প্রথমেই বলে নেই এই লেখাটা কোন আর্ন্তব্লগীয় ষড়যন্ত্রের অংশ নয় । দীর্ঘদিন বাংলা ব্লগগুলোতে বিচরনের experience থেকে লিখছি ।
সচলায়তন ভালই লাগত কারন এখানকার সবগুলো লেখাই পড়ার মত থাকত । বলতে দ্বিধা নেই এই পরিবেশটা অধিকাংশ বাংলা ব্লগে নেই । সেটার অবশ্য কারনও আছে । সচল মডারেটেট ব্লগ , অন্যগুলো নয় । মাসপাঁচেক আগেও সচলের নীড়পাতা একদিনে ২ বার পূ্র্ণ হত নতুন নতুন লেখা দিয়ে , ছিল অজস্র না হলেও মোটামুটি উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ব্লগারের আনাগোনা । এখন সচলের এক পেজ পূর্ণ হয় বলতে গেলে ২ দিনে । অনলাইন সদস্য সংখ্যার ঘান্টিক গড় মনে হয় ১০ ও হবে না । অতিথি লেখকের লেখা দিনে ১-২ টার বেশী পড়ে না । সুতরাং আমাদের মত পাঠক যারা লেখে না শুধু পড়ে তারা আর সচল পড়বে কেন ? হয়েছেও তাই । সচলের প্রতিটি পোষ্টে হিটের সংখ্যা দেখুন তাহলেই
বুঝবেন । যদিও কর্তৃপক্ষ নানান ভুজংভাজং দিয়ে বলতে চাচ্ছেন হিট কমে নি । পাঠকই বুঝবেন আসল ঘটনা কি । সচল কি পেচালী হয়ে যাচ্ছে ? সচলের এই অবস্থায় আসার পিছনে কারন কি ?
আমার কাছে কয়েকটি কারনকে গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়েছে । আপনাদের সাথে এগুলো শেয়ার করছি ।
১। মডারেটরদের বিভিন্ন বিষয়ে অযাচিত হস্তক্ষেপ এবং সদস্যদের সাথে বদানুবাদে জড়িয়ে পড়া । ব্লগের একজন মডারেটর আর ব্লগার একই ব্যক্তি হলেও যে তার সাধারন সদস্যদের মত ঢালাও মন্তব্য করা যাবে না এটা তারা বোঝেন না । ফলস্রূতিতে এরা বদানুবাদ বা উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়ে (অনেক সময় সেটা শালীনতাবোধের বাহিরে গিয়ে পড়ে)জড়িয়ে পড়েছেন অনেক ব্লগারের সাথে (ফারুক ওয়াসিফ,মনজুরুল হক) । এই ব্লগাররা হয়ত একজন সাধারণ ব্লগারের কমেন্টে এতটাই মুষড়ে পড়তেন না যে তারা সচল ছেড়ে দেয়ার কথাই ভাবতেন যেটা না তারা ভেবেছেন মডারেটর কাম ব্লগারের কমেন্ট পড়ে । এরকম ডজন দুয়েক ব্লগারের উদাহরন দেয়া যাবে যারা এভাবে ব্লগ ছেড়েছেন । অথচ এই সকল ব্লগাররা গড়ে ৩ দিনে একটা পোষ্ট দেন । সুতরাং সচলে পোষ্ট ত কমবেই ।
২। লেখক করে নেয়ার পিছনে দীর্ঘসূত্রতা। কিসের ভিত্তিতে সদস্য করে নেয়া হচ্ছে তার কোন নীতিমালা নেই । কাউকে হয়ত ১৬-১৭ টা পোষ্টের পরই সদস্য করে নেয়া হল কিন্তু কেউ কেউ ৩৫-৪০টা পোষ্ট দিয়ে তারপর পেলেন সদস্যপদ ।যেহেতু সেখানে মডারেটেড লেখাই ছাপা হচ্ছে কিন্তু তারপরেও সদস্য হতে পোষ্টের এই বিশাল ব্যবধানই বলে দেয় সদস্য হতে খালি পোষ্টই নয় আরও কিছু গুণ থাকা দরকার । কি সব গুণ ? এটা যখন একজন লেখক বোঝেন তখন হয়ত তার আর সচল হওয়ার সাধ জাগে না । আমি একজনকে চিনি যিনি ৪৫টার উপরে পোষ্ট দিয়ে সদস্য হয়েছেন । গড়ে প্রতি
৩ দিনে একটা করে দিলেও বুঝুন সেটা মাসপাঁচেকের মামলা । উনি হয়ত অতটা অতটা অপেক্ষা করতে পেরেছেন কিন্তু সবাই কি পারবেন । এখন কথা হল সদস্য হওয়াই কি সব । এখন লেখক লিখছেন এটাই কি তার কম পাওয়া নয় । কিন্তু একটু খোলাচোখে দেখুন আপনি মাসছয়েক হল ব্লগিং করে সদস্যপদ পেলেন না অথচ আপনার চেয়ে অনেক কম সময়ে এবং অনেক কম পোষ্ট দিয়ে একজন সদস্য হয়ে গেলেন । সেটা কি আপনার লেখকসত্ত্বার উপর কোন প্রভাব ফেলবে না । মনজুরুল হকের ক্ষেত্রে এই বিষয়টাই হয়েছে ।
৪। একটা elegant ভাব ধরে থাকা । খেয়াল করে দেখবেন সেখানে যদিও সদস্য না হলেও অতিথি হয়ে মন্তব্য করা যায় তারপরেও লেখাটেখায় কমেন্ট পরে অনেক কম এবং যে কমেন্টগুলো পরে সেগুলোও মেইনলি যারা সদস্য তাদের
কমেন্ট । তার মানে দাড়াচ্ছে এই ,অতিথিরা মন্তব্য করতে সংকোচ বোধ করছে , লেখকদের এই পরিবেশটা মেনে নিতে তারা পারছে না । সচলের elegant ভাব ধরে থাকাটা আরও ভালভাবে বোঝা যায় ওদের বইমেলা উপলক্ষ্যে বের করতে চাওয়া বইয়ের জন্য ঘোষনাটায় । সেখানে তারা বলছে অন্য ব্লগে আগে বা পরে যদি লেখকের কোন লেখা থাকে তবে সেটা বইয়ের জন্য সিলেক্টেড হবে না । তার মানে এদের মতে লিখলে শুধু তাদের ব্লগেই লিখতে হবে অন্য কোন জায়গায় লেখা যাবে না (প্রচ্ছন্ন মেসেজ) । সুতরাং এই elegant আবহাওয়ায় বেশী লোক থাকবে কেন ?
আশা করি পেচালী হয়ে যেতে না চাইলে সচলের কর্তাব্যক্তিরা এই কয়েকটা বিষয়ের প্রতি একটু খেয়াল রাখবেন ।
বি:দ্র : আমি আমার ব্যক্তিগত কয়েকটা মতামত মাত্র জানালাম । লেখাটা সচলে দেয়ার ইচ্ছে ছিল কিন্তু সবাই জানে অভিজাত আবহাওয়ায় ওদের সমালোচনা ওরা পছন্দ করবে না । আমি লেখক নই , পাঠক । সচল পড়ি তাই ওরা টিকে থাকুক এটাই চাই , তাই লেখার অনভ্যাসহেতু ঘন্টাদুয়েক খেটে লেখাটা লিখলাম । দয়া করে এটাকে ব্লগীয় রাজনীতির মধ্যে ফেলবেন না ।