somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাচ্চা-কাচ্ছা

০৩ রা অক্টোবর, ২০১১ সকাল ১১:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এসেছে নতুন শিশু, ছেড়ে দিতে হবে স্থান_ কবির এ-কথা গণ্য করেন কমবেশি সবাই-ই, কিন্তু মান্য করতেই যা একটু কষ্ট! কবিতার বাইরে এসে গদ্যের ভাষায় বলা যায়_ স্থান আসলে কেউ কাউকে দিতে চায় না, এবার সেটা শিশু হোক আর শিশুর বাপই হোক! তবুও শিশুরা জঞ্জাল-আকীর্ণ পৃথিবীতে আসে, স্থান পেলেও আসে, না পেলেও ফেরত যায় না!


শিশুদের মনে যেসব কৌতূহল উঁকিঝুঁকি মারে
কৌতূহল জাগে না এমন মানুষ নেই বললেই চলে। বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে তো এটা আরও অনেক বেশি। তাদের সার্বক্ষণিক জিজ্ঞাসা_ এটা এমন হলো কেন, ওটা এমন কেন... ইত্যাদি। বলাবাহুল্য তাদের সব কৌতূহল নিবৃত্ত হয় না, উত্তরও খুঁজে পাওয়া যায় না! শিশুমনে সদাজাগ্রত এমনই কিছু কৌতূহল_
কুদ্দুস ভাইয়েরও তো বোন আছে! তাহলে তিনি আমার বোনের কাছে প্রায়ই আসেন কেন? কী চান আপুর কাছে!
চকোলেট-আইসক্রিম এত মজার একটা জিনিস, অথচ আব্বু-আম্মু কেন যে এগুলো খান না!
আব্বু-আম্মু তো স্কুলে যান না! তাহলে শুধু শুধু আমাকে স্কুলের দিকে ঠেলে পাঠান কেন!
বন্ধুদের খেলনাগুলো কত্ত সুন্দর! আমার সব খেলনা, জামা-কাপড় ওদের চেয়ে অসুন্দর কেন!
বড় হতে কতদিন সময় লাগে! যদি এক লাফে বড় হয়ে যাওয়া যেত!

জনসংখ্যা বৃদ্ধির সুফল
শিশুদের কথা বলতে গেলে অবধারিতভাবে জনসংখ্যার কথাও চলে আসে! জনসংখ্যার একক যেন শিশু! বর্তমান বাংলাদেশে জনসংখ্যা বৃদ্ধিকে বড় সমস্যা হিসেবে ধরা হয়। আসলেই কি জনসংখ্যা সমস্যা, শিশুরাই এর কারণ? কস্মিনকালেও নয়! এই বৃদ্ধিরও রয়েছে হাজারো রকম উপযোগিতা_
ছোট আয়তনের একটি রাষ্ট্রে বিপুল লোকের বসবাস_ এটা নিশ্চয়ই বাংলাদেশের জন্য বিরল রেকর্ড! বৃদ্ধির ধারা অব্যাহত থাকলে গিনেস বুকে নাম ওঠানো ঠেকাবে কে!
যে কোনো পণ্যের (বিশেষ করে মাল্টিন্যাশনাল) বাজার সৃষ্টিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে!
হুজুগে বাঙালি কথাটা এমনি এমনি চাউর হয়নি! যে কোনো ইস্যুতে হুজুগ দেখানোর লোকের অভাব হয় না বললেই চলে! না চাইতেও পাওয়া যায়!
বেশি জনসংখ্যা মানে বেশি বেশি বিবাহ! বিবাহ মানেই ভূঁরিভোজের বিরাট যজ্ঞ! কাজিদেরও টাকা উপার্জনের সুবর্ণ সুযোগ!
বিভিন্ন জনসভা, আন্দোলন-সংগ্রামে কিছু মানুষ জুটেই যায়! আন্দোলনকারীও 'সতীর্থ' পেয়ে পুলকিত হয়!


