ভারত ১৯৭১ সালের পর থেকেই বাংলাদেশের উপর দাদাগিরি করে আসছে বা করার চেষ্টা করেছে। আওয়ামীলীগের গত সাড়ে ১৫ বছরের শাসন ছাড়া আর কোন রাজনৈতিক দল বা সরকার এই দাদাগিরিকে ভালো চোখে দেখেনি। এমনকি ১৯৯৬ সালে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ যখন দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় আসে তখনও তারা ভারতের সাথে এতো মাখামাখি করেনি বা ভারতের সাথে নতজানু আচরন করেনি। কিন্তু ২০০৯ সালে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসার পরে তারা তাদের দীর্ঘ মেয়াদি রাজনৈতিক কৌশলের অংশ হিসাবে ভারত তোষণনের নীতি গ্রহণ করে এবং ভারতকে প্রভু মানা শুরু করে। বিশেষ করে ২০১৪ সালের নির্বাচনের সময় থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত সময়ে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় থাকার জন্য ধীরে ধীরে আরও বেশী ভারত নির্ভর হয়ে পড়ে।
ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ সরাসরি এই দেশে তাদের কাজ চালিয়ে গেছে বছরের পর বছর। আমাদের দেশের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআই ভারতীয় ‘র’ এর সাথে মিলে মিশে কাজ করতো। ‘র’ এর সাথে কাজ করতে রাজী না হওয়ার জন্য নির্যাতনের শিকার হয়েছেন এমন সামরিক কর্মকর্তাও আছেন। রিমান্ডে নিয়ে দেশের গোয়েন্দাদের সাথে ভারতীয় ‘র’ এর গোয়েন্দারা জিজ্ঞাসাবাদ এবং নির্যাতন করতো। ভারতকে এবং অন্যান্য শক্তিশালী পশ্চিমা দেশকে খুশি রাখতে জঙ্গি ধরার নাটক সাজানো হতো শেখ হাসিনার নির্দেশে। অনেকগুলি অসম চুক্তির মাধ্যমে ভারতকে বিভিন্নভাবে অসম সুবিধা দেয়া হয়েছে। বিডিআর হত্যার মূল কারিগর ছিল ভারত। বিনিময়ে ভারত শেখ হাসিনার স্বৈরাচারী শাসন এবং রাতের ভোটের নির্বাচনগুলিকে সমর্থন দিয়ে গেছে।
স্বাধীনতার পর থেকেই ভারত বাংলাদেশের উপরে তাদের অনৈতিক আধিপত্য বিস্তার করা শুরু করে। মেজর ডালিম সম্প্রতি বলছেন যে ১৯৭১ সালেই বেঙ্গল রেজিমেন্টের অফিসারেরা ভারতের পরবর্তী সময়ের দুরভিসন্ধি আঁচ করতে পারেন এবং তারা এই ব্যাপারে একতাবদ্ধ হন। যুদ্ধের পরে ১৯৭১ সালের ৩১ ডিসেম্বর তারিখে সেক্টর কমান্ডার এম এ জলিলকে গ্রেফতার করা হয়। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল যে তিনি ভারতীয় বাহিনীর লুটপাটের প্রতিবাদ করেছিলেন। ১৯৭৬ সালে মাওলানা ভাসানি জনগণকে সাথে নিয়ে ফারাক্কা বাঁধ অভিমুখে লং মার্চ করেন। এই সব বিভিন্ন কারণে, সর্বোপরি গত আওয়ামীলীগ সরকার কর্তৃক ভারতের কাছে দেশ বিক্রির প্রচেষ্টার কারণে এই দেশের অন্তত ৮০% মানুষ ভারতের অনৈতিক আধিপত্যকে ঘৃণা করে। কট্টর আওয়ামী সমর্থক ছাড়া কোন বাংলাদেশী ভারতের আধিপত্যকে পছন্দ করে না। শেখ হাসিনাও জানতো যে তার এই ভারতমুখীতা সাধারণ জনগণ পছন্দ করে না। যে কারণে সে প্রশাসন, পুলিশ, গোয়েন্দা এবং তার দলের সন্ত্রাসীদের দিয়ে রাতের ভোটের আয়োজন করেছিল।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ রাত ২:৪৬