somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অাল্লাহকে নিয়ে গবেষণা না করে মিষ্টি কুমড়া নিয়ে গবেষণা করুন। সংশয়বাদী,অজ্ঞেয়বাদী, নাস্তিক্যবাদী সমীপে।

০১ লা নভেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:৪৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


'এ ব্রিফ হিস্টোরী অফ টাইম' গ্রন্থে স্টিফেন হকিং বলেছেন, প্রসারমান মহাবিশ্ব স্রষ্টার অস্তিত্বকে অস্বীকার করেনা।
অাবার, অাইনস্টাইন একটা প্রশ্ন করেছিলেন, মহাবিশ্ব সৃষ্টির সময় ঈশ্বরের কি অন্যরকম কিছু করার সম্ভাবনা ছিলো? স্টিফেন হকিং তার একটা উত্তর দিয়েছিলেন, হকিং বলেছিলেন, তিনি ঈশ্বরের মন বোঝার চেষ্টা করছেন। শেষমেষ একটা উত্তর দিলেন, এই মহাবিশ্বের স্থানে কোন কিনারা নেই; কালে কোন শুরু কিংবা শেষ নেই এবং স্রষ্টার করার মত কিছুই নেই।
যাহোক, তিনি কিভাবে ঈশ্বরের মন বুঝবেন সেটা তিনিই জানেন। অার "ঈশ্বর থাকতে পারেন" অাবার "স্রষ্টার করার মত কিছুই নেই"; দুটি বিপরীতমূখী বক্তব্য দিয়ে তিনি অাসলে কি বুঝাতে চাচ্ছেন সেটা সমাধানযোগ্য নয়। তিনি হয়তো সংশয়বাদী হতে পারেন। যেহেতু, তিনি একজন অনেক বড় মাপের বিজ্ঞানী; সুতরাং তার কথা মানুষ একটু গুরুত্বের সাথেই বিবেচনা করে। তার মানে এই নয় যে, তিনি সব সঠিক বলবেন।
মিষ্টি কুমড়ার উদাহরণ কেন টানলাম সেটা পরে বলছি। অাগে বিজ্ঞানীদের গবেষণা থেকে দুটো বাক্য তুলে ধরি।
বিজ্ঞানী হোয়াইট হেড, আর্থার এডিংটন, জেম্স জীন্স সহ বিরাট সংখ্যক বিজ্ঞানী স্থির সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন যে, Nature is alive ‘প্রকৃতি এক জীবন্ত সত্তা’।
ডব্লিউ.এন. সুলিভানের ভাষায় বিজ্ঞানীদের বক্তব্যের সার নির্যাস হল, The ultimate nature of the universe is mental. ‘বিশ্বলোকের চূড়ান্ত প্রকৃতি হল মানসিক’।
তার মানে বোঝা গেলো, এই মহাবিশ্ব কোন জড় বস্তুর মত অসাড় নয়। রীতিমত একটা জীবন্ত বা মানসিক বুদ্ধিদীপ্ত কর্ম করে চলেছে।
তবে, এই বিষয়টার একটা শুরু ছিলো। যাকে বিজ্ঞানে বিগ ব্যাং বা মহাবিষ্ফোরণ বলা হয়।
ধরুন, পুরো মহাবিশ্ব একটা মিষ্টি কুমড়া অাকৃতিতে ছিলো। হঠাৎ একদা এটার ভীতর মহাবিষ্ফোরণ হলো। এবং এই কুমড়ার বিভিন্ন অংশ মহাশূন্যে ছড়িয়ে ছিটিয়ে গেল। এই ছড়ানো ছিটানো অংশগুলোই বর্তমানে বিভিন্ন গ্যলাক্সি; যার ভীতর রয়েছে অসংখ্য সৌরজগত এবং এই সৌরজগতে রয়েছে বহু গ্রহ এবং উপগ্রহ। এরপর এগুলো যে গতিপথ প্রাপ্ত হলো; সেটা সেই শুরু থেকে একই গতিপথে ( নিয়মের বাইরে না গিয়ে) চলতে থাকলো এবং এখনো চলতে অাছে একইভাবে। কোনরকম গতি কম বা বেশি না করে ।
এবং সবচেয়ে মজার ব্যপার হলো, এই মহাবিশ্ব ক্রমশঃ প্রসারিত হচ্ছে। উদাহরণ দেয়া যায় এভাবে, একটা বেলুনে কলম দিয়ে কয়েকটা ফোটা দিলেন। এবার এই বেলুনের ভেতর বাতাস ঢুকাতে থাকুন। দেখা যাবে বেলুনটি যত বড় হচ্ছে, বেলুনের গায়ের ফোটাগুলো একে অপর থেকে ক্রমশ দূরে সরে যাচ্ছে। মহাবিশ্বের প্রসারণগুলো মুলত এরকম।
যাহোক, এ প্রসারণের শেষ অাছে। এক সময় এগুলো অাবার সংকুচিত হয়ে পূর্বের অবস্থায় ফিরে যাবার সম্ভাবনা অাছে বলে বিজ্ঞানীরা মত দিয়েছেন।
শুরুতে স্টিফেন হকিং এর একথা বক্তব্য তুলে ধরেছিলাম সেটা হলো, "এই মহাবিশ্বের স্থানে কোন কিনারা নেই; কালে কোন শুরু কিংবা শেষ নেই..."
একটু বুঝার চেষ্টা করি অামার মত সাধারণ জ্ঞান দিয়ে।
মহাবিশ্ব বলতে অামরা কি বুঝি?
অাচ্ছা, যদি মিষ্টি কুমড়াটা মহাবিশ্বের সূচনার অাদি হয় তবে এই কুমড়াটা বিষ্ফোরনের ফলে যে স্থান দখল করে অাছে সেটার বাইরের স্থানকে অাপনি কি বলবেন? যদি বাইরের বিষয়কে এই মহাবিশ্বেরই অংশ বলেন তবে তার শেষ কোথায়? শেষ যদি থাকে তবে তার একটা সীমারেখা থাকবে। মহাবিশ্বের সীমারেখা দেয়া মানে সেই সীমারেখার বাইরে অন্য কিছুর অস্তিত্বে প্রমাণ দেয়া।
তার মানে দাড়াচ্ছে, এই মহাবিশ্বের কোন সীমারেখা বা শেষ নেই। মানে অসীম। অসীম বলতে কি বুঝায় সেটা খাতা কলমে সংজ্ঞা দিতে পারলেও বাস্তবে বোধগোম্য নয়।
অাবার মহাবিশ্বের শুরু বলতে অামরা যেটা বুঝি সেটা একটা থিউরিক্যাল বিষয়। তার মানে, এই মহাবিশ্বকে গতিশীলতা দানের একটা পর্যায়কে শুরু বলে ধরে নিচ্ছি। কিন্তু, এর অাগের কিন্তু একটা অবস্থা ছিলো । সেটার কি কোন শুরু অাছে? এভাবে যদি শুরু খুঁজতে যাই তবে কোন শুরু খুঁজে পাবোনা। সেটাও অসীম। অসীম মানে কোন লিমিট দেয়া যাবেনা। সুতরাং মহাবিশ্বের শুরু এবং শেষ বলে কিছু নেই। সে শুরু এবং শেষ অামারা বলি সেটা গতিশীলতা বা কার্যকরী হওয়া থেকে অকার্যকর/ধ্বংসকে বলতে পারি। কিন্তু এরপরও একটা স্টেজ থেকে যায়।
সারকথা বোঝা গেল, এই মহাবিশ্বেকে "শুরু" শব্দটি দিয়ে যেমন লিমিট করা যাবেনা; তেমনি "শেষ" কথাটি দিয়ে বেধে দেয়া যাবেনা। বলা যায়, অসীম কাল থেকে এই মহাবিশ্বের শুরু(অাক্ষরিক অর্থে ব্যবহৃত)।
তাহলে দেখা গেল, এই মিষ্টি কুমড়া গবেষনায় কোন কুলকিনারা পাওয়া শুধু অসম্ভব নয় অবাস্তবও বটে।
এটা যখন মেনে নিতে অামাদের সমস্যা নেই সেখানে সেই অসীম মহাবিশ্বকে যিনি সৃষ্টি করেছেন, তার শুরু খুঁজি কোন যুক্তিতে?
অাচ্ছা, এই পর্যন্ত অাল্লাহ/ঈশ্বর ছাড়া কেউ কি বলেছে যে, এই মহাবিশ্ব অামি সৃষ্টি করেছি। মানে এই মহাবিশ্ব সৃষ্টির দাবি কি কেউ করেছে? তাহলে, দাবিদার যখন একজন তখন তাকে মালিক ভাবতে অামাদের সমস্যা কোথায়?
মানব সৃষ্ট যে কোন যন্ত্রের কার্যবলী বা ক্ষমতার একটা লিমিট থাকে । তার বাইরে সে কিছু করতে পারেনা।
ঠিক তেমনি অাল্লাহ সৃষ্ট মানুষের জ্ঞানের একটা পরিধি অাছে; যার বাইরে যাওয়া সম্ভব নয়।
সুতরাং মানুষ হয়ে অাল্লাহকে নিয়ে গবেষণা না করে তার সৃষ্ট মিষ্টি কুমড়া নিয়ে গবেষণা করলে মনে হয় মানুষ বেশি লাভবান হবে।





