতে।
প্রথম সন্দেহে অাসি-
(ক) ধরুন, যদুর তেমন কোন অায় নেই এবং স্ত্রীর ভরনপোষণে কোন খেয়াল করেনা।
অপরদিকে মধু তার উল্টো, অায়রোজগার ভালো এবং স্ত্রীর ভরনপোষনের ক্ষেত্রে খুবেই সচেতন।
এখন, স্ত্রীর নিকট সম্মান এবং মর্যাদা বেশি পাবে কে? যদু না মধু?
অবশ্যই মধু।
এখানে হেতু টা কি?
নিশ্চই অর্থ-সম্পদ।
(খ) একটা মেয়ে বিয়ে দেয়ার সময় দেখা হয় ছেলে রোজগার কেমন। কিন্তু, কোন ছেলে বিয়ে দেয়ার সময় কিন্তু দেখা হয়না মেয়ের ইনকাম কেমন।
অর্থাৎ খরচের দায়িত্বটা অাল্লাপাক পুরুষের উপর দিয়েছেন। সুতরাং স্বামীর কর্তৃত্ব স্ত্রীর উপর হওয়াটা অস্বাভাবিক কিছু নয়।
এখানে নারীর ছোট হওয়ার বা মর্যাদা হানী হওয়ার কিছু নেই।
বরং স্বামীর অনুগত হওয়ার মাধ্যমেই সমাজে একজন নারীর মর্যাদা বাড়ে।
এটাতো গেলে অর্থনৈতিক হেতু। সৃষ্টিগতভাবেই নারীদের উপর পুরুষের শ্রেষ্ঠত্ব/মর্যাদা দান করা হয়েছে।
এটা শুধুমাত্র সম্মানগত।
অন্যদিকে সতর্ক করা হয়েছে-তোমরা তোমাদের স্ত্রীদের সাথে উত্তম অাচারণ করো। নিশ্চই সেই উত্তম, যে তার স্ত্রীর নিকট উত্তম।
সুতরাং কোন স্বামী তার স্ত্রীর ভরনপোষন ছাড়া শ্রেষ্ঠ্যত্ব বা মর্যাদা কতটুকু রক্ষা করতে পারবেন সেটা অার ব্যখ্যা করার প্রয়োজন মনে করছিনা।
ঘটনাটি মনে অাছে নিশ্চই, ব্যাখ্যা নাই দিলাম.................
দেখা যায়, যে সংসারে স্বামীর থেকে স্ত্রীর ইনকাম বেশি সেখানে স্বামী অনেকটা হীনমন্যতায় ভোগেন। এবং ঐ স্ত্রী স্বামীর কন্ট্রোলে না থাকার সম্ভাবনা বেশি। যদি ঐ স্ত্রীর ভীতর ইসলামী অাক্বীদা না থাকে তবে সমস্যা অারো বড় হতে পারে।
অার শুধুমাত্র স্ত্রীর ইনকামে সংসার চলে-সেটা হবে এক দোযখের মত।
সুতরাং ভুল ধরার অাগে বাস্তবতা দেখা উচিত ছিলো।
অাসুন, স্ত্রী প্রহার সম্পর্কেঃ
এখানে প্রহারে অাগে বলা হয়েছে, ......যদি অবাধ্যতার অাশংকা করো। অবাধ্যকে বাধ্য করার জন্য তাবিজ-কবজের কথা বলা হয় নাই।
বলা হয়েছে। প্রথমত, সদুপদেশ দাও। দ্বীতিয়ত, পদক্ষেপ হিসাবে বিছানা অালাদা করে দাও।
ডাইরেক্ট, ক্রসফায়ার করতে বলা হয় নাই।
এরপরও যদি অবাধ্যতা করে চলে কেবলমাত্র তখনই প্রহার করতে বলা হয়েছে।
এখন অাপনাকে জানতে হবে-সেই প্রহারের লিমিট বা সীমা সম্পর্কে।
নবী করিম (সাঃ) বলেছেন, "যারা স্ত্রীদের উপর শক্তি প্রয়োগ করে তারা ভালো মানুষ নয়"।
নবী করিম (সাঃ) অারো বলেছেন, " স্ত্রীদের এমনভাবে প্রহার করোনা যাতে শরীরে কোন দাগ বা চিহ্ন হয়। বা কোন অঙ্গহানী ঘটে"।
সুতরাং চরম অবাধ্য স্ত্রীদের মৃদু অাঘাত করার মাধ্যমে সঠিক পথে অানার চেষ্টা না করে কোন পদ্ধতি উত্তম তা বের করুন।
(অবশ্য শেষ পদক্ষেপ হিসাবে পরবর্তী অায়াতে তালাকের কথাই বলা হয়েছে।)
চলবে................................
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই আগস্ট, ২০১৬ বিকাল ৪:০০