somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা

০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৪ রাত ৮:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দেশের সংখ্যালঘুদের সমস্যা নিয়ে কীভাবে অবাধ, সত্য তথ্য সংগ্রহ করা যায়, সে বিষয়ে ধর্মীয় নেতাদের পরামর্শ চেয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, প্রকৃত খবরটা জানতে হবে। সেই প্রক্রিয়াটা প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। এত বড় দেশে যেকোনো ঘটনা ঘটতে পারে, কিন্তু প্রকৃত তথ্য জানতে হবে, যাতে তাৎক্ষণিক সমাধান করা যায়। যেদিক থেকেই হোক দোষী দোষীই। তাঁকে বিচারের আওতায় আনা সরকারের দায়িত্ব।

আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এ কথা বলেন। বিকেল সাড়ে চারটার দিকে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এ বৈঠক শুরু হয়।

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা, কবি ও চিন্তক ফরহাদ মজহার, হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব সাজেদুর রহমান, হেফাজতের কেন্দ্রীয় নেতা মুহিউদ্দিন রাব্বানী, জুনায়েদ আল হাবিব ও মুনির হোসাইন কাসেমী, বাংলাদেশ কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের (বেফাক) মহাসচিব মাহফুজুল হক, ইসলামি বক্তা ও আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা শায়খ আহমদুল্লাহ, বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব আবদুল মালেকসহ কয়েকজন আলেম বৈঠকে অংশ নিয়েছেন।





প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আজকের আলোচনা খোলাখুলি..., আমরা সবাই আলোচনা করব। আমাদের লক্ষ্যে কোনো গোলমাল নেই। তথ্যপ্রবাহ কীভাবে পাব, দোষীকে কীভাবে ধরব। যাতে সবাই সঠিক তথ্যটা পেয়ে যায়। এমন বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলতে চাই। যার নাম দিয়েছি নতুন বাংলাদেশ। এটা আমাদের করতে হবে।’

ড. ইউনূস বলেন, ‘...মনে অনেকগুলো প্রশ্ন জেগেছে, সেই প্রশ্নের জবাব খুঁজে পাওয়ার জন্য আপনাদের সঙ্গে বসা।’ তিনি বলেন, ‘ শুনলাম, এখনো সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা হচ্ছে। তাই আমি সবাইকে নিয়ে বসলাম...এটা থেকে কীভাবে উদ্ধার করা যায়।’

সরকার গঠনের আগে বিমানবন্দরে দেওয়া বক্তব্যের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে ড. ইউনূস বলেন, ‘তখন আমি বলেছিলাম, আমরা একটা পরিবার। আমাদের নানা মত, নানা ধর্ম থাকবে, নানা রীতিনীতি থাকবে, কিন্তু আমরা সবাই একই পরিবারের সদস্য। এটাতে জোর দিয়েছিলাম। আমাদের শত পার্থক্য থাকা সত্ত্বেও আমরা পরস্পরের শত্রু নই। আমাদের জাতীয়তা, পরিচয়ের প্রশ্নে এক জায়গায় চলে আসি। আমরা বাংলাদেশি, এক পরিবারের সদস্য।’

ড. ইউনূস বলেন, ‘শপথ গ্রহণের পরে শুনতে আরম্ভ করলাম, সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন হচ্ছে। তখন মনটা খারাপ হয়ে গেল। এর পরপরই আমি ঢাকেশ্বরী মন্দিরে গেলাম। সেখানেও বললাম, আমরা একই পরিবারের সদস্য। সব দাবিদাওয়া বাদ দিলেও একটা দাবি পরিষ্কার, আমাদের সকলের সমান অধিকার, বলার অধিকার, ধর্মের অধিকার, কাজকর্মের অধিকার। সেটা এসেছে সংবিধান থেকে। নাগরিক হিসেবে প্রাপ্য, রাষ্ট্রের দায়িত্ব সেটা নিশ্চিত করা।’

বিদেশি কিছু প্রচারমাধ্যমে বলা হচ্ছে বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক হামলা হচ্ছে—এ প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এখন আবার নতুন কথা, হামলা হচ্ছে, অত্যাচার শুরু হচ্ছে।...আমি খোঁজ নিচ্ছি, কী হচ্ছে? সব দিকে দেখলাম, এটা (হামলা-অত্যাচার) হচ্ছে না।’ তিনি বলেন, ‘...ভেতরে গিয়ে দেখতে হবে। সত্যটা কোথায়?’

সঠিক ও প্রকৃত তথ্য কীভাবে পাওয়া যাবে, তার ওপর জোর দিয়ে ড. ইউনূস বলেন, ‘সঠিক তথ্য কীভাবে পাব, সেটা আমাদের জানা৷ প্রকৃত তথ্য, অনেক সময় সরকারি তথ্যের ওপর ভরসা করে লাভ নেই। কর্তা যা চায়, সেভাবে বলে। আসলটা মন খুলে বলতে চায় না। আমরা আসল খবরটা জানতে চাই। সেই প্রক্রিয়াটা প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। এত বড় দেশে যেকোনো ঘটনা ঘটতে পারে, কিন্তু প্রকৃত তথ্য জানতে চাই। তাৎক্ষণিক খবর পেলে যাতে সমাধান করা যায়। যেদিক থেকেই দোষী দোষীই। তাকে বিচারের আওতায় আনা সরকারের দায়িত্ব।’

কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা যেন না ঘটে, প্রথমে সেই পরিবেশ সৃষ্টির ওপর জোর দেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, প্রথম কথাটা হলো না হওয়ার পরিবেশ সৃষ্টি করা। আর হয়ে গেলে তাৎক্ষণিক প্রতিকারের ব্যবস্থা করা।

সংখ্যালঘুদের সমস্যা নিয়ে কীভাবে অবাধ, সত্য তথ্য সংগ্রহ করা যায়, সে বিষয়ে ধর্মীয় নেতাদের পরামর্শ চান প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, তথ্য সংগ্রহকারীর নিরাপত্তা এবং তথ্যদানকারীও যাতে বিব্রত না হন, তা–ও নিশ্চিত করতে হবে।

এর আগে গত মঙ্গলবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা। এরপর গতকাল বুধবার দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। বৈঠকে দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, অস্তিত্ব ও মর্যাদার প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলো ঐক্যবদ্ধ থাকার ঘোষণা দিয়েছে।

সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৪ রাত ৮:১৪
৬টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুহূর্ত কথাঃ সময়

লিখেছেন ফাহমিদা বারী, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৩৭



সামুতে সবসময় দেখেছি, কেমন জানি ভালো ব্লগাররা ধীরে ধীরে হারিয়ে যায়! যারা নিয়মিত লেখে, তাদের মধ্যে কেউ কেউ প্রচণ্ড নেগেটিভ স্বভাবের মানুষ। অন্যকে ক্রমাগত খোঁচাচ্ছে, গারবেজ গারবেজ বলে মুখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিশ্চিত থাকেন জামায়েত ইসলাম এবার সরকার গঠন করবে

লিখেছেন সূচরিতা সেন, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৪২


আমাদের বুঝ হওয়ার পর থেকেই শুনে এসেছি জামায়েত ইসলাম,রাজাকার আলবদর ছিল,এবং সেই সূত্র ধরে বিগত সরকারদের আমলে
জামায়েত ইসলামের উপরে নানান ধরনের বিচার কার্য এমন কি জামায়েতের অনেক নেতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×