somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ’আমিই ঈশ্বরের বরপুত্র'

২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ সকাল ১১:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

❝’আমিই ঈশ্বরের বরপুত্র’,
নয়া সংসদে আত্মস্তুতির শিখরে মোদি❞

ভারতের গণতন্ত্রে প্রতিনিধিদের নির্বাচিত করে আম জনতা। কিন্তু নরেন্দ্র মোদির ক্ষেত্রে সেটা একটা মাধ্যম মাত্র। কারণ, তাঁকে বাছাই করেছেন স্বয়ং ঈশ্বর। মঙ্গলবার এই ভাষাতেই আত্মতুষ্টির শিখরে উঠলেন প্রধানমন্ত্রী। জানালেন, দেশের ভালোর জন্য যত পবিত্র কাজ আছে, সেই সব কার্যকর করতেই ঈশ্বর তাঁকে বাছাই করেছেন। ঐতিহ্যের পুরনো সংসদ ছেড়ে নতুন ভবনে যাত্রা, পার্লামেন্ট হাউস মুছে গিয়ে ‘সংবিধান সদন’ নামকরণ ছাপিয়ে এদিন চর্চার শিরোনামে থাকল নরেন্দ্র মোদির নিজেকে অমর এবং কালজয়ী করে তোলার মরিয়া চেষ্টা। দিনভর একের পর এক ভাষণ দিয়ে গেলেন প্রধানমন্ত্রী। কখনও পুরনো ভবনের সেন্ট্রাল হল, কখনও নতুন ভবনের লোকসভা, আর শেষবেলায় রাজ্যসভা। সর্বত্রই ভাষণের অভিমুখ একদিকে—আত্মপ্রচার।
পুরনো থেকে নতুন ভবন। মন্ত্রী-এমপিদের নিয়ে পদযাত্রায় দিন শুরু নরেন্দ্র মোদির। আর সেই সঙ্গে সমাপ্তি ৯৬ বছরের ঐতিহাসিক ইমারতের পরিচিতিরও। প্রতি পদক্ষেপে মোদি সরকার প্রমাণ করছে—দিশা দেখাবে হিন্দিভাষা। সংবিধান সদন নামকরণ তারই আর এক ধাপ মাত্র। ভবন বদলের মহা আয়োজন, পদযাত্রার গিমিক এবং দিনভর তাঁর ভাষণ-কর্মসূচিতে ভারতের নয়া সংসদ ভবনের যাত্রাশুরুর ক্ষণ হয়ে রইল শুধুই মেগা নরেন্দ্র মোদি শো! সেই শোয়েরই পরের অঙ্ক? মহিলা সংক্ষণ বিল। ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ তারিখটিকে স্মরণীয় করে রাখতে। সেই প্রেক্ষিতেই লোকসভায় তাঁর অমোঘ উক্তি, ‘এর আগেও বহু সরকার মহিলা সংরক্ষণ বিল পাশ করানোর চেষ্টা করেছে। তাদের কাছে এই আইন পাশ করানোর গরিষ্ঠতা ছিল না। হয়তো ঈশ্বর আমাকেই বাছাই করেছেন। আর শুধু এই একটা নয়, এমন অনেক পবিত্র কাজ করার জন্য।’
এদিন সেন্ট্রাল হলে মোদি যখন ভাষণ দিয়েছেন, প্রতিটি বাক্যের পর থামতে হয়েছে তাঁকে। কারণ, প্রতি বাক্যে বিজেপির এমপি এবং মন্ত্রীরা ডেস্ক চাপড়ে অভিনন্দন জানিয়ে গিয়েছেন। লোকসভা ও রাজ্যসভাতেও এই একই দৃশ্য। তবে এই ডেস্ক চাপড়ানোর শব্দ সবচেয়ে বেশি এবং সবথেকে বেশি সময় ছিল কখন? মোদি যখন পরোক্ষে বার্তা দিলেন যে, তিনিই ঈশ্বরের বরপুত্র। লোকসভার পর রাজ্যসভায় যখন তিনি প্রবেশ করছেন, বিরাট ঝাড়লণ্ঠনের নীচে বসা সরকারপক্ষ থেকে স্লোগান উঠল, ‘ভারত মাতা কী জয়। জয় শ্রীরাম!’ উচ্চকক্ষের উদ্বোধনী ভাষণেও মোদি টেনে আনলেন ‘সাফল্য’ প্রসঙ্গ। বললেন, ‘অমৃতকাল চলছে। এই সময় নতুন সংসদ ভবন শুরু হওয়াটাও অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।’ একে একে এল নারী শক্তির জন্য তাঁর সরকারের দায়বদ্ধতা, বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও যোজনা, মুদ্রা যোজনা, উজ্জ্বলা গ্যাস প্রকল্প, তিন তালাকের অবলুপ্তি, নারী সুরক্ষায় কঠোর আইন প্রণয়ন। ঘোষণা করলেন, ‘সবই তো আমরা করেছি।’ সঙ্গে ভেসে এসেছে ডেস্ক চাপড়ে সরকারপক্ষের অভিনন্দনের ফুলঝুরি। কিন্তু সংখ্যাগরিষ্ঠতার সেই শব্দব্রহ্মকে ধাক্কা দিলেন রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়্গে। বললেন, ‘সকাল থেকে সারাদিন প্রধানমন্ত্রী কত দীর্ঘ সব ভাষণ দিলেন। অনেক কথা বললেন। কিন্তু মণিপুর নিয়ে একটিও কথা নেই কেন?’ সঙ্গে সঙ্গে সরকারপক্ষের তরফে প্রতিবাদ করে প্রবলভাবে আক্রমণ করা হল। চেষ্টা চলল মোদির ডিফেন্স জোরদার করার। তবে দিনের শেষে সব ছাপিয়ে গেল মোদির দু’টি বাক্য। লোকসভায় জানালেন, ‘ভোট তো অনেক দূরে! এখনও সময় আছে।’ অর্থাৎ ভোট এগিয়ে আনার সম্ভাবনায় জল ঢেলে দিলেন তিনি নিজেই। আর রাজ্যসভায় বললেন, ‘গণতন্ত্রে কখন কে ক্ষমতায় আসবে, কখন যে কে ক্ষমতা থেকে চলে যাবে, কেউ জানে না! এটাই গণতন্ত্রের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া! আমরা কিন্তু যতটা পেরেছি, সাধারণ মানুষের কল্যাণেই কাজ করেছি।’ আত্মস্তুতির উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত? নাকি সুরটাই মিলছে না?


