somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

স্বাগতম সূর্যাস্ত

৩০ শে জুন, ২০১৩ রাত ১০:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :






সেই বিনিদ্র রাতগুলোতে আধবোজা চোখে শবের মত পড়ে থাকি বিছানায়। নরম বিছানাটা আমাকে সে বেঞ্চটার কথা মনে করিয়ে দেয়।
একবার ইচ্ছে করে নিজেকে হারাতে বসেছিলাম। বিকেলের আলপনা আঁকা মূহুর্তগুলোকে উপেক্ষা করে, অধীর অপেক্ষার পর দেখা প্রিয় চোখের পাতার কাঁপনকে তাচ্ছিল্য করে, শক্ত করে ধরে রাখা কোন হাতের বাঁধনকে আলগোছে খুলে দিয়ে ইচ্ছে করেই ভুল করেছিলাম।

আত্মনিখোঁজের সে সময়ে এক হব বলে ছুটে গিয়েছিলাম সবুজাভ অরণ্য আর ফেনিল সাগরের কাছে। ওরা আমাকে আলিঙ্গনে বলেছিল ‘শুধুমাত্র আলিঙ্গনে এক হওয়া যায়’।

সূখের মুহুর্তগুলো খুবই ক্ষনস্থায়ী। শীতের রাতে গরম গরম চা ঠান্ডা হতে যেমন সময় লাগে ঠিক তেমন। কিংবা এই মাত্র সামনে দেখা পাখিটার ডানা দিগন্ত রেখায় বিলীন হওয়ার মতই তাৎক্ষণিক। তবুও সবাই অপেক্ষা করে। বছরের পর বছরের অপেক্ষার গল্প অবলীলায় চাপা পড়ে যায় কয়েক মুহুর্ত আয়ু পাওয়া সুখের কাছে।

সটান দাঁড়িয়ে এক পাহাড় আমাকে দেখে হেসেছিল খুব। ও ভেবেছিল পৃথিবীর টান শিথিল করে ওর শিরস্থান খুলে নেওয়া অসম্ভব। ওর অজ্ঞাতে ছিল এর চেয়ে শত সহস্রগুন তীব্র আকর্ষন এখন পরাজিতদের দলে। ওর অজ্ঞতা আমার মধ্যে রাগের বদলে সমবেদনার উদ্রেক ঘটিয়েছিল।

সে পাহাড়ের চুড়ায় কেউ বানিয়েছিল বেঞ্চটা। দুজনের একটা বেঞ্চ। অন্যপাশ খালি রেখে আমি দখল করেছিলাম একপাশটা। জানি সেখানে কেউ এসে বসবে। নিশ্চুপ মৌনতায় বসে বসে অসীম আকাশ দেখবে, তীর্যক চাহনিতে উপকূলের সাথে প্রেমে মত্ত সাগরের ঢেউ দেখে তার ভুল ভাঙবে। সে ভুল ভাঙার অবশেষে না বুঝেই অনেকখানি বুঝে নিবে সে।

দখিনা জানালা খুলে দেখেনি সে। দরজার চৌকাঠ মাড়ানোর সাহস হয়নি তার। তার জন্য প্রেরিত উষ্ণতার গল্প না শুনেই ফিরিয়ে দিয়েছে সে।

অনতিদূরের জল-কূলের প্রেম জলীয়বাষ্প হয়ে উড়ে আসে। উড়ে এসে ভিজিয়ে দেয় বেঞ্চ আর বেঞ্চের একমাত্র আশ্রয়ীকে। তীব্র ঝাপটার মধ্যেও আমি চোখ মেলে থাকি। চোখ মেলে দেখতে থাকি কেমন করে পৃথিবীর সব গানিতিক, জ্যামিতিক তত্ত্ব লুঠিয়ে পড়ছে বেঞ্চের তলায়। সব সূত্র, সব বিধি নির্দ্বিধায় স্বীকার করে চলেছে এ আকাশ অসীম, এ আকাশ বিশাল।

মহৎ কোন কিছুর কাছে, বিশাল কোন কিছুর কাছে ছোট হওয়ার মধ্যে তৃপ্তি আছে। এ কারনেই হয়ত স্রষ্টার প্রতি আনুগত্যে এত প্রশান্তি। সুখের অতিশয়্যে চোখের পাতা বন্ধ হয়ে আসে। যে সৌন্দর্যে চোখ ঝলসে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে, তাকে চোখ বন্ধ করে উপভোগ করতে হয়। কেউ চায়না আনন্দের একটা মুহুর্তও খরচের খাতায় নাম লিখাক।

সহসা আমি বুঝতে পারি কেউ একজন এখানেই আছে। আমি বেলী ফুলের মিষ্টি একটা গন্ধ পাই। কেউ এক একজন চুলে বেলী ফুল গুঁজে দিতে ভালবাসে। আমি শব্দ পাই নূপুরের, কাঁচের চুড়ির। কেউ একজনের হাত ভর্তি থাকে কাঁচের চুড়িতে, পায়ে জড়িয়ে থাকে শৃঙ্খলহীন নূপুর।


চোখ বন্ধ থাক, শব্দরা নিকটবর্তী হয়, সুবাস তীব্র হয়। অনুভব করি কেউ একজন আলতো পায়ে এসে দাড়িয়েছে আমার পিছনটায়। সে আমার মাথায় হাত রাখে। একজন চোখবন্ধ মানুষের মাথায়। তার নরম আংগুল ঝিরঝির বাতাসের মত প্লাবন তুলে আমার চুলে আর আমি কাশফুলের মত দুলতে থাকি। সুহাসিনী প্রকৃতির নীরবতার ইতি টানে

-এত অভিমানী কেন তুমি? তুমি কি জাননা তোমাকে ছাড়া আমার কত কষ্ট হয়?




সুহাসিনী জানেনা যারা প্রচন্ড ভালবাসতে পারে তাদের অভিমান করার ক্ষমতাও বেশি।










I was spending my time in the doldrums
I was caught in the cauldron of hate
I felt persecuted & paralyzed
I thought that everything else would just wait
While u r wasting ur time on your enemies
Engulfed in a favor of spite
Beyond ur tunnel vision reality fades
Like shadows into the night.






***অনেক দিন পর ব্লগে লগ-ইন করলাম। বছর দেড়েক প্রায়। একটা সময় ব্লগিং নেশার মত ছিল। নেশা মানে পড়ার নেশা, লেখা হত কম। নস্টালজিক, রিয়েল ডেমোন, আরিশ ময়ুখ, মাহী ফ্লোরাদের (আরো অনেকের) লেখাগুলো অনেক মিস করি।

**লিরিকটি 'পিংক ফ্লয়েড' এর Lost for Words এর।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে জুন, ২০১৩ রাত ১১:০৫
১৬টি মন্তব্য ১৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০২



ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×