জুয়েল আইচ আসলে তার প্রকৃত নাম না। বাংলাদেশের এই বিখ্যাত জাদুকরের আসল নাম হল গৌরাঙ্গ লাল আইচ। সংক্ষেপে জি এল আইচ। এই জি এল আইচ ১৯৭১ সালে হয়ে যান জুয়েল আইচ। ওনার দেশের বাড়ি পিরোজপুরের স্বরূপকাঠিতে। ১৯৭১ সালে তিনি সিরাজ সিকদারের সর্বহারা পার্টি করতেন। এই সময়ের আলোচিত লেখক মহিউদ্দিন আহমেদের বই ‘জাসদের উত্থান পতন : অস্থির সময়ের রাজনীতি’ বইয়ে এই তথ্য পাওয়া যায়। কলামিস্ট আনোয়ার পারভেজ হালিম একই সুত্রে তার একটা কলামে সংক্ষেপে প্রখ্যাত যাদুকর জুয়েল আইচ সম্পর্কে এই তথ্য দিয়েছেন।
১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের শুরুতে বরিশালের পেয়ারা বাগানে সিরাজ সিকদারের সর্বহারা পার্টির পক্ষ হয়ে জুয়েল আইচ যুদ্ধ করেছেন। যুদ্ধের সময় তার ছদ্মনাম ছিল কমরেড জাহিদ। পরে জুয়েল আইচ নামটি স্থায়ী হয়ে যায়। দেশ-বিদেশে তিনি এখন এ নামেই পরিচিত। পাক আর্মিদের তীব্র আক্রমণের মুখে পেয়ারা বাগানের পতন ঘটলে জুয়েল আইচ গোপনে ভারতে চলে যান। পরে মেজর জলিলের অধীনে ৯ নম্বর সেক্টরে যুদ্ধ করেন।
যাদুকর জুয়েল আইচ সম্পর্কে এই ছোট পোস্ট দেয়ার উদ্দেশ্য হল যে প্রখ্যাত এই যাদুকরের যে প্রোফাইল আমরা বিভিন্ন জায়গাতে দেখি সেখানে কোথাও ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সিরাজ সিকদারের সর্বহারা পার্টির সাথে তার সংস্রবের কথা উল্লেখ করা হয় না। তবে এটা অবশ্যই প্রশংসনীয় যে তিনি পরবর্তী সময়ে সর্বহারা পার্টির উগ্রতা অনুধাবন করে বিপথ থেকে সুপথে এসেছেন এবং বাংলাদেশের যাদুশিল্পকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিয়ে গেছেন। গ্রামে বেদেদের যাদু দেখে জুয়েল আইচের যাদুকর হওয়ার শখ হয়। জুয়েল আইচ এবং লেখক হুমায়ূন আহমেদের মধ্যে সুন্দর একটা সম্পর্ক ছিল। বিভিন্ন সময়ে তারা এক সাথে আড্ডা দিয়েছেন। হুমায়ূন আহমেদও ছাত্র থাকা অবস্থায় যাদু কিছুটা শিখেছিলেন এবং মঞ্চে পরিবেশন করেছিলেন। জুয়েল আইচ জগন্নাথ কলেজের ছাত্র ছিলেন। পরে কিছুদিন বরিশাল অঞ্চলে একটা স্কুলে শিক্ষকতা করেছেন। একবার তার জাদুর সব সরঞ্জাম আগুনে পুড়ে ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। তিনি মনোবল না হারিয়ে পুনরায় যাদু দেখানো শুরু করেন এবং বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার ৫ থেকে ১০ বছরের মধ্যে জাতীয় পর্যায়ে খ্যাতি অর্জন করেন। যাদু ছাড়াও জুয়েল আইচ খুব সুন্দর বাঁশী বাজাতে এবং ছবি আঁকতে পারেন।
সুত্র -
উইকিপিডিয়া
chintasutra.com
ছবি- রকমারিডটকম
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে জানুয়ারি, ২০২৩ সকাল ৯:১৫