somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার লেখা আর্টিকেল

১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ১:৫৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রক্ত পরিষ্কারে প্রকৃতিই সহায়ক
সাদিয়া ফাতেমা কবির
বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: খটমটে ভাষায় বলতে গেলে রক্ত একটি তরল যোজক কলা। একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের দেহে এর পরিমাণ ৫-৬ লিটার থাকে। আমরা দৈনন্দিন জীবনে নিজেদের অজান্তেই গ্রহণ করি বিভিন্ন ধরনের বিষাক্ত উপাদান তথা টক্সিন যা রক্তের মাধ্যমে প্রবাহিত হয়ে আমাদের দেহের কলকব্জাগুলোয় পৌঁছায় এবং সেগুলোর শারীরবৃত্তীয় কাজ করবার ক্ষমতাকে কমিয়ে দেয়।

দেহে টক্সিনের পরিমাণ বাড়ার সাথে সাথে এর প্রভাব বাড়তে থাকে, কমতে থাকে দেহের শারীরবৃত্তীয় কাজের সঠিক মাত্রা, যার ফলে দেখা দেয় নানান সমস্যা।

আমাদের শরীরে তথা রক্তে টক্সিনের মাত্রা বেড়ে যাবার জন্য যে কারণগুলোকে দায়ী করা যেতে পারে সেগুলো হলো: অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাত্রা, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, অবিশুদ্ধ পানি পান, কোষ্ঠকাঠিন্য, হজমের সমস্যা, অতিরিক্ত পরিমাণে চা-কফি গ্রহণ, মানসিক চাপ, দুশ্চিন্তা ইত্যাদি।

টক্সিন নামক এই বিষের প্রভাব থেকে আপনি খুব সহজে আপনার দেহ তথা রক্তকে মুক্ত রাখতে পারেন আর এজন্য আশ্রয় নিতে পারেন কিছু খাবারের যেগুলো রক্ত-পরিষ্কারক হিসেবে চমকপ্রদ ভূমিকা রাখতে পারে। তাহলে আসুন জেনে নেই এগুলো সম্পর্কে কিছু কথা।

রসুন:
শুরুতেই বলা যাক রসুনের কথা। রসুন একটি অন্যতম প্রাকৃতিক উপাদান যা একইসাথে রক্ত-পরিষ্কারক ও অ্যান্টিবায়োটিকের কাজ করে। ৩ কোয়া রসুন নিন, এগুলোকে মিহি কুচি করুন এবং এক গ্লাস বিশুদ্ধ পানির সঙ্গে পান করুন। এটি দেহ থেকে টক্সিনকে বিদেয় করে আপনার রক্তকে বিশুদ্ধ করতে ভূমিকা রাখবে। একই সাথে এটি অন্ত্রে উপকারী ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে যা সঠিক পরিপাকে সহায়ক। আর পরিপাক যত সঠিক হবে দেহে টক্সিনের মাত্রাও ততই কমে কারণ সঠিক পরিপাকের ফলে টক্সিন উৎপন্ন হবার সম্ভাবনা থাকেনা।

লেবু:
এক গ্লাস কুসুমগরম পানিতে লেবু চিপে তাতে এক চামচ মধু মিশিয়ে খেয়ে ফেলুন দিনের একদম শুরুতে। এটি আপনার রক্তে তথা পুরো শরীরেই পরিষ্কারক হিসেবে কাজ করে থাকে। শুধু তাই নয় এই মিশ্রণটি আপনার বাড়তি ওজন কমিয়ে দেবে সহজেই। দূর করবে ক্ষুধামন্দার মত সমস্যাকে।

সবুজ শাকসবজি ও ফলমূল:
সবুজ শাকসবজি মানেই তাতে আছে ক্লোরোফিল। এই ক্লোরোফিল রক্তের ক্ষতিকর জীবাণুকে দূর করে। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের রঙ্গিন সবজি ও ফল নিয়মিত খাওয়ার অভ্যাস করুন। এগুলো কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে যা অত্যন্ত জরুরি। এছাড়া শাকসবজি ও ফলমূলে বিদ্যমান ভিটামিনসমূহ সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে ভূমিকা রাখে অনেকখানি।

গোলমরিচ:
সালাদের সাথে বা বিভিন্ন খাবারে একটুখানি গোলমরিচের গুঁড়ো ছিটিয়ে নিয়ে আমরা প্রায়ই খাবারের স্বাদ বর্ধনের চেষ্টা করে থাকি। কিন্তু শুধু স্বাদ নয়, এই গোলমরিচের গুণ অনেক। গোলমরিচের গুঁড়ো হজমে সাহায্য করে। এটি পাকস্থলীতে হাইড্রোক্লোরিক এসিড নিঃসরণের মাত্রা বাড়িয়ে দেয় যা খাবারের সঠিক পরিপাকের জন্য আবশ্যক। এভাবে সঠিক পরিপাককে নিশ্চিত করে এটি খুব সহজে রক্তকে বিশুদ্ধ রাখে। তবে মশলাদার খাবারের প্রতি নিষেধাজ্ঞা থাকলে বা ঝাল খাওয়া বারণ হলে এটি অবশ্যই এড়িয়ে চলুন।

ডালিমের খোসার গুঁড়ো:
পড়তে গিয়ে নিশ্চয় একবার হোঁচট খেয়েছেন? কিন্তু কথাটা সত্যি। ডালিমের খোসা পরিষ্কার করে ধুয়ে শুকিয়ে নিন এবং ততক্ষণ পর্যন্ত গুঁড়ো করুন যতক্ষণ না এটি একেবারে মিহি পাউডারে পরিণত হয়। এবার প্রতিদিন সকালে এক গ্লাস গরম পানিতে ১ চা-চামচ এই গুঁড়ো মিশিয়ে পান করতে পারেন নিয়মিত। এটি আপনার রক্তকে পরিষ্কার করবে, একই সঙ্গে আপনাকে কৃমি থেকেও মুক্ত রাখবে।

প্রকৃতির কাছে আমাদের জন্য অনেক কিছুই আছে, শুধু প্রয়োজন একটু চোখ-কান খোলা রাখা। একটু সচেতন হলেই প্রাকৃতিক এই উপাদানগুলো দিয়ে আপনি আপনার রক্তকে বিশুদ্ধ রেখে নিশ্চিত করতে পারেন সুস্বাস্থ্য খুব সহজেই। তাই আর দেরি না করে আজ থেকেই সচেতন হোন, সুস্থ থাকুন সবসময়।

লেখক: শিক্ষার্থী, শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ, বরিশাল

বাংলাদেশ সময়: ১২৪৬ ঘণ্টা, আগস্ট ১২, ২০১২
সম্পাদনা: তানিয়া আফরিন


লিঙ্কঃ Click This Link
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×