somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গল্প- রমন মোহন রমণী

২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২২ বিকাল ৫:৫৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

নেট

শাহ আজিজের গল্প

হাওড়া রেল স্টেশনে বসে কত রকমের মানুষ দেখছি।আমার ক্লান্তি বোধ হচ্ছেনা। ভারতবর্ষের সবজাতির মানুষ কোলকাতায় আছে এবং তাদের একত্রে দেখার একটিমাত্র জায়গা হাওড়া রেলস্টেশন । সারাদিন অভুক্ত, ট্রেন রাত ৯ টায় । এখন বিকেল ৪টা। ফুড স্টল আছে ওইদিকে। একমাত্র সম্বল একটি ব্যাগ আর স্কেচ বুক রাখার চটের থলে সাথে নিয়ে ফুড স্টলে শুধোলাম ‘ভাত খাব’। তিনি আমায় কোনায় একটা বিল্ডিং দেখালেন।
স্টেশনটি বিশাল টিনের ছাউনি ।মেঝেতে বিছানা পেতে হাজারো বুড়ো বুড়ি শুয়ে আছে। হ্যা, এটাই রেস্টুরেন্ট , ২৪ ঘণ্টা চলে। ভাত আর মুরগির মাংস দিয়ে আয়েশ করে খেলাম । বেশ স্বাদের , ভারতে এটাই প্রথম খাওয়া ।


আগের বেঞ্চ দখল হয়ে গেছে ,তারপর আবার নতুন করে বেঞ্চ খুজে তাতে বসলাম। একটা সিগারেট ধরালাম। আমার আশে পাশে বসা লোকগুলি আমায় দেখছে সেটা বুঝতে পারলাম। একজন অতি আগ্রহী না পেরে জানতে চাইল “দাদা কি বাংলাদেশ থেকে?” আমি মাথা নাড়লাম । ‘ না ওই নতুন ধরনের সিগারেট প্যাকেট দেখলুম তো, তাই শুধোলাম ‘। ঢাকা থেকে শিখিয়ে দেওয়া হয়েছে এখানে বিচিত্র ধরনের টাউট বাটপাড় আছে, সাবধান। মাথা উচু করে ছাউনির দিকে তাকিয়ে রইলাম। তাতে করে নতুন কোন প্রশ্ন করার সুযোগ রইল না। তিনজনের বেঞ্চ , ব্যাগ মাথার নিচে দিয়ে শুয়ে পড়লাম ।খাওয়ার পর শরীরে ক্লান্তি নেমেছে। দুচোখ খোলা রাখতে পারছিনা।

হটাৎ ঘুম ভেঙ্গে গেল, মনে হল কেউ পায়ের কাছে কিছু একটা বলছে, চরম বিরক্তিকর ব্যাপার। ‘একটু যদি জায়গা মিলত তবে বসতে পারতাম’ । সুরেলা আর আকর্ষণীয় কণ্ঠ । চোখ খুললাম , দেখি পায়ের কাছে সাদামাটা দেশি শাড়িতে সাজগোজ বিহীন এলো খোঁপার ডাগর চোখের আকর্ষণীয় রমণী আমার মুখে তাকিয়ে। বিব্রত আমি যে পুরো তিনজনের বেঞ্চ দখল করে শুয়ে আছি! আস্তে করে উঠে বসলাম। রমণী তার আচল দিয়ে বেঞ্চির জায়গা ঝেড়ে নিয়ে বসলো । আমার ঘুম ভাঙ্গানোয় তার কোন প্রতিক্রিয়া নেই। আশপাশ মানুষ দিয়ে ভরা। মেজাজ খারাপ হচ্ছে আবার ডাগর চোখের ভ্রমে তা কমে আসছে,হাই ফিভারে বরফ দেওয়ার মত। আমি আর পাশ ফিরে দেখিনি ডাগর রমণীকে অনেকটা ক্রোধে । মুখে দুহাত দিয়ে সামনে ঝুকে চোখ বুজে বসেছিলাম এবার সোজা হয়ে হেলান দিয়ে একটা সিগারেট ধরালাম। বুঝতে পারছিলাম রমণীর উশখুশ ভাব কিন্তু এখানটা স্মোকিং জোন কারন আমার আগে পিছে অনেকেই বিড়ি তাও শালপাতার, টানছে। না হলে তিনি কিছু একটা বলতেন ।