আগেকার বাচ্চা বনাম এখনকার বাচ্চা
সময় এবং সংস্কৃতির বিবর্তনে পাল্টে গেছে অনেককিছু। পাল্টে যাচ্ছে শিশুরাও। আগেকার শিশু এবং এখনকার শিশুর মধ্যে বিস্তর পার্থক্য। তুলনামূলক সংক্ষিপ্ত একটা চিত্র দেখা যাক_
আগে : রাক্ষস কিংবা বনমানুষের ভয় দেখিয়ে ঘুম পাড়ানো হতো!
এখন : অবাস্তব বস্তুর ওপর থেকে সযতনে বিশ্বাস পরিহার করে চলে!
আগে : বড় ভাইয়া বা আপুদের গোপন প্রেমপত্র বাহক হয়ে যথাস্থানে পেঁৗছে দিত!
এখন : তৎকালে ফোন, ইন্টারনেট কোথায় ছিল ভেবেচিন্তে বের করার চেষ্টা করে!
আগে : বিনোদনের প্রধান মাধ্যম ছিল মাঠে-ময়দানে খেলাধুলা!
এখন : বিনোদনের প্রধান মাধ্যম কম্পিউটার গেমস, টেলিভিশন!
আগে : মোটামুটি বয়সের আগে প্রেম কী জিনিস বুঝতই না!
এখন : নাটক-সিনেমার আর পরিপাশর্ে্বর চালচলনে অল্প বয়সেই প্রেম চিনে ফেলে! কেউ কেউ প্রেম করতে উৎসাহীও হয়!

শিশুদের জন্য 'না' বলুন...
বিগত কয়েক বছর ধরে একটা স্লোগান জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে_ 'শিশুদের জন্য হ্যাঁ বলুন'। শিশুদের জন্য হ্যাঁ বলা যাবে কিন্তু সব ক্ষেত্রে অবশ্যই নয়! কিছু কিছু ক্ষেত্রে না-ও বলতে হবে!
আঠারো বছরের কম বয়সীদের শিশু হিসেবেই গণ্য করা হয়। গ্রামগঞ্জে এখনও বাল্যবিবাহের প্রচলন রয়েছে। বাল্যবিবাহ ঠেকানোর ক্ষেত্রে শিশুদের জন্য 'না' বলতে হবে!
বাবার পকেট থেকে টাকা লোপাট করা অনেক শিশুরই প্রিয় কাজ! এ ধরনের কাজ থেকে শিশুদের 'না' করতে হবে!
স্কুলে যেতে শিশুদের মারাত্মক অনীহা! তাদের স্কুলে অনুপস্থিতির প্রবণতাকে অবশ্যই না বলতে হবে!ষ
'ঘুমিয়ে আছে শিশুর পিতা সকল শিশুর অন্তরে'_ এ কবিতার বাণী গ্রহণ না করে, শিশুর হবু পিতা পরিচয়টাকে নিরুৎসাহিত করতে হবে!
শিশুশ্রম নিষিদ্ধ। কিন্তু পড়াশোনা তো এক ধরনের শ্রমই! শিশুস্বার্থে এ ধরনের শ্রমকে 'না' বলা জরুরি!
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বিসিএস দিতে না পেরে রাস্তায় গড়াগড়ি যুবকের

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৫৫

আমাদের দেশে সরকারি চাকরি কে বেশ সম্মান দেওয়া হয়। আমি যদি কোটি টাকার মালিক হলেও সুন্দরী মেয়ের বাপ আমাকে জামাই হিসেবে মেনে নিবে না। কিন্তু সেই বাপ আবার ২০... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। আমের খাট্টা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৪



তাতানো গরমে কাল দুপুরে কাচা আমের খাট্টা দেখে ব্যাপারটা স্বর্গীয় মনে হল । আহা কি স্বাদ তার । অন্যান্য জিনিসের মত কাচা আমের দাম বাড়াতে ভুল করেনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কে কাকে বিশ্বাস করবে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৯


করোনার সময় এক লোক ৯৯৯ এ ফোন করে সাহায্য চেয়েছিল। খবরটা স্থানীয় চেয়ারম্যানের কানে গেলে ওনি লোকটাকে ধরে এনে পিটিয়েছিলেন। কারণ, ৯৯৯ এ ফোন দেওয়ায় তার সম্মানহানি হয়েছে।

সমাজে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×