
মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে দলাদলি শুরু হয়েছিল ১৯৭১ সালেই। স্বাধীনতা যুদ্ধের জন্য রাজনৈতিক নেতৃত্ব ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আগেই সামরিক নেতৃত্ব সংগঠিত হয় বলে উল্লেখ করেছেন লেখক মহিউদ্দিন আহমেদ তার বই ‘আওয়ামীলীগঃ যুদ্ধ দিনের কথা -১৯৭১’ বইয়ে। তবে ৩ এপ্রিল, ১৯৭১ সালে তাজউদ্দিন আহমেদ ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাথে দেখা করেন। প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী বাংলাদেশকে সহায়তা দেয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের প্রবাসী সরকার গঠনের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন। কিন্তু ঐ সময় পর্যন্ত আওয়ামীলীগের সকল নেতৃত্ব একত্রিত হয়ে এই ব্যাপারে মতামত প্রদানের সুযোগ পায়নি। ঐ সময় তাজউদ্দিন আহমেদকে পরামর্শ দেন ব্যারিস্টার আমিরুল ইসলাম এবং অধ্যাপক রেহমান সোবহান। অন্যান্য আওয়ামীলীগ নেতাদের সাথে আলাপ করার সুযোগ বা সময় তখন ছিল না। দেশের প্রয়োজনে তাজউদ্দিন আহমেদ প্রবাসী সরকার গঠনের সিদ্ধান্ত নেন। এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে দিল্লীতে এই সরকার গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়ে যখন তাজউদ্দিন আহমেদ, ব্যারিস্টার আমিরুল ইসলাম এবং অধ্যাপক রেহমান সোবহান কাজ করছিলেন তখন সিলেটের হবিগঞ্জে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের কয়েকজন বিদ্রোহী সামরিক কর্মকর্তারাও একটা সভা করেন। এটিই ছিল সশস্ত্র বাহিনীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রথম আনুষ্ঠানিক সভা। আওয়ামীলীগের হাই কমান্ডের নেতারা তখনও কেউ কারও সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেনি।
এই সরকার গঠনের বিষয়টা যখন আওয়ামীলীগের যুব নেতা শেখ ফজলুল হক মণি, আব্দুর রাজ্জাক, তোফায়েল আহমেদ এবং সিরাজুল আলম খান জানতে পারে তখন তারা তাদের সাথে আলাপ না করে ইন্দিরা গান্ধীর সাথে দেখা করার জন্য তাজউদ্দীন আহমেদের উপর ক্ষুব্ধ হন। তাদের দাবি অনুযায়ী, তাজউদ্দীনের কলকাতার ভবানিপুরে চিত্তরঞ্জন ছুতারের সঙ্গে যোগাযোগ করার কথা ছিল। তাদের ভাষ্য মতে, বঙ্গবন্ধুর স্পষ্ট নির্দেশনা ছিল, এই চারজন যুবনেতার নেতৃত্বে বিপ্লবি কাউন্সিল হবে এবং কোন ধরণের সরকার গঠন করা হবে না। বিপ্লবী কাউন্সিল তরুণদের সামরিক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করবে এবং দেশের ভিতরে গেরিলা যুদ্ধ পরিচালনা করবে। চিত্তরঞ্জন ছুতার ছিলেন বাংলাদেশে জন্ম নেয়া একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব যিনি তখন কলকাতাতে ছিলেন এবং বঙ্গবন্ধুর সাথে তার আগে থেকে পরিচয় ছিল।
তাজউদ্দীন আহমেদ কলকাতায় ফিরে এলে এই যুব নেতাদের তোপের মুখে পড়েন। তিনি কৈফিয়ত দেয়ার চেষ্টা করেন যে চিত্তরঞ্জন ছুতারের বাড়ি তিনি খুঁজে পাননি। কোলকাতা থেকে আগরতলাতে যাত্রার সময় শেখ ফজলুল হক মণির সাথে তাজউদ্দীন আহমেদের কথা কাটাকাটি হয়। শেখ মণি জানতে চান তাজউদ্দীন কার সঙ্গে পরামর্শ করে নিজেকে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন।
