{ভূমিকা: বড় বিলাই এর ইরান যাওয়া ঠিক হওয়ার পর ওকে আমার ডায়রী দিয়ে বলেছিলাম ভ্রমন কাহিনী লিখতে, এখানে ওর লেখা তুলে দিচ্ছি}
নভেম্বর ২০, ১৯৯৪ ১২-৪২ এ এম , করাচী ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট জিন্নাহ টারমিনাল
চরম বিরক্ত হওয়া কাকে বলে মনে হয় আজ বুঝতে পারছি। শুধু বসে থাকতে পারলেও হতো, কিন্তু একদিকে টিভিতে চলছে গান, অন্যদিক এয়ারপোর্টের রেস্টুরেন্টের লবনহীন কুখাদ্য। আর কত সহ্য করা যায়।
১-১১ এ এম
এখন এয়ারপোর্ট থেকে দেয়া ফ্রী খাদ্য খেলাম। বিশ্রী পনির মাখানো চার টুকরো রুটি, বিশ্রী স্বাদের কেক আর বিশ্রী স্বাদের চা। ফরিদা (প্রতিযোগী) ২টুকরো রুটি মুখে দিয়ে আর কিছু মুখে তুললনা। আমি কোন রকমে কেকটা গিলে চা টা খেয়ে ফেললাম। আশে পাশের লোকজন এমন ভাবে তাকায় কেন? অসহ্য লাগছে।
২-০৭ এ এম
৭ মিনিট আগে প্লেন ছাড়বার কথা। এদিকে প্লেন আসারই নাম গন্ধ নেই। মনে হচ্ছে সাড়া জীবন এই এয়ারপোর্টে থাকতে আর পচতে হবে। জীবনে এরকম বিরক্ত হইনি কখনও।আমার বিদেশে ভ্রমন করিবার সাধ মিটিয়া গেল।
২-৩৯
আজ সকাল ৫-৪৫ এ ঘুম ভেংগেছে। তারপর আর ঘুমাইনি। অর্থাৎ পুরো ৯৮৪ মিনিট জেগে আছি। আরও জাগতে হবে মনে হচ্ছে। ফেস পাউডার বক্সের আয়নায় দেখেছি আমার ২ চোখ লাল হয়ে আছে। কতগুলো লোক বারবার আমার দিকে তাকাচ্ছে। অবশ্য আমিও তাদের দিকে বার বার তাকাচ্ছি নইলে বুঝবো কিভাবে। মাথা ব্যাথা করছে খুব। কিন্তু নাপা খেতে ইচ্ছা করছে না। "আই হ্যাভ নেভার বিন সো টায়ার্ড লাইক টুডে"
২-৩৪ এ এম
আমাদের প্লেন নষ্ট হয়ে গিয়েছে। এখন ঠিক করছে। এক আল্লাহ পাক জানেন, সামনে আরও কি ভোগান্তি আছে। "এ জীবন নহে শুধু সুখের লাগিয়ে" ইহাকেই বোধ হয় বলে। কি করবো এখন? ফরিদা তো নিশ্চিন্তে ঘুমাচ্ছে। আমি এতো লোকের সামনে ঘুমাতে পারবো না। গরম লাগছে। সোয়টার খুলে ফেলেছি। বাসার সবাই মনে করছে আমি এখন তেহরানে ফাইভ স্টার হোটেলে নাক ডেকে ঘুমাচ্ছি। আহা, তারা যদি আমার এখনকার অবস্থা জানত।
৪-১৫ এ এম
কায়েদ-এ-াজন ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট হতে ভোর ৪টায় (বাংলাদেশ সময়) ইরান এয়ার এর বিমান আমাদের নিয়ে রওনা হলো। আজ জানালার পাশে বসে অনেক কিছু দেখলাম। রানওয়ে পার হবার সময় একটা খরগোশকে দৌড়ে যেতে দেখেছি। করাচিকে দেখলাম আলো ঝলমল নগরীরুপে। এখন অনেক উপরে উঠে গেছি। কিছু দেখা যাচ্ছে না। প্লেনে উঠলে আমার সবচেয়ে বেশি অসুবিধা হয় কানে। দুই সেকেন্ডে কান বন্ধ হয়ে যায় । ঢোক গিলতে হয় কেবল।
বড় বিলাইয়ের ডায়রী থেকে: অপেক্ষার অবসান
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
১১টি মন্তব্য ১১টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
স্মৃতিপুড়া ঘরে
বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।
দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন
গরমান্ত দুপুরের আলাপ
মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন
রাজীব নূর কোথায়?
আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন
=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=
©কাজী ফাতেমা ছবি
মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।
হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।
ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন