কোন কাজ দেখে স্বাভাবিকভবে যদি মনে হয় কাজটি করতে ০১ ঘন্টা লাগবে কিন্তু সেই কাজ আপনি ৫০ মিনিটে করতে পারবেন যদি সঠিক পরিকল্পনা করে ঠিক করে নিতে পারেন কোনটি আগে করব কোনটি পরে করব বা কোন দুইটি একই সাথে করলে কাজের মান ঠিক থাকবে। আমাদের দেশের বেকারত্ব এখন একটি অভিশাপ হয়ে দাঁড়াচ্ছে, খুব দ্রুত এর সুন্দর একটি সমাধান না হলে ভবিষ্যত খুব ভাল কিছু বয়ে আনবে না।
প্রশ্ন হচ্ছে আমার দেশের সরকার কি কিছু চেষ্টা করছে না?
উত্তর হবে- হ্যাঁ করছে। তাহলে বেকারত্বের সমাধান কেন হচ্ছে না? কারণ পরিকল্পনাহীন এগিয়ে যাওয়ার ফলে।
আমার হাঁটুর নীচে জ্ঞান নিয়ে সেই ত্রুটিপূর্ণ পরিকল্পনা খুঁজে বের করার চেষ্টা করেছি, আমার দৃষ্টিতে সঠিকটি বলার চেষ্টা করেছি।
প্রথমে বেকারদের মানদন্ডে ভাগ করতে হবে এবং তাদের সংখ্যা বের করতে হবে। যেমন:
১) শিক্ষিত বেকার (এই শ্রেণীর বেকারের সংখ্যা অধিক হওয়ার সম্ভবনা বেশি কারণ তাঁরা চাকরী ছাড়া বিকল্প কিছু কখনও ভাবে বলে মনে হয় না)
২) অর্ধ-শিক্ষিত বেকার ( এই শ্রেণীর বেকাররা যে কোন একটি কাজের জন্য হন্য হয়ে খুঁজতে থাকে কাজের মান নিয়ে খুব বেশি চিন্তা করে না)
৩) শ্রম শ্রেণী বেকার (এই শ্রেনীর বেকারদের বেকার বলা ঠিক হবে না, তাঁরা মেীসুমি বেকার হয়ে থাকে, ধান কাটার পরে হয়তো কাজ থাