somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

শহিদুল ইসলাম মৃধা
এশীয়ান এস্ট্রলজার্স কংগ্রেস এবং বাংলাদেশ ন্যাশনাল এস্ট্রলজার্স ফেডারেশনের পক্ষে তৎকালীন (১মার্চ ১৯৯২) জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয়নেতা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক স্বাক্ষরিত ও প্রদত্ত “জ্যোতিষরত্ন” উপাধির সনদপত্র প্রাপ্ত ৪৫ বছরে অভিজ্ঞ।

তকদীর প্রসঙ্গে হাদীসে কুদসী।

২৭ শে মার্চ, ২০১৭ দুপুর ১২:২৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ইসলাম ধর্মে তকদীরে বিশ্বাস স্থাপন করা ঈমানের অঙ্গ। তকদীরের অর্থ এইযে, ভবিষ্যতে প্রত্যেক সৃষ্টির জীবনে কি ঘটিবে অনাদিকাল হইতে আল্লাহ্ তা’আলা তাহা সুরক্ষিত ফলকে (লাওহে মাহফুজ) লিপিবদ্ধ করিয়া রাখিয়াছেন। মানুষকে কাজ করার ইচ্ছা, আগ্রহ ও ক্ষমতা আল্লাহ্ দান করিয়াছেন। কখন মানুষ কি কাজ করিবে তাহাও আল্লাহ্’র জ্ঞানে রহিয়াছে। ইহা আল্লাহ্’র একটি বিধান। কাজ করার ইচ্ছাশক্তি আল্লাহ্ প্রদত্ত হইলেও আল্লাহ্ মানুষকে ভাল-মন্দের জ্ঞান দান করিয়াছেন ও যুগে যুগে নবী-রাসূল প্রেরণ করিয়া সতর্ক করিয়াছেন। সুতরাং মানুষের ইচ্ছাশক্তি প্রয়োগের কোন ক্ষমতা নাই ইহা বলা চলেনা; বরং ইহা বলা যায় যে, মানুষ আল্লাহ্’র অনুমোদন ছাড়া যাহা ইচ্ছা করিতে পারেনা। মানুষের ইচ্ছাশক্তি আছে, কিন্তু উহা আল্লাহ্’র নিয়ন্ত্রণাধীন। মানুষ যেমন সীমাবদ্ধ ক্ষমতা, সীমাবদ্ধ জ্ঞান এবং সীমাবদ্ধ গুণাবলীর অধিকারী, তেমনি তাহার ইচ্ছাশক্তি প্রয়োগের ক্ষমতাও সীমাবদ্ধ।

তকদীরের দুইটি অংশ। একটি হইল কদর অর্থাৎ আল্লাহ্’র অমোঘ বিধান অনুসারে যে পরিণাম অবশ্যম্ভাবী। অপরটি হইল কাযা- ঐ বিধান অনুযায়ী যাহা অবশ্যম্ভাবী, তাহা বাস্তবে ঘটা। কিন্তু ইহার উভয়টিই আল্লাহ্ তা’আলার নিয়ন্ত্রণাধীন।

তকদীর ও ইচ্ছার স্বাধীনতা সম্বন্ধে মুসলিম চিন্তানায়কগণ দুই দলে বিভক্ত। একদল মনে করেন, মানুষ ভাগ্যের হাতে একটি পুতুল বিশেষ, তাহার স্বাধীন ইচ্ছা বলিতে কিছুই নাই। এই দলকে জাবরিয়া বলাহয়। অপরদল মনে করেন, মানুষ ইচ্ছার বলে নিজের পছন্দ অনুযায়ী স্বীয় ভাগ্য গঠন করিতে পারে। এই দলকে কাদরিয়া বলা হয়। প্রকৃতপক্ষে এই দুইটি অভিমতই চরম।

আসল কথা এই যে, মানুষ ভাগ্যের হাতে পুতুলও নয়, আর ইচ্ছানুযায়ী যেমন খুশি ভাগ্য সৃষ্টির ক্ষমতায় ক্ষমতাবানও নয়। তকদীর হইতেছে আল্লাহ্’র নির্ধারিত কতকগুলো প্রাকৃতিক আইন- যাহা বিশ্ব সৃষ্টির পূর্বেই আল্লাহ্ তা’আলা নির্ধারণ করিয়াছেন। আর সেই আইন অনুযায়ী প্রত্যেককেই স্বীয় ভাগ্য গড়িয়া তোলার সীমাবদ্ধ ক্ষমতাও প্রদান করিয়াছেন।…………