ক্ষুব্ধ হওয়া সত্ত্বেও এই চার নেতা প্রবাসী সরকারের নেতৃত্ব তখন মেনে নেয় কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই সরকারের নেতৃবৃন্দের সাথে তাদের দূরত্ব সৃষ্টি হয়। এই চার যুব নেতা পরে ‘বাংলাদেশ লিবারেশন ফোরস (বি এল এফ) নামে একটা আলাদা বাহিনী গঠন করে। এই বাহিনীর নাম পরে হয় ‘মুজিব বাহিনী’। এই বাহিনী গঠিত হয়েছিল ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ এর পরামর্শে এবং এদের প্রশিক্ষণ ও অস্ত্র ছিল সাধারণ মুক্তিবাহিনীর থেকে আলাদা। ভারতের মেজর জেনারেল সুজন সিং উবান ছিলেন এদের প্রশিক্ষণের দায়িত্বে।
ঐ সময় মাওলানা ভাসানি ছিলেন ভারতীয় গোয়েন্দাদের নজরদারিতে। ফলে স্বাধীন কোন সিদ্ধান্ত দেয়ার মত অবস্থায় উনি ছিলেন না। ৩১ মে, ১৯৭১ তারিখে এক সম্মেলনে মওলানা ভাসানির নেতৃত্বে সকল দল মিলে ‘বাংলাদেশ জাতীয় মুক্তি সংগ্রাম সমন্বয় কমিটি’ গঠন করা হয়। তবে ভাসানি এই সভায় উপস্থিত ছিলেন না। সম্মেলনে ছিলেন সাইফ উদ দাহার, মারুফ হোসেন, কাজী জাফর আহমদ, দেবেন শিকদার, আবুল বাশার, অমল সেন, নজরুল ইসলাম, শান্তি সেন, রাশেদ খান মেনন, হায়দার আকবর খান রনো, মোস্তফা জামাল হায়দার, নাসিম আলী প্রমুখ। সমন্বয় কমিটির সাথে যুক্ত হয় ন্যাপ (ভাসানি), কমিউনিস্ট বিপ্লবীদের পূর্ব বাংলা সমন্বয় কমিটি, পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টি (দেবেন শিকদার), কমিউনিস্ট কর্মী সঙ্ঘ, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (হাতিয়ার গ্রুপ), পূর্ব বাংলা কৃষক সমিতি, পূর্ব বাংলা শ্রমিক ফেডারেশন এবং পূর্ব বাংলা বিপ্লবী ছাত্র ইউনিয়ন। ভাসানি সমন্বয় কমিটির প্রতিনিধিদের নিয়ে পাঁচ দলীয় উপদেষ্টা কমিটিকে আরও বিস্তারিত করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু আওয়ামীলীগ তাতে রাজি হয়নি।
বামপন্থিদের ব্যাপারে প্রবাসী সরকারের উৎকণ্ঠা ছিল। অভিযোগ ছিল বিভিন্ন সেক্টরে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ দেয়ার ক্ষেত্রে বামপন্থি, বিশেষ করে ছাত্র ইউনিয়নের কর্মীদের সুযোগ দেয়া হচ্ছে না। বিএলএফ (মুজিব বাহিনী) নেতারাও সতর্ক ছিলেন, যাতে বামপন্থিরা ভারতীয় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে প্রশিক্ষণ এবং অস্ত্র না পায়। ক্যাপ্টেন রফিকুল ইসলাম বলেন যে ন্যাপের (ভাসানি) ব্যারিস্টার আফসার ভারতীয় বি এস এফের সহায়তায় একটা প্রশিক্ষণ ক্যাম্প খুলেছিলেন। প্রবাসী সরকারের চাপের কারণে ভারত সরকার ক্যাম্পটি বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়।
মুজিববাহিনী নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা সেনা কর্মকর্তাদের মধ্যেও যথেষ্ট ক্ষোভ ছিল। কাজী জাফর আহমদ বলেছেন যে মুজিব বাহিনী সম্পর্কে সামরিক কর্মকর্তারা ছিলেন অত্যন্ত ক্ষুব্ধ। শেখ মণি এবং সিরাজুল আলম খান এই ব্যাপারে তাকে বলেন যে বঙ্গবন্ধু জীবিত আছেন কি না আমরা নিশ্চিত নই। উনি যদি আমাদের মধ্যে ফিরে না আসতে পারেন সেই ক্ষেত্রে এই শুন্যতার সুযোগ সামরিক কর্মকর্তারা নিতে পারে। এই কারণেই মুজিব বাহিনীর সৃষ্টি।
স্বাধীনতার পরে মুক্তিযোদ্ধাদের দ্বারা গঠিত দল জাসদ ছিল দলাদলির আরেকটা বড় নজির। ১৯৭২ সালের জানুয়ারি মাসে সিরাজুল আলম খান সহ আরও ছাত্র নেতৃবৃন্দের সাথে বঙ্গবন্ধুর একটা বৈঠক হয়। নতুন রাষ্ট্র কিভাবে পরিচালিত হবে এই বিষয় নিয়ে ফেব্রুয়ারিতে সিরাজুল আলম খান একটা ১৫ দফা কর্মসূচির খসরা দিয়েছিলেন। ঐ সময় সিরাজুল আলম খানপন্থিদের ধারণা ছিল যে বঙ্গবন্ধু সরকারের কোন পদ গ্রহণ করবেন না। তিনি মাহাত্মা গান্ধীর মত নেপথ্যে থেকে জাতীয় অভিভাবকের দায়িত্ব পালন করবেন। এই প্রস্তাবগুলি ছিল অনেকটা এই রকম ;