বর্তমান পত্রিকা

সর্বশেষ এডিট : ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ সকাল ১১:৩৭
১৫টি মন্তব্য ১৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কেউ কথা রাখেনি। না, রাখার ক্ষমতা নেই ?

লিখেছেন স্প্যানকড, ০১ লা ডিসেম্বর, ২০২৩ ভোর ৪:২৪

ছবি নেট ।

ন হন্যতে বইটি মৈত্রীয় দেবীর যা উনি লিখেছিলেন ফরাসি লেখক মির্চা এলিয়াদের লা নুই বেংগলীর জবাব স্বরুপ।মৈত্রীয় দেবীর দাবি তিনি মির্চার প্রেমে পড়েন নি তিনি প্রেমে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আসলেই কি সরকার এবার পারবে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০১ লা ডিসেম্বর, ২০২৩ ভোর ৬:৫৫




সরকারী দলের কোন প্রার্থী হারতে চাইবে না। অত:পর যারা হারবে তাদের সবাই যদি বলে নির্বাচন সুষ্ঠ হয় নাই। যারা নির্বাচনে আসে নাই তারা তো বলবেই নির্বাচন সুষ্ঠ হয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজ সেই মহান এক এগার দিবস।

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ০১ লা ডিসেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১২:৫৫

এক মাস এগার বছর আগে আমি এই মহান ব্লগে মহান আইডি "বাকপ্রবাস" নাম করনে লেখালেখির সূত্রপাত করি। প্রবাসে থাকি তায় নামটা দিয়েছিলাম বাকপ্রবাস। প্রথমে আমি সোনার বাংলা ব্লগে লিখতাম,... ...বাকিটুকু পড়ুন

পুরুষ আমি মাংস খুঁজি

লিখেছেন পাজী-পোলা, ০১ লা ডিসেম্বর, ২০২৩ দুপুর ২:৩১

দীর্ঘ নিঃশ্বাসের হিমেল হাওয়ায় কেঁপে ওঠে হৃদয়
শিশিরের আদ্রে ভিজে যায় চোখ
ঝড়া পাতায় খসখসে দুঃখ।
একাকীত্বের সৃতির চাঁদরে নিজেকে ঢাকি, মনেপড়ে
মনেপড়ে উষ্ণতার জন্য তোমার বুক খুঁজছিলাম
তুমি বলেছিলে 'পুরুষ আমি মাংস খুঁজি।'
সেই থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি আছে শুধু বিএনপি নেতা-কর্মীদের মা-বোন আর স্ত্রীদের ধর্ষণ করা। এ যেন ৭১রে রাজাকারদের কার্বন কপি।

লিখেছেন তানভির জুমার, ০১ লা ডিসেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৩:৩৩



এই মেয়েটার নাম নুরী। বাবা বিএনপি করে। বাবাকে বাড়ীতে ধরতে এসে না পেয়ে মা কে ধরে নিয়ে গেছে। মেয়েটার দাদী ওর কান্না থামাতে পারছে না। এটাই বাংলাদেশ।

১)... ...বাকিটুকু পড়ুন

×