somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মামুনুল, রেজাউল ইসলাম বোঝে কত দূর?

১৫ ই জানুয়ারি, ২০২১ রাত ৮:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মূর্তি ও ভাস্কর্য ইস্যু নিয়া তুমুল শোরগোল চলছে দেশে! হেফাজতি, চরমোনাই সহ প্রায় সর্বস্তরের মোল্লা গোষ্ঠীদের ভাস্কর্যের বিরুদ্ধে অত্যান্ত সুদৃঢ় অবস্থানে দেখা যাচ্ছে।
তারা বিভিন্ন আয়োজনে মঞ্চে উঠে সমগ্র দেহ কাপাইয়া, ঘাড়ের রগ ফুলাইয়া, গলা ফাটাইয়া বক্তিতা দিচ্ছেন যে ভাস্কর্যের বিরুদ্ধে, প্রয়োজনে শহীদ হয়ে যাবেন তারপরেও তারা ইসলাম বিরোধী ভাস্কর্য মেনে নিবেন না!!
অথচ এদের নিজেদেরই আছে অসংখ্য ভাস্কর্য! এরা স্বেচ্ছায় ভাস্কর্য বানায়, ভাস্কর্যের উপরে ঘুমায়, ভাস্কর্যের উপরেই বসে ভাস্কর্য বিরোধী বক্তিতা দেয় এমনকি এরা যে মসজিদে যে নামাজ পরে সেখানেও থাকে ভাস্কর্য! অর্থৎ ভাস্কর্যের সর্বোচ্চ সুবিধা নেয়!
এছাড়াও এরা বেশ স্বাভাবিক ভাবেই সুদের সুবিধা নিয়ে তাদের বিশ্বাস অনুযায়ী আপন মায়ের গোস্ত খায় এবং স্বতঃস্ফূর্তভাবে ইসলামের সর্বোচ্চ অপরাধ শিরক করে আবার অন্যদেরকে ইসলামের ছবক দেয়!

আপনাদের যদি মনে হয় আমি পাগলের প্রলাপ বকছি বা বাড়িয়ে বলছি তাহলে আমার নিচের পয়েন্ট গুলো দেখুন।

১. স্টুডিওতে তোলা অথবা প্রিন্ট করা প্রতিটা ছবি বা ফটোই মূলত খুবই উন্নতমানের মূর্তি বা ভাস্কর্য! যেহেতু সাইজ যত ছোটই হোক না কেন প্রতিটা ছবিরই অন্যান্য ভাস্কর্য বা মূর্তির মত বস্তগত কাঠামো, দৈর্ঘ-প্রস্থ ও থিকনেস আছে ফলে এগুলো মূর্তি ছাড়া আর কিছু নয়। পার্থক্য শুধু অন্যান্য মূর্তি বা ভাস্কর্য নির্মাণ হয়, ইট-কাঠ-পাথর-বালি-সিমেন্ট-মাটি বা অন্যান্য ধাতু দিয়ে আর ছবি বা ফটো তৈরি হয় কালি ও কাগজ দিয়ে। (সেই হিসাবে পৃথিবীর প্রতিটি মানুষেরই একাধিক মূর্তি বা ভাস্কর্য আছে)! এবং ভোটার আইডি কার্ডে বা পাসপোর্টে থাকা ছবিগুলোও একপ্রকার মূর্তি।

২. মানুষ মূর্তি তৈরি করে প্রাণ দিতে পারে না এই যুক্তিতে যেকোনো প্রাণীর মূর্তি হারাম! আমরা জানি গাছেরও প্রাণ আছে, গাছ বংশবিস্তার করে, ছোট থেকে বড় হয় এবং এক পর্যায়ে মারা যায়, অর্থৎ প্রাণের সকল বৈশিষ্ঠই গাছের আছে! আমরা যেহেতু চাইলেও মৃতগাছকে প্রাণ দিতে পারি না, সেক্ষেত্রে ইসলামী নীতি অনুযায়ী গাছের বা লতাপাতার ভাস্কর্য নির্মাণও অবশ্যই হারাম হবে! আমরা দেখি হুজুরেরা বিভিন্ন স্থানে যে চেয়ার বা সিংহাসনে বসে যে বয়ান করেন তার বেশিরভাগ চেয়ারের পিছনে লতাপাতার কারুকার্য থাকে যেগুলা কাঠের তৈরি লতাপাতা গাছের ভাস্কর্য! একই ভাবে বাসার খাটে, টেবিলে, কার্পেটে এমনকি বেশিরভাগ মসজিদের টাইলসে, দেয়ালে, সিংহাসনে, ভিন্ন ধরণের লতাপাতার ভাস্কর্য বা মূর্তির কারুকার্য দেখা যায় যেগুলা কোনও ভাবেই হালাল বলা যায় না।

