এই দুনিয়া এখন তো আর সেই দুনিয়া নয়’ গানটি শোনেননি, সঙ্গীতপ্রিয় এমন শ্রোতা খুব কমই আছেন। ১৯৮২ সালে মুক্তি পাওয়া ‘দুই পয়সার আলতা’ ছবির গান এটি। গানের গায়িকা ' মিতালী' ।
আশির দশকের শুরুতে বাংলাদেশের শ্রোতাদের সঙ্গে মিতালী মুখার্জীর পরিচয়। কন্ঠের মায়া খুব অল্প সময়েই তাকে এনে দেয় সুপরিচিতি। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান। ১৯৮২ সালে ভারত সরকারের বৃত্তি নিয়ে ক্ল্যাসিক্যাল মিউজিক নিয়ে পড়াশোনার জন্য ভারতের বারোদায় যান। সেখানেই ঘনিষ্ঠতা গড়ে উঠে ভারতের আজকের খ্যাতিমান গজলশিল্পী ভূপিন্দর সিংয়ের সঙ্গে। ১৯৮৩ সালে বিয়ে করেন তারা। এরপর ভারতেই মিতালী স্থায়ী হন।
মিতালী মুখার্জীর জন্ম ও বড় হয়ে ওঠা ময়মনসিংহ শহরে। বাবা অমূল্য কুমার মুখার্জী ছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা।
মিতালী মুখার্জী মাতৃভূমিকে একেবারেই ভুলে থাকেন নি। নিয়মিত তিনি বাংলাদেশে যান। যখনই দেশে আসেন স্টেজ শো, টিভি প্রোগাম বা অডিও রেকর্ডিংয়ে অংশ নেন। তখন সাংবাদিকদের প্রশ্ন থাকে-
আজ চলে গেলেন ভূপিন্দর সিংহ। বয়স হয়েছিল ৮২ বছর। বলিউড সঙ্গীত দুনিয়ার কাছে তিনি গজল সম্রাট নামে খ্যাত। রেখে গেলেন বাংলা, হিন্দি ভাষায় অজস্র গান। বার্ধক্যজনিত একাধিক সমস্যায় ভুগছিলেন বর্ষীয়ান শিল্পী। করোনায় আক্রান্ত হয়েই মৃত্যু হয় শিল্পীর।
মিতালীর নিশ্চয়ই এই দুঃখের সময় বাবার বাড়ির কথা মনে পড়ছে। আমাদের সহপাঠীর দুলাভাই ছিলেন দীপক মুখার্জী , মিতালির বড় ভাই এবং দেশের উচুমানের তবলচী । লাল ভাই দীপকদার ভায়রা একই মুসলিম পরিবারে বিয়ে করেছেন , দারুন কাওয়ালি গাইতেন । শাহনেওয়াজ হলে ১১ নাম্বার রুমে দুই ভায়রার সঙ্গীত পরিবেশন গভীর রাত পর্যন্ত চলত । আমরা বিছানা ছেড়ে দিতাম ওদের জন্য । দীপকদা ৯০ এর দশকে মারা গেছেন । লাল ভাই কানাডায় মারা গেলেন । আমি তখন প্রবাসে । মিতালি ৮২ সালে যাওয়ার আগে চারুকলায় আমাদের কাছ থেকে বিদায় নিয়েছিল । খুব দুঃখ লাগছে শুনে ভুপিন্দর আর নেই । কাল সারা দিন ইউটিউবএ ভুপিন্দর শুনেছি ।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে জুলাই, ২০২২ রাত ১০:২১