নিশ্চয়ই আল্লাহ্ সর্বপ্রথম যাহা সৃষ্টি করিয়াছেন উহা কলম। তৎপর আল্লাহ্ বলিলেন “লিখ”, কলম বলিল, “হে আমার প্রভু, কি লিখিব? আল্লাহ্ বলিলেন, “তকদীর লিখ, যাহা ছিল এবং অনন্তকাল পর্যন্ত যাহা ঘটিতে থাকিবে।” আবূ দাউদ তায়ালিসী উবাদাহ বিন সামিত (রাঃ)-এর সূত্রে এই হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন।……………

নিশ্চয়ই আল্লাহ্ আদমকে সৃষ্টি করিলেন, তারপর তাহার পিঠ হইতে সন্তানদিগকে বাহির করিলেন এবং বলিলেন- “এইগুলি বেহেশতের জন্য-আর আমি কারও পরওয়া করি না, আর এইগুলি জাহান্নামের জন্য, আমি কোন কিছুর পরওয়া করি না। তখন জিজ্ঞাসা করা হইল, “হে আল্লাহ্’র রাসূল, আমরা কোন্ আশায় আমল করিব? “তিনি উত্তর করিলেন, “নির্ধারিত ভাগ্যস্থলে পৌঁছিবার আশায়।” জিয়া মাকদিসী ইহা আবদুর রহমান ইবনে কাতাদা আসলামী (রাঃ)-এর সূত্রে বর্ণনা করিয়াছেন।

টীকা- তকদীরে দৃঢ় বিশ্বাস রাখার বিশেষ উপকারিতা আছে। কেহই জানেনা তাহার ভাগ্যে কি আছে। কিন্তু প্রত্যেক মু’মিনই মহান আল্লাহ্’র করুণায় বিশ্বাসী এবং এই বিশ্বাসের প্রেরণায় তাহার লিপিবদ্ধ সৌভাগ্যে পৌঁছিবার আশায় আপ্রাণ তদবীর করে। তাহার অক্লান্ত চেষ্টা ও শ্রমের ফলে হয়ত বা আল্লাহ্ তা’আলা তাহার প্রতি সন্তুষ্ট হইয়াযান এবং প্রাকৃতিক আইন অনুযায়ীই তাহাকে সৌভাগ্যের অধিকারী করিয়া দেন। বস্তুত তদবীরই তাকদীরে পৌঁছিবার সোপান।

-হাদীসে কুদসী। পৃষ্ঠা-৪৪, ৪৫, ৪৬ ও ৪৯। সংকলনঃ আল্লামা মুহাম্মদ মাদানী। অনুবাদঃ মোমতাজ উদ্দীন আহমদ। ইসলামিক ফাউণ্ডেশন বাংলাদেশ।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে মার্চ, ২০১৭ দুপুর ১২:২৮
৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৮




আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না। আমাদের দেশে মানুষ জন্ম নেয়ার সাথেই একটি গাছ লাগানো উচিৎ । আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানবতার কাজে বিশ্বাসে বড় ধাক্কা মিল্টন সমাদ্দার

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:১৭


মানুষ মানুষের জন্যে, যুগে যুগে মানুষ মাজুর হয়েছে, মানুষই পাশে দাঁড়িয়েছে। অনেকে কাজের ব্যস্ততায় এবং নিজের সময়ের সীমাবদ্ধতায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে না। তখন তারা সাহায্যের হাত বাড়ান আর্থিক ভাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস দিতে না পেরে রাস্তায় গড়াগড়ি যুবকের

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৫৫

আমাদের দেশে সরকারি চাকরি কে বেশ সম্মান দেওয়া হয়। আমি যদি কোটি টাকার মালিক হলেও সুন্দরী মেয়ের বাপ আমাকে জামাই হিসেবে মেনে নিবে না। কিন্তু সেই বাপ আবার ২০... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×