somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

উইনিপেগে নববর্ষ

০১ লা মে, ২০১৬ রাত ১২:৫২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



উইনিপেগে আজ পহেলা বৈশাখ। স্কুল কলেজে সরকারি ছুটি। সিটি মেয়র ব্রায়ান বাওম্যান এসেছিলেন বাঙালিদের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে। তাপমাত্রা এখনও বাংলাদেশের বৈশাখের পর্যায়ে পৌছেনি। শীতের মধ্যে পান্তাভাত ভালো লাগেনা। বাঙালি বউরা গরম টরম করে বহু কষ্টে পান্তা ভাতে বাংলাদেশি স্বাদ ধরে রেখেছেন। মরিচ ভর্তা দিয়ে সেই ভাত খেতে গিয়ে ব্রায়ানের মুখ চোখ লাল হয়ে, যাচ্ছে তাই অবস্থা। তারপরও তিনি দুইবার ভাত চেয়ে নিয়েছেন।

টরন্টো থেকে ইলিশ মাছ আনার কথা হয়েছিলো। দেশে ইলিশ মাছের বিতর্ক শুরু হওয়ায় আয়জকরা সেটি বাদ দিয়েছেন। দু’য়েক জন বলেছেন, ইলিশ মাছ বর্ষাকালের মাছ। ইলশে গুড়ি বৃষ্টিতে খিচুড়িতেই জমে ভালো। অন্যরা তা নিয়ে উচ্চ বাচ্চা করেননি। ইলিশ না থাকুক স্মোক হিলসা রান্না হয়েছে। ইলিশ না থাকলে স্মোক হিলসা কি করে হয় আমার মত অনেকেই বোঝেনি। তবে উইনিপেগে বাঙালিরা কৈশরে গালিভার্স ট্রাভেলস পড়েছিলেন। ছোট খাটো বিষয় নিয়ে বিবাদে যেতে চাননা।
রেড রিভারের পাড়ে বৈশাখি মেলা বসেছিলো, নাগরদোলা, পুতুল নাচ, দেশে যেসব থাকে সবতো ছিলোই, রেড রিভারে নৌবিহারেরও আয়োজন করা হয়েছিলো। এস এম সুলতানের নৌকার আইডিয়াটা এখানে কী চমতকারই না কাজে লেগেছে।
বাঙালিদের দুই একজনের নৌকা এলার্জি আছে। তাদের জন্যে ধানের শীষও রাখা হয়েছিলো। নৌ যাত্রীদের অভিনন্দন জানানো হয়েছে ধানের শীষ দিয়ে।
সব গুলো গাছ ফুলে ছেয়ে গেছে। মালিদের কাছে খবর পেয়েছি, গাছগুলো হিসাব করে এমন ভাবে লাগানো হয়, পয়লা বৈশাখে গাছে ফুলে ছেয়ে যাবেই।
__________________________________________________

উপরের কথা গুলি সর্বৈব মিথ্যা (এক অর্থে আমাদের কল্পনা, স্বপ্নেই যদি খাই তো পোলাও কোর্মা খাবোনা কেন?)
___________________________________________________

আসল কথা হচ্ছে এখানে বর্ষবরণ আজ হচ্ছেনা। পিঠা উৎসবে শুনেছিলাম, বর্ষবরণের অনুষ্ঠান হবে মে মাসের ১০ তারিখে। আজ শুনলাম অনুষ্ঠান হবে দু’টি তার একটি আগামী রবিবারে। এতদিন বাংলাদেশিদের মধ্যে মত ভিন্নতা থাকলেও ভাগাভাগি ছিলোনা, এই দু’টি অনুষ্ঠান বাঙালি ঐক্যে চিড় ধরতে পারে বলে অনেকে আশঙ্কা করছেন। অনুষ্ঠানে মেয়রের আসার সম্ভাবনা আছে কীনা জানিনা। অনেকে বলেন শুধুমাত্র একতা আর বন্ধুত্ব সৌহার্দ্য বাড়ানোর চেষ্টাতেই নেপাল, ভূটানের মত ছোট কমিউনিটির লোকজনও এখানে যতখানি কল্কে পাচ্ছে বাঙালিরা ততটা পাচ্ছেনা।
অনেক সকালে ঘুম ভেঙেছিল আজ। ভেবেছিলাম হাটতে যাবো। বছরের প্রথম সূর্যোদয় দেখতে। মেঘে ঢাকা আকাশ দেখে মন খারাপ হয়ে গেলো। সাতটার দিকে শ্রেয়া বলল, শুভ নববর্ষ বাবা। আমাদের নববর্ষ নিয়ে মাতামাতি ওটুকুই। সারা বলল, বাবা ইন্টারনেটে জারাপ্পিদের দেখে মন খারাপ হয়ে যাচ্ছে। গতবার কত মজা হয়েছিলো। Sarah বলল, Tropa আপুতো কাল বলল, ফেস বুকের দিকে তাকাবা না মন খারাপ হবে। ত্রোপার কথা চিন্তা করে মন আরেকটু খারাপ হলো, বেচারি তো জাপানে একা।