চায়ে’ওয়ালা এলো , মাটির ভাঁড়ে কেতলি থেকে চা দিল, আহা , জীবনে প্রথম মাটির ভাঁড়ে অমৃত খাচ্ছি । খাটি দুধ মনে হয় লবঙ্গ দিয়েছে । ওকে আবারো ডাক পাড়লাম এবং ভাড় এগিয়ে দিতেই তা ভরে দিল , একটু বেশি, ভালবেসে।
চা’টা খুব ভাল লাগছে তাইনা?
রমণীর হটাৎ প্রশ্নে হাতের ভাড় ছলকে উঠল। সামলে নিয়ে তার দিকে তাকিয়ে মাথা নাড়লাম । সিগারেটে তৃপ্তির লম্বা টান ।
‘আপনার পোশাক আশাক আর সিগারেটের প্যাকেট দেখে বোঝাই যাচ্ছে আপনি বাংলাদেশের’!
আমি আবারো মাথা নাড়লাম । তিনি বললেন মাথা নাড়ার ব্যাপারটি উল্টো হবে এদেশে, ডানে বায়ে হচ্ছে ‘হ্যা’, উপর নিচ হচ্ছে ‘না’ । রমণীর মনোযোগ আমার দিকে বোঝাই যাচ্ছে।
খানিক বাদে প্রশ্ন ‘কোথায় যাচ্ছেন?’
এবার মাথা নাড়ানোর দিন শেষ , কণ্ঠস্বরের কাজ শুরু।
বললাম ‘ভুবনেশ্বর’।
তিনি কলকলিয়ে বলে উঠলেন ‘আমিও, সূর্যমন্দিরে?’
‘হ্যা’ । কি আশ্চর্য ! আমি এবার তার মুখে তাকালাম। সিঁদুরহীন সিঁথি , লক্ষ্মী সরস্বতীর ডাগর চোখ , মেকাপহীন মুখ তবুও উজ্জ্বল শ্যামলা শরীরে। দারুন চিকন কোমর , গুরু নিতম্ব, লোভাতুর পুষ্ট বৃহৎ বক্ষ দুটি যেন বাধন ছাঁদন ফেটে বেরিয়ে আসতে চাইছে !! আমায় ঘুম ভাঙ্গানোর অপরাধ ভেসে গেল ফল্গুর স্রোতধারায় ।

আমার নীরবতা বা অনিচ্ছায় আলাপ বাড়ল না।
রাত ৮টা বাজে । খেয়ে নিয়ে ট্রেনে উঠলে ঝামেলা থাকেনা আর। ব্যাগদুটো ওখানেই রেখে তাকে বললাম – আপনি আছেনতো এখানে? হ্যা হ্যা আমি আছি ।
সোজা গিয়ে পরাটা ডিম খেয়ে নিলাম দ্রুত কারন মাইকে আমার ট্রেন নাম্বার আর প্লাটফরম এনাউন্স করছে। বগিতে উঠে বেশ আরাম বোধ হল। কি আশ্চর্য ! মহিলা ঠিক আমার বিপরীতে স্লিপিং বাথে এসে বসলো। ট্রেন ছোট একটা ধাক্কা মেরে চলা শুরু করল। এই বগিতে যাত্রী একদম কম দেখছি কিন্তু ডালহৌসি স্কয়ারের অফিসে এমন ভাব দেখাল যে ট্রেনে জায়গা নেই। ধীর স্থির হয়ে বসতেই তিনি বললেন আমি মৈত্রেয়ী , পশ্চিমবঙ্গের বাঙ্গালী , বাংলায় পড়াশুনা শেষ করেছি। কোথায় থাকেন বা পড়েছেন , কি করেন তা বললেন না । উত্তরে আমি বললাম আমি শামসীর , সবে ফাইন আর্টে গ্র্যাজুয়েট।


