আমি মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা নিয়ে পড়াশুনা করি নাই। কিন্তু বিভিন্ন জায়গায় চাকরি করতে গিয়ে অনেক সময় তাদের সাথে আমার বিভাগের কাজের যোগাযোগ হয়েছে। আমি খেয়াল করেছি যে কিছু বিষয়কে তারা গুরুত্ব দেয়। যেমন প্রেষণা (Motivation), কর্মীর ক্ষোভ বা অসন্তোষ ব্যবস্থাপনা (Grievance Management), প্রতিষ্ঠানে কর্মী ধরে রাখা (Retention of Employee), শাস্তিমুলক ব্যবস্থা ইত্যাদি।
আমার ধারণা আমাদের এই সামু ব্লগে ব্লগারদের মধ্যে প্রেরণা/ প্রেষণার অভাব আছে। অনেকে অনেক ভালো লেখেন বা অতীতে লিখেছেন কিন্তু এখন আর লিখতে আগ্রহ পাচ্ছেন না। আবার অনেক ব্লগারের মনে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ক্ষোভ আছে। এই ক্ষোভ কেউ প্রকাশ করেন আবার অনেকে করেন না। যার ফলে তার লেখা এবং মন্তব্যে/ প্রতি-মন্তব্যে এই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ নেতিবাচকভাবে ফুটে ওঠে। ব্লগ ছেড়ে অনেকেই চলে যাচ্ছেন ক্ষোভের কারণে। অনেক সময় প্রকৃত কারণ ব্লগার বলতে চান না। ১০ বা ১৫ বছর এই ব্লগে থাকার পরে কেন চলে যাচ্ছেন এটা নিয়ে ভাবার দরকার আছে। কারণ ব্লগের সুষ্ঠু প্রবৃদ্ধির জন্য কারণগুলি জানা প্রয়োজন। কারণ না জানলে সমাধান করা যাবে না।
অন্যের মন্তব্যের কারণেও অনেকে চলে যাচ্ছেন। এই ক্ষেত্রে অসন্তোষ ব্যবস্থাপনার কৌশল প্রয়োগ করার দরকার হতে পারে।
ব্যক্তি মালিকানাধীন অথবা কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানেও মানব সম্পদ বিভাগ চেষ্টা করে কর্মীদের কাজে অনুপ্রেরণা জোগাতে। কর্মীর ক্ষোভ জানার চেষ্টা করা হয় এবং সম্ভব হলে সেটা সমাধানের ব্যবস্থা করা হয়। তার প্রতি কেউ অন্যায় আচরণ করলে অপরাধীর বিরুদ্ধে শাস্তিমুলক ব্যবস্থা নেয়া হয়। প্রতিষ্ঠানের সবচেয়ে বড় সম্পদ হোল মানব সম্পদ। তাই চেষ্টা করা হয় ভালো মানের কর্মীদের প্রতিষ্ঠানে ধরে রাখার জন্য। অনেক প্রতিষ্ঠানে তাই বিদায়ী কর্মীর কাছ থেকে লিখিত ভাবে জানতে চাওয়া হয় কেন তিনি চলে যাচ্ছেন। এই তথ্য এবং উপাত্ত ভবিষ্যতে কর্মী ধরে রাখার ক্ষেত্রে সাহায্য করে। প্রতিষ্ঠানে কেউ অন্যায় করলে তাকে সাধারণত কারণ দর্শানোর সংবাদজ্ঞাপন করা হয়। তাকে তার আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেয়া হয়। তারপরে প্রয়োজনীয় শাস্তি মুলক ব্যবস্থা নেয়া হয়। শাস্তি কি হবে সেটা লিখিতভাবে জানানো হয় এবং শাস্তির মেয়াদ বা শাস্তির পরিমান নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়। কর্ম পরিবেশ এমনভাবে তৈরি করা হয় যেন নারী পুরুষ পার্থক্য না থাকে এবং আচরণে শালীনতা থাকে।
ব্লগের সাথে এই পদ্ধতি মিলবে না এটা আমি জানি। কিন্তু ব্লগে যে ভাবে ব্লগাররা ক্ষোভ নিয়ে চলে যাচ্ছে বা ক্ষোভ নিয়ে ব্লগিং করছে তাই আমার কাছে মনে হোল এই ধরণের পদ্ধতি নিলে হয়তো ব্লগের জন্য ভালো হবে। এই ব্লগে নারীদের অংশগ্রহণ আশংকাজনকভাবে কমে যাচ্ছে। এটার অর্থ হতে পারে এই যে দেশের মেয়েরা ছেলেদের তুলনায় ব্লগিংয়ে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে অথবা পরিবেশ অনুকুল না হওয়ার কারণে তারা ব্লগে নির্ভয়ে লিখতে পাড়ছে না অথবা মেয়েরা ব্লগিংয়ে পিছিয়ে আছে অজানা কারণে। সঠিক কারণ আমিও জানি না।
ব্লগারদের মূল্যবান অভিমত এবং পরামর্শের অপেক্ষায় রইলাম। এই ব্লগটাকে আমাদের টিকিয়ে রাখতে হবে নিজেদের স্বার্থে। ব্লগটিম সব কাজ করতে হয়তো পারবে না। তাদের সাথে আমাদেরকে সহযোগিতা করতে হবে।