ক্যারিয়ার কোচিঙে গিয়ে সবাইকে বললাম, আজ বাংলা নব্বর্ষ তোমাদের সবাইকে শুভেচ্ছা। অভাবনীয় ঘটনা ঘটলো। নানান দেশের বাইশ তেইশ জন মানুষ এক সঙ্গে চেচিয়ে উঠলো হ্যেপি নিউ ইয়ার বলে। তাদের কল কাকলি আমাদের কানাডিয়ান কেরিয়ার কোচকেও স্পর্ষ করে গেলো। সে বলল, তুমি সামনে এসে কিছু বল।



চাইনিজ একটি মেয়ে চকোলেট নিয়ে এলো, আরেক চাইনিজ মহিলা (তার মেয়ে ম্যানিটোবা ইউনিভার্সিটিতে পড়ে) বলল, কাল আমি তোমাদের সবার জন্যে কাপ কেইক বানিয়ে নিয়ে আসবো, সাইদুলের হ্যাপি নিউ ইয়ার।
ইথিও পিয়ার ফিজুতসু লাঞ্চ অফার করলো, রাশিয়ার ভিকটর আর নাইজেরিয়ার ইভোন অভিনন্দন জানালো টেবিলে এসে।
বাকী সবার হাত তালি শুনতে শুনতে ক্লাশ থেকে বেরিয়ে দেখি আস্তে আস্তে মেঘ সরে যাচ্ছে। বিকেলে শ্রেয়া বলল, বাবা, চলো হেঁটে আসি।
দু’দিন মাত্র হলো তুষার পাত বন্ধ হয়েছে। এর মধ্যেও দেখলাম গাছে ফুলের কুঁড়ি চলে এসেছে। গাছের পাতা সবুজ হয়ে উঠেছে। নতুন বছর নিশ্চয়ই ভালো হবে।

দ্রষ্টব্যঃ

১৫ প্রথম আলো অনলাইনে আজ এসেছে
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা মে, ২০১৬ রাত ১:১২
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করা সকলের দায়িত্ব।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৩৮



এগুলো আমার একান্ত মতামত। এই ব্লগ কাউকে ছোট করার জন্য লেখি নাই। শুধু আমার মনে জমে থাকা দুঃখ প্রকাশ করলাম। এতে আপনারা কষ্ট পেয়ে থাকলে আমি দায়ী না। এখনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফেতনার সময় জামায়াত বদ্ধ ইসলামী আন্দোলন ফরজ নয়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:৫৮



সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৩। তোমরা একত্রে আল্লাহর রজ্জু দৃঢ়ভাবে ধর! আর বিচ্ছিন্ন হবে না। তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ স্মরণ কর।যখন তোমরা শত্রু ছিলে তখন তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

=নীল আকাশের প্রান্ত ছুঁয়ে-৭ (আকাশ ভালোবেসে)=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:১৯

০১।



=আকাশের মন খারাপ আজ, অথচ ফুলেরা হাসে=
আকাশের মন খারাপ, মেঘ কাজল চোখ তার,
কেঁদে দিলেই লেপ্টে যাবে চোখের কাজল,
আকাশের বুকে বিষাদের ছাউনি,
ধ্বস নামলেই ডুবে যাবে মাটি!
================================================
অনেক দিন পর আকাশের ছবি নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫২


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।

পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।

জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×