আমি হেথা ব্যস্ত ভীষণ
আমি হেথা ব্যস্ত ভীষণ
নেই যে কোন অবসর,
এমন করেই কাটছে যে
হায়, শীতের প্রহর।
এখানে এখন অনেক কুয়াশা
কাছাকাছি কোথায় যেন
ঝুঁটি শালিকেরা বেঁধেছে বাসা?
দল বেঁধে ছুটে চলে তারা
সকালে খাবারের সন্ধানে,
ধানক্ষেতে ফসল তোলা শেষ
বসে বসে তাই দেখি হেথা
সেই পাখিদের সমাবেশ ।
টিট টিট কিচির মিচির
আরও কতো যে শব্দ
শিশির ভেজা দূর্বা ঘাসে
প্রাণের স্পন্দন- নিরবতা ভঙ্গ।
পাখির ডাকে হৃদয় টাতে
বাঁজে যেন করুণ সুর
কোথায় আছো কেমন আছো
কোন সে দূর সমুদ্দুর?
তোমায় ছাড়া কাঁটবে বুঝি
শীতের কুয়াশা ভেজা সকাল রাত
এমন শীতে যে উষ্ণতা খুঁজে
মোর এই অবলা মন প্রাণ।
তোমাকে তাই ভাবি যে হায় যেন সব সময়
তুমি যেন আমার সকাল বিকাল গভীর প্রণয়।
জানি আমি যাবো তোমার কাছে
জানি আমি যাবো তোমার কাছে
সবারই যে চলে যেতে হয় দূরে
নশ্বর জগতের মায়া ম্যুহ ছেড়ে
আমারও যে তার হবে না ব্যতিক্রম
তাই এই প্রাণে খুশির প্লাবন মনে আনন্দ
হে রাব্বুল আলামিন পরওয়ারদেগার
তোমার কাছে যাওয়ার চেয়ে
আনন্দের আর কিছুই হতে পারে না
তুমি যদি দাও গো তাওফিক
ঈমান আর নেক আমলের বদৌলতে
তোমার সন্তুষ্টি লয়ে সেখানে
আনন্দ চিত্তে যেতে উন্মুখ আমি
কবর যেন হয় বেহেশতের বাগিচা
পাপ-পঙ্কিল স্বার্থপর পৃথিবী ছেড়ে
তোমার কাছে যাওয়ার সুবর্ণ সুযোগ
যেন খুবই সন্নিকটে ভেবে ভেবে
তাই যেন প্রাণে খুশির জোয়ার ওঠে
শুধু তোমার রেজামন্দি লয়ে
যেন যেতে পারি, রসুলের তরিক্বায়
আমল করে, আমি যেন অধীর আছি
সেই আলমে আরওয়া থেকে, কখন
যে সেই বহু কাঙ্ক্ষিত মহেন্দ্র ক্ষণ আসিবে
তোমায় রাজি খুশি করে
হবে সফল মোর মানব জীবন
মওলার দীদার লাভে তাই
মালাকুল মউত যখন আসিবে
আনন্দ চিত্তে কালেমা তাইয়্যেবা জপে
সেইখানে যেতে আমি চাই
ক্ষণিকা লয়ের মায়া ম্যুহ ছেড়ে..
(এই কবিতাটি শ্রদ্ধেয় ব্লগার খায়রুল আহসানকে উৎসর্গ করা হলো )
মায়ের প্রতীক্ষা
মা যে আমার থাকেন প্রতীক্ষায়
আমার পথ চেয়ে, কবে হবে ছুটি?
কবে যাবো দখিন হাওয়া দক্ষিণ বাড়ি?
কবে যে আবার আসবে সেই দিন?
কবে হবে যে দেখা, মায়ের সাথে?
কবে হবে এই প্রতীক্ষার অবসান ?
ভেবে ভেবে মায়েরও দিন কাটে হায়
মুঠোফোনে মায়ের কান্না শ্রবণে
মনে হয় এখনই চলে যাই এক নিমিষে
আমাদের ছোট গায়, বাড়ির আঙিনায়
এক পলকে, মায়ের স্নেহ তলে নেবো ঠাঁই
আহা আমার যদি থাকতো পাখির ডানা
হিমেল হাওয়ায় ভেসে ভেসে যেতাম সেথা
মায়ের পদতলেই যে সন্তানের বেহেশত
জানে সকল জনা মা যে আমার
আছেন অধীর অপেক্ষায় সারা বেলা একেলা।
ওগো মোর নিরুপমা কবিতা লেখার প্রহর
তোমার জন্য কতো সহস্র রাত
জেগে জেগে মোর সাধনা কাব্য রচনা
তোমার কী তবে নেই কোন কল্পনা
আমার জন্য তেমন কোন প্রতীক্ষা ক্ষণ
অভিসার কামনায় রতির দরদে
কবে হবে আমাদের দর্শন ভেবে ভেবে
তুমি কী কখনো হওনা অধীর তেমন ?