ও আপনি মানে মানে তুমি করেই বলি , হ্যা ? আর্টিস্ট? বেশ মজার। ভারতে প্রথম?
হ্যা।
টুকটাক আলাপে ঘণ্টা পার হল । টি টি এসে আমার পাসপোর্ট , টিকিট চেক করে মৈত্রেয়ী দেবীর টিকিট নিয়ে বললেন আপনার বগিতো এটা নয়। মৈত্রেয়ীর গভীর দৃষ্টির সামনে টি টি নার্ভাস কিছুটা , বললেন বগি খালি আছে যখন , যান, আর বাঙ্গালী সাথী পেয়েছেন । মৃদু হাসি মুখে টি টি জানলেন আমি ঢাকার , তিনি কোলকাতার হলেও বাবা বরিশাল হতে এসেছিলেন। খুব আশ্বাস , নিরাপদ মনে হল যে আমাদের দেশি রক্ত এখানে কম নয়।
হাই উঠল । টয়লেট সেরে কাপড় বদলে বাথে শুয়ে পড়লাম ব্যাগটা মাথার নিচে দিয়ে। পাশের বাথে মৈত্রেয়ী দেবী শুয়েছে বলে কিছুটা অস্বস্তিতে ছিলাম ।


ট্রেন ঝাকুনি দিয়ে দাঁড়ানোতে ঘুম ভেঙ্গে এদিক ওদিক তাকালাম। উপরের সিলিঙে আলো জ্বলছে । কারো কোন প্রতিক্রিয়া নেই। নজর গেল দেবীর দিকে , অঘোরে ঘুমাচ্ছেন । তার পিঠের দেড় কাঠা জমিনে ব্লাউজের কাপড় কম পড়েছিল । দর্জির সাথে আমার কোন বিরোধ নেই কারন ওই দেড় কাঠা জমিনে আমার ফসল বোনার কাজ শুরু হয়ে গেছে। ঝিক ঝিক ঝাকুনিতে আবার কখন ঘুমিয়ে গেলাম।
খুব ভোর বেলায় আমার ঘুম ভেঙ্গে গেল জানালা দিয়ে দ্রুত অপসৃয়মান আকাশ দেখে। এই প্রথম ট্রেনে ঘুমিয়ে কোথাও যাচ্ছি এবং নীল আকাশ দেখছি। দেখতে চাইলাম মৈত্রেয়ী দেবীকে। তিনি এবার আমা মুখো হয়ে ঘুমিয়ে। তার বুকের কাপড় সরে গেছে আর ওইখানের মসৃণ গিরিখাতের ভাঁজ বড্ড জাগিয়ে তুলল আমায় ।
সত্যিই সুন্দরী মৈত্রেয়ী ।
কাজ নেই তাই শুয়ে থাকা । মাঝের একটা পাহাড়ী টানেলের মধ্য দিয়ে যেতে যেতে আলোহীন ট্রেনের ভিতরে মৈত্রেয়ী মুখ খুলল ‘কেমন লাগছে?’
‘হ্যা একটু টেনশন হচ্ছে , আলোহীন তো তাই , খুব অন্ধকার’ ।
টানেল ছেড়ে বেরিয়ে এলাম ।
মৈত্রেয়ী বলল ‘সামনেরটা আরো লম্বা , মজা হবে তাইনা’?
বোকার মত মাথা ঝাকালাম ।
মৈত্রেয়ীর গিরিখাতের ভাজ ঢাকা পড়েছে শাড়ীতে।
এবারেরটায় ঢোকার আগেই আলো জ্বলে উঠলো ।
‘নাহ,মিস করলে শামশীর , জানো- আধাঁর আমার প্রিয়’।
ভুবনেশ্বর নামলাম। স্টেশনের বাইরে খুব অগোছালো। বাস কাছেই, এলোপাথাড়ি দাড়িয়ে। আমরা একটা দশাসই রেস্টুরেন্টে ঢুকলাম । পাঞ্জাবী ধাবা বলে এগুলোকে , মৈত্রেয়ী বলল, উড়িষ্যার খাবার একদম বাজে , খেতে পারবেনা । ধাবা নামটা প্রথম শুনলাম । মৈত্রেয়ী আর আমি মুখোমুখি বসে। পরাটা সাথে ভাজি আর আমি ডিম মামলেট খেলাম।
বাসগুলো ব্রিটিশ সময়ের ইঞ্জিনের ওপর স্থানীয়ভাবে কাঠের বডি বানিয়ে চলছে।এবার দুজন পাশাপাশি । দর্জির মত কাঠমিস্ত্রীরও কাঠ কম পড়েছিল বলে সিট ছোট বানিয়েছে। ‘ আরও চেপে বস আমার দিকে’। তীক্ষ্ণ রোদ্দুরে কপাটহীন জানালার পাশে আমরা দুজন মিলে মিশে একাকার হয়ে গেলাম।