সর্বশেষ এডিট : ০২ রা নভেম্বর, ২০১৬ সকাল ৯:১২
৪৯টি মন্তব্য ৪৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

নিউ ইয়র্কের পথে.... ২

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২


Almost at half distance, on flight CX830.

পূর্বের পর্ব এখানেঃ নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্লেন থেকে বোর্ডিং ব্রীজে নেমেই কানেক্টিং ফ্লাইট ধরার জন্য যাত্রীদের মাঝে নাভিশ্বাস উঠে গেল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সামুতে আপনার হিট কত?

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৩



প্রথমে মনে হল বর্তমান ব্লগাদের হিটের সংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট করা যাক । তারপর মনে পড়ল আমাদের ব্লগের পরিসংখ্যানবিদ ব্লগার আমি তুমি আমরা এমন পোস্ট আগেই দিয়ে দিয়েছেন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডেল্টা ফ্লাইট - নিউ ইয়র্ক টু ডেট্রয়ট

লিখেছেন ঢাকার লোক, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:২৬

আজই শ্রদ্ধেয় খাইরুল আহসান ভাইয়ের "নিউ ইয়র্কের পথে" পড়তে পড়তে তেমনি এক বিমান যাত্রার কথা মনে পড়লো। সে প্রায় বছর দশ বার আগের ঘটনা। নিউ ইয়র্ক থেকে ডেট্রিয়ট যাবো,... ...বাকিটুকু পড়ুন

ল অব অ্যাট্রাকশন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৪৫

জ্যাক ক্যান ফিল্ডের ঘটনা দিয়ে লেখাটা শুরু করছি। জ্যাক ক্যানফিল্ড একজন আমেরিকান লেখক ও মোটিভেশনাল স্পিকার। জীবনের প্রথম দিকে তিনি হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। আয় রোজগার ছিলনা। ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অর্থ ছিলনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?

লিখেছেন এক নিরুদ্দেশ পথিক, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৬


১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

×