১। বাংলাদেশ একটা বিপ্লবী জাতীয় সরকার দ্বারা পরিচালিত হবে। মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়া সকল দলের সমন্বয়ে গঠিত এই সরকারের প্রধান থাকবে বঙ্গবন্ধু।
২। মুক্তিযুদ্ধের পরিক্ষিত নেতৃত্ব এই সরকার পরিচালনা করবে।
৩। বঙ্গবন্ধুর মর্যাদার বিষয়ে বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
৪। সকল দলের প্রতিনিধিদের দ্বারা একটা সংবিধান তৈরি করা হবে।
৫। প্রচলিত কোন সামরিক বাহিনী থাকবে না। মুক্তিযোদ্ধা (এফ এফ), মুজিব বাহিনী সহ মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে বিপ্লবী গার্ড গঠন করা হবে।
৬। এই বিপ্লবী গার্ডের মধ্যে থাকবে পিপলস আর্মি, কৃষক ব্রিগেড এবং শ্রমিক ব্রিগেড।
৭। পুলিশ এবং আনসারের সমন্বয়ে একটি বাহিনী থাকবে। পুলিশ শব্দটা ব্যবহার করা হবে না।
৮। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আপাতত খোলা হবে না। ছাত্র এবং শিক্ষকেরা মিলে সাক্ষরতা অভিযান চালিয়ে অন্তত ৬০% মানুষকে স্বাক্ষর করবে।
৯। উচ্চশিক্ষা সবার জন্য উন্মুক্ত করতে প্রয়োজনে ব্যাংক ঋণের ব্যবস্থা করা হবে।
১০। অন্তত ২ বা ৩ বছর সিভিল সার্ভিস ক্যাডারদের প্রশাসনের দায়িত্ব থেকে দূরে রাখতে হবে।
১১। মুক্তিযুদ্ধের সময় যারা জেলা, থানা বা মহকুমা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ছিলেন তারাই জন প্রশাসনের কাজ করবেন ২ বা ৩ বছর।
১২। জন প্রশাসনে ১ম, ২য়, ৩য় বা ৪র্থ শ্রেণী থাকবে না।
১৩। সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন বেতনের অনুপাত হবে ১ অনুপাত ৭।
১৪। সমবায় ভিত্তিক অর্থনীতি চালু করতে হবে।
১৫। ভারত বা রাশিয়া ছাড়াও চীন, যুক্তরাষ্ট্র সহ বিভিন্ন দেশের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করতে হবে।
এই দাবিগুলি কোনটাই বলতে গেলে পরবর্তীতে বাস্তবায়ন হয়নি। তবে বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের ব্যাপারে সিরাজপন্থি ছাত্রলীগের আগ্রহ বাড়তে থাকে। ‘মুজিববাদ’ ধারণার উদ্ভব হয় কিছু সময়ের জন্যে। জাতীয় শ্রমিক লীগের ব্যানারে ‘লাল বাহিনী’ গঠন করার ঘোষণা দেয়া হয়। ছাত্রলীগের মধ্যে মেরুকরন চলতে থাকে। সমাজতন্ত্রের তীব্রতা বাড়তে বাড়তে ছাত্রলীগের একটা অংশ সব কিছুতেই কমরেড, লাল সালাম ইত্যাদি ব্যবহার করতে শুরু করে। আওয়ামীলীগের নেতাদের কাছে এটা বাড়াবাড়ি বলে মনে হয়। লাল সালাম বা মার্ক্সবাদের ব্যাপারে বঙ্গবন্ধুর সম্মতি ছিল না। এই বিষয়ে ছাত্রলীগের দুই অংশ ভিন্ন অবস্থান গ্রহণ করে। সিরাজপন্থিদের সাথে রাজ্জাক পন্থিদের বিরোধ দেখা দেয়। ১৯৭২ সালের এপ্রিলে সিরাজপন্থিরা একটা গোপন বৈঠক করে। এতে উপস্থিত ছিলেন সিরাজুল আলম খান, কাজী আরেফ আহমেদ, আ স ম আব্দুর রব, মনিরুল ইসলাম, শাজাহান সিরাজ, মোঃ শাজাহান, বিধান কৃষ্ণসেন, সুলতান উদ্দিন আহমদ, এম এ আওয়াল, নুরে আলম জিকু এবং আলী রেজা। জাসদ গঠনে একমত হন তারা। এক পর্যায়ে ছাত্রলীগের দুই ভাগ স্পষ্ট হয়ে ওঠে। বঙ্গবন্ধু সিরাজপন্থীদের মেনে নিতে পারলেন না শেষ পর্যন্ত। যদিও এদের সংখ্যাই বেশী ছিল। শেষ পর্যন্ত সিরাজপন্থিরা জাসদ গঠন করে। জাসদে বলতে গেলে সবাই ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা।