৩. ইসলামে সুদ খাওয়া বা তার সুবিধা নেয়া কঠোরভাবেই নিষিদ্ধ! অথচ আমাদের রাষ্ট্র-ই চলে সুদভিত্তিক অর্থনৈতিক কাঠামোর উপর! অসংখ্য উদারহণ দেয়া যায়, যেমন যেসব সুদভিত্তিক ব্যাংক আছে যাদের আয়ের প্রধান উৎসই সুদ! তাদের সেই আয় থেকে সরকার ট্যাক্স নেয়! আবার বিশ্ব ব্যাংক, এডিবি ব্যাংক ও অন্যান্য উন্নত রাষ্ট্র থেকে রাষ্ট্রীয়ভাবে সুদের বিনিময়ে ঋণ করে থাকে এমনকি আমাদের রাষ্ট্রীয় ব্যাংকগুলোরও ব্যাবসায়ী পলিসি সুদভিত্তিক! এযাবতীয় সুদভিত্তিক অর্থনৈতিক ব্যাবস্থা দ্বারা আমরা যে রাষ্ট্রীয় সার্ভিস পেয়ে থাকি বা বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণ হয় যেমন "পদ্মা সেতু" তার বহুমাত্রিক সুবিধা গ্রহণ করে থাকি এগুলা কোন যুক্তিতে সুদ খাওয়া বা হারাম নয়?!

৪. শিরক হচ্ছে ইসলামে সর্বোচ্চ পর্যায়ের পাপ বা গুনাহের কাজ। দুনিয়া ও আখেরাতের সবকিছুর মালিক আল্লাহ্‌র সাথে কোনও কিছুকে শরিক করাটাই হলো শিরক! সেক্ষেত্রে দুনিয়ার সকল কিছুর মালিক যদি আল্লাহ্‌ হয়ে থাকে তাহলে বাড়ি, জমি, প্রতিষ্ঠান ও অন্যন্য সম্পদের দলিলে আল্লাহ্‌র নাম না লিখে নিজেদের নাম লেখাটা তো উচ্চ পর্যায়ের শিরক! যা আলেম ওলামা থেকে শুরু করে দেশের প্রতিটি মানুষই করে থাকে!!

উপরের পয়েন্টগুলো থেকে নিশ্চয়ই বোঝা যাচ্ছে যে এই দুনিয়া একজন ইমানদার মুমিন মুসলমানের জন্য বড়ই নিষ্ঠুর জায়গা! তাদের মহামূল্যবান ইমানটা নিয়ে জীবনযাপন করার সামান্যতম অপশনও কোথাও খোলা নেই! মুসলমান হিসাবে অত্যান্ত গুরুতবপূর্ণ এসব বিষয়ে তাদের সচেতনতা ও সোচ্চার হওয়ার প্রয়োজন আছে নিশ্চয়ই, এখন দুনিয়ার এই বাস্তবতায় তাদের জন্য একমাত্র উপায়ই হচ্ছে যদি জন্মের আগেই সচেতন হয়ে অন্যকোনও গ্রহে জন্ম নিতে পারেন তবেই কেবল তাদের ইমান রক্ষা পেতে পারে এবং পরকালের জন্য কিছু আমল সঞ্চয় সম্ভব হয়!
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই জানুয়ারি, ২০২১ রাত ৮:২৩
৬টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০২



ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×