কোনারক এসে গেছে শুনে স্কচ হুইস্কির ধ্যান কেটে গেল , ভাবলাম কোনারক কেন সারা দিনমানের পথ হলনা।
কোনারকের যাদুঘরে টোকেন নিয়ে ব্যাগ রেখে সামনেই থাকা সূর্যমন্দিরের সামনে দাঁড়ালাম। কি অদ্ভুত অপরুপ সূর্যমন্দির। বিশাল রথ একখানা । চোখের দেখা দেখে নিচ্ছি,পরে খুটে খুটে দেখব, থাকার ইচ্ছে আছে দুদিন। অষ্টচক্রের আশপাশ দিয়ে মিথুনরত মূর্তি যুগল। মৈত্রেয়ী তার ব্যাগ থেকে ক্যামেরা বের করে আমায় গছিয়ে দিয়ে বলল ছবি তুলবে আমার । চক্রটি একটু উচুতে আর তাই মৈত্রেয়ীকে ঠেলে তুললাম তার নরম নিতম্ব দুহাতে চেপে। বেশ লজ্জা পাচ্ছিলাম তবে আশপাশ দিয়ে ৫০/৬০ জোন লোকাল টুরিস্ট অবশ্য কেউ লক্ষ্য করছেনা আমাদের। শাড়ি কোমরে পেঁচিয়ে বিশেষ ভঙ্গিতে দাঁড়াল যেন ও রথের চাকা ঠেলে নিয়ে যাচ্ছে। তুললাম এক দুই তিন কয়েক দিক থেকে। আমার ক্যামেরা নেই পয়সাও নেই কিন্তু বন্ধুদের ক্যামেরায় হাত পাকিয়েছি বেশ। আমরা পেছনের দিকে এগুলাম। এখানেই মন্দিরের সবচে উচু চুড়া । গোটা মন্দির লালচে বেলে পাথরে খোঁদাই করা। আশ্চর্য হচ্ছিলাম এতক্ষনে মৈত্রেয়ী আমায় একটিবারও বলেনি এসো তোমার ছবি তুলে দিই । অষ্ট চক্রের আশপাশ ঘিরে বিশ পচিশ জন সাদা চামড়ার টুরিস্ট । তাদের ঘিরে উৎসুক স্থানীয় দ্বিগুণ পরিমান লোকজন। একজন হাসি মুখ লম্বা যুবক বলল ‘ওরা ইউরোপীয়’,
‘তো’, মৈত্রেয়ীর বিস্ময়ভরা জবাব ।
‘না ওরা বলছে আপনি কিছু আগে ছবি তুলেছেন নিজের, বলছে মডেল হিসাবে আপনি অতুলনীয়’।
‘তার মানে আমায় দাড়াতে হবে বিনি পয়সায়?’
লোকটি হাত কচলে খ্যাক খ্যাক করতে লাগলো। কথা হচ্ছিল হিন্দিতে।
আবারো নিতম্ব উত্তোলন । মৈত্রেয়ী এবার দারুন পোজ দিচ্ছে। সবার ক্যামেরা ক্লিক ক্লিক করছে। আমি ভিড় ছেড়ে আবারো পিছন দিকে এগুলাম । দেয়ালের গায়ে হাই রিলিফ ওয়ার্ক বেশ আনন্দ দিচ্ছে আমায় । আধা ঘণ্টা হয়ে গেছে । চক্রের দিকে এগুলাম। বিদেশিরা জায়গা বদল করে ছবি তুলছে। আমি এই অঘোষিত আচানক পাওয়া দায়িত্বের কবলে এই মুহূর্তে খুবই বিরক্ত। ভিড়ের পেছনে এসে চক্রের দিকে তাকালাম, কিন্তু কই? মৈত্রেয়ী নেই সেখানে। বিদেশিরা চক্রের আশপাশের পাথরের প্লাকে ভাস্কর্যের ছবি তুলছে। আগা মাথা খুজলাম , নেই নেই মৈত্রেয়ী কোথাও নেই। আমার মনের ভেতরে ভয়ঙ্কর ব্যাপার চলছে , উদ্বেগ আর উত্তেজনা যুগপৎ কাজ করছে। গলা শুকিয়ে কাঠ !