তুমি চাইলে
তুমি চাইলে ওই দূর চাঁদ সারারাত
আমি যে ছূঁয়ে দিতে পারি অনায়াসে,
তুমি চাইলে অজস্র রাত জেগে থেকে
বিনিদ্র কাটিয়ে দিতে পারি ভালোবেসে।
তুমি চাইলে মেঘ না চাইতে জল
তুমি চাইলে আনন্দ কোলাহল বিষন্ন বেলায়
তুমি চাইলেই তবে হবে কবিতার মিছিল
কাগজে কলমে অক্ষরে অক্ষরে সিঝিল
তুমি চাইলে খুশির ফোয়ারা বিজয় মিছিল
তুমি চাইলে নীল বেদনা যে হবে প্রজাপতি।
তুমি চাইলে না পাওয়ার হবে ইতি
তুমি চাইলেই কেবল এইসব প্রেম প্রীতি
নৌকো নদী খেলা পাল তোলা নৌকা
সতত নদীর মতো হবে যে প্রবাহিত
তুমি চাইলে হবে যে লীন
ক্ষয়িষ্ণু চাঁদের মতো অবনত মস্তকে
অমাবস্যার আঁধার রাতে ।
তুমি চাইলে আমি যে উদ্ধত শির..
পুরাতন অধ্যায় হে বিদায় !
হিমেল হাওয়া বহে গাছের পাতা নড়ে
সূর্যের নেই যে দেখা,
ঘন কুয়াশায় ঢেকে গেছে যেন পথ ঘাট প্রান্তর
পথিকের নেই যে আনাগোনা
গ্রামের আঁকা বাঁকা মেঠো পথ তাই ফাঁকা
তীব্রতর শীত আসার ইঙ্গিত
এলো এভাবেই বছরের শেষ কুয়াশাঘেরা দিনে।
এভাবেই তবে কী হবে এ বছরের বিদায়
ওঠলো না ভোরের রবি তাই- বিরহ বেদনায়
আজ রবি হারা সকাল
অতীতের ইতিহাসে নেবে যে ঠাঁই কাল।
স্মৃতির ভস্ম থেকে শুধু ফিনিক্স পাখির মতো
জন্ম নেবে তোমার- আমার মধুমাখা অতীত স্মৃতিগুলো।
মনে স্বপ্ন রঙিন প্রজাপতি দেবে ডানা মেলে
এই প্রাণ যে তোমাকেই খুঁজে নেবে বারে বারে
স্মৃতির মন্থনে গোপন অভিসারে
পুরাতন বর্ষ হে তোমারে জানাই বিদায়
আরও কতো বর্ষ যে চলে গেছে এভাবে
শুধু আমাদের প্রেম রয়ে গেছে অবিনশ্বর
যেন ধ্রুবতারা হয়ে
পরনিন্দা ঈর্ষা শত বাঁধা জয় করে
স্রষ্টার অশেষ কৃপায়।
বৈরী শীতে সাইটে বসে আছি আমি একা।
থেকে থেকে পাখিদের কলরব ভেসে আসে কানে
আমাদের শাশ্বত প্রেম যেন রয়ে যায়
নদীর মতো বয়ে যায় নীরবে
নৌকো নদী খেলাতে ঢেউয়ের তালে উচ্ছ্বাসে
আমরা দুজনে পরস্পর ভালোবেসে ক্লান্তিহীন
দৃঢ় প্রত্যয়ে বলতে পারি
পুরাতন বর্ষ হে তোমারে জানাই বিদায়
আসিবে নতুন বর্ষ আসিবে নবীন পথিক
থেকে যাবো মোরা দুজন হংসমিথুন প্রেমে মাতোয়ারা..
পুরাতন অধ্যায় হে বিদায় !
নতুন বর্ষে সবার জন্য শুভকামনা ।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ৮:০৩