
মানতেই হবে, মানবসভ্যতায় টয়লেট পেপার অনন্য এক সংযোজন। কিন্তু এটি আবিষ্কারে আগে মানুষ প্রকৃতিক ক্রিয়াকর্মের পর কী ব্যবহার করত? পানি বা বরফ তো ছিলই, তালিকায় আছে আরও অনেক কিছু। পশুর লোম, গাছের পাতা, ভুট্টার শাঁস, ঘাস, খড়কুটা, নারকেলের খোসা এমনকি কাঠি বা লাঠিও ব্যবহার করত মানুষ। টয়লেট পেপারের ইতিহাস ঠিক কতটা পুরোনো, তা অবশ্য বিস্তর আলাপের ব্যাপার। ৫৮৯ খ্রিষ্টাব্দে এক চৈনিক মনীষীর লেখায় টয়লেট পেপারের উল্লেখ পাওয়া যায়। ইতিহাসে দেখা যায়, ১৪০০ শতকের দিকে চীনে ব্যাপক হারে টয়লেট পেপার উৎপাদন শুরু হয়। ১৮৫৭ সালে আমেরিকান উদ্ভাবক জোসেফ গ্যাটি প্রথম বাণিজ্যিকভাবে টয়লেট পেপার বাজারজাত করেন। এরপর নানা পথ পেরিয়ে ১৯৩৫ সালে বাজারে আসে মসৃণ ও নরম টয়লেট পেপার। এর আগে টয়লেট পেপারে নানা সমস্যা ছিল। পানি শোষণক্ষমতা ছিল খুবই কম এবং বেশ শক্তও ছিল। চীন দেশে পদার্পণের পর সমাজতান্ত্রিক হওয়ার ধারনা বেশ জেকে বসলো । দোকানে টিস্যু দু রকমের পাওয়া যায় একটি নরম রোল আরেকটি ব্রাউন শক্ত । চীনারা ঐ শক্ত সস্তাটা ব্যাবহার করে । আমিও সমাজতান্ত্রিক হওয়ার তাড়নার তা ব্যাবহার করে গুহ্যদ্বারে তীব্র জ্বালাপোড়া ও রক্তের আভাস পেলাম । শেষে বিয়ার খাওয়া বোতলে পানি দিয়ে ধুয়ে যন্ত্রনা লাঘব করলাম । মাথায় এলো চীনাদের পশ্চাৎদেশ শক্ত বলেই তারা ক্যাপিটালিসট দের মার খেয়েও ঠায় দাড়িয়ে থাকে , পরাজিত হয়না ।
হালে আমরা হয়তো টয়লেট পেপার ছাড়া প্রকৃতিক ক্রিয়াকর্মের কথা ভাবতেই পারি না। আমি শুধু নাক ঝাড়ি টয়লেট পেপার দিয়ে । কিন্তু এখনো বিশ্বজুড়ে ঠিক কী পরিমাণ মানুষ টয়লেট পেপার ব্যবহার করে না—তা কি আন্দাজ করতে পারেন? টয়লেট পেপার হিস্ট্রি ডটকম জানাচ্ছে, বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ৭০-৭৫ শতাংশ মানুষই টয়লেট পেপার ব্যবহার করে না। তবে টয়লেটে ব্যবহার না করলেও প্রচুর মানুষ হাত-মুখ মোছা থেকে খাবারের টেবিল, থালা-বাসন, চশমার কাচ, নাক পরিষ্কার–পরিচ্ছন্নতায় ব্যবহার করে। এর প্রয়োজনীয়তা আছে বটে, তবে এর জন্য যে কী পরিমাণ বৃক্ষনিধনের দরকার হয়, তা কিন্তু ভাবতেও পারবেন না। ছোট্ট একটি তথ্য দিলেই ব্যাপারটা বুঝতে পারবেন। সূত্র বলছে, একজন মানুষ সারা জীবনে যে পরিমাণ টয়লেট পেপার ব্যবহার করে, তা উৎপাদন করতে ৩৮৪টি গাছের দরকার হয়।
আজ ২৬ আগস্ট, টয়লেট পেপার দিবস ।
প্রথম আলো
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে আগস্ট, ২০২৩ সকাল ১১:৩৫

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