পানি খেয়ে সুস্থ হলাম কিন্তু জলজ্যান্ত একটি মানুষ উধাও হয়ে গেল কেমন করে! কারো দেওয়া চিরকুটের নাম ধরে বাঙ্গালী যুবককে পাওয়া গেল। কাঠের তৈরি ভাঙ্গাচোরা শোয়ার তক্তপোষ আছে তার , আছে বাঙ্গালী খাবারের হোটেলও ।
সন্ধ্যায় যাদুঘরের কাউনটার থেকে জানলাম তার ব্যাগ কেউ নিয়ে গেছে। এরা টুরিস্টদের জন্য বড় বাথরুম করেছে গোসলের জন্য । গোসল সেরে থাকার জায়গায় তক্তপোষে শুয়ে সিগারেট খাচ্ছি আর ভাবছি ঘটে যাওয়া গোটা ঘটনাটি। দাদা উপদেশ দিলেন যাকে চেনেন না তাকে নিয়ে এত টেনশন কেন। পুলিশে বিহিত চাইলে আপনার ঘাড়ে বোঝা বাড়বে।
তাইতো , দাদাই ঠিক বলেছে।
ভাঙ্গা জানালা দিয়ে চাঁদের উজ্জ্বল আলো ঠিকরে পড়ছে মাটির মেঝেতে।
বাইরে বেরিয়ে এগুলাম রথের দিকে। আরও লোকজন আছে ,এরা রেস্টুরেন্টের বাবুর্চি , বয় । ভিতরে গিয়ে চক্রের কাছে দাড়িয়ে রইলাম । আজ পূর্ণিমা বলে চারদিক আলোয় ভাসছে । পিছনের দিকে গেলাম , ভীষণ অন্ধকার ওখানে । কেন জানি শরীরটা কেঁপে উঠল অজানা আতঙ্কে । বুক কাপছে আমার, দৌড় দিলাম গেটের দিকে। ওখানে দাড়ানো লোকেরা আমায় জিজ্ঞেস করল এনি প্রবলেম? না না কিছু নয়, বড্ড অন্ধকার , তাই একটু নার্ভাস হচ্ছিলাম ।
খোলা জানালা দিয়ে আসা পূর্ণিমার আলোয় তক্তপোষে তৈলাক্ত বালিশে ঘুমিয়ে গেলাম।
দীর্ঘ ৩৪টি বছর কেটে গেছে।
জীবন , মন, পরিবেশের বদল হয়েছে। কিন্তু মৈত্রেয়ী দেবী যে এক অপার রহস্য তৈরি করে উধাও হয়ে গেল তার কোন কুলকিনারা আজও হয়নি। না জানি মৈত্রেয়ীর ঠিকানা , না তার সাথে কোন ছবি ।
এখনো রাতে বিছানায় শুলে মনে হয় রেলের বাথে শুয়ে দুলছি ওপাশে মৈত্রেয়ী শুয়ে আছে পিঠের জমিন বের করে বা উদ্দীপনা সৃষ্টিকারী স্তনখাতের খাঁজে সব রহস্য লুকিয়ে রেখে। মৈত্রেয়ী নিশ্চিত ভ্যুলোকের বাহন ওই যে চক্র , তার মধ্যে বিলীন হয়ে গেছে , সূর্য দেবতা ঠাই দিয়েছে তার বাহনে ।
মৈত্রেয়ী মহাকালের পথে ধাবমান ।।
-----------------------------------------------------------------------------------
রচনাঃ জুলাই ২০১৬

কপিরাইটঃ শাহ আজিজ
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:০১
৮টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×