পরে জাসদের মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে আওয়ামী লীগ সমর্থিত মুক্তিযোদ্ধাদের বহু সহিংসতার ঘটনা ঘটে। ঐ সময়ের রাজনীতিকে এলোমেলো করে দেয়ার ক্ষেত্রে জাসদের অনেক ভুমিকা ছিল। শাসক গোষ্ঠীর মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাড়ায় এই জাসদ। এই জাসদকে লাইনে আনার জন্য আবার ব্যবহার করা হয় মুক্তিযোদ্ধাদের দ্বারা গঠিত রক্ষীবাহিনীকে। এদের বাড়াবাড়ি ছিল দেশের মানুষের জন্য আরেকটা মাথা ব্যথা। সেই সাথে সরকারকে বিব্রত করার জন্য ছিল মুক্তিযোদ্ধা সিরাজ শিকদারের দল 'সর্বহারা পার্টি' সহ আরও কিছু বামপন্থি দল যাদের মুক্তিযুদ্ধে অনেক অবদান ছিল। আবার আর্মির মুক্তিযোদ্ধারা মনে করতেন রক্ষীবাহিনীর কারণে তারা অবহেলিত। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যার পরেও এই হানাহানি, রেশারেশি কয়েক বছর পর্যন্ত ছিল। জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পরে নিজেরা নিজেরা হানাহানি করে মুক্তিযোদ্ধারা রাজনীতির মূল লাইম লাইটের বাইরে চলে যায় এবং এরশাদের মত কুলাঙ্গার দেশের শাসনভার গ্রহণ করে। জিয়াউর রহমানের হত্যার সময় আর্মিতে যে ক্যুয়ের বিচার হয় সেখানে অনেক মুক্তিযোদ্ধা অফিসারকে ফাঁসিয়ে দেয়া হয় অনেকটা বিনা বিচারে। ফলে পরবর্তীতে সেনাবাহিনী থেকে মুক্তিযোদ্ধা অফিসাররা বিদায় নেয়া শুরু করে। সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণ চলে যায় অ-মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে।
মুক্তিযুদ্ধে সাহসিকতার জন্য যে পদক দেয়া হয় সেই ক্ষেত্রেও সাধারণ গণবাহিনীর মুক্তিযোদ্ধারা ছিলেন অবহেলিত। বেশীর ভাগ পদক পেয়েছে সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তারা। কাকে পদক দেয়া হবে সেটার ক্ষেত্রে প্রাথমিক উপাত্ত ছিল সেনাবাহিনীর কাছে। সাধারণ মুক্তিযোদ্ধাদের জানুয়ারী, ১৯৭২ সালেই সামান্য কিছু টাকা হাতে ধরিয়ে দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়া হয়েছিল। যাদের সম্পর্কে কোন তথ্য সেনাবাহিনীর কাছে পরবর্তীতে ছিল না। এই সাধারণ মুক্তিযোদ্ধারাই স্বাধীনতার পরের ৩০ বছর সবচেয়ে অবহেলিত ছিলেন। জনগণ এদের কথা না ভুললেও শাসকরা কেউ তাদের মনে রাখেনি। অথচ ওনারা ছিলেন জাতির পরীক্ষিত বন্ধু (কিছু ব্যতিক্রমী ব্যক্তি ছাড়া)।
স্বাধীনতার ঊষালগ্ন থেকে এভাবে মুক্তিযোদ্ধারা বিভিন্ন দলে ভাগ হয়েছে। এই দলাদলি দেশের রাজনীতির জন্য অকল্যাণকর ছিল। রাজনৈতিক অঙ্গনে বহু হত্যা, সহিংসতা হয়েছে এই দলাদলির কারণে। এই দলাদলি সামরিক বাহিনীর শৃঙ্খলাকেও ব্যাহত করেছে এবং ক্যু পর্যন্ত হয়েছে। এই দলাদলির সুবিধাভোগী ছিল স্বাধীনতা বিরোধীরা। এই মতবিরোধ থেকে সৃষ্ট হানাহানির খেসারত জাতি এখনও দিচ্ছে।
সূত্র -
আওয়ামীলীগঃ যুদ্ধ দিনের কথা -১৯৭১ – মহিউদ্দিন আহমেদ
জাসদের উত্থান পতনঃ অস্থির সময়ের রাজনীতি – মহিউদ্দিন আহমেদ
tothakothito.blogspot.com
ছবি- সময় টিভি
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে জানুয়ারি, ২০২৩ রাত ৯:২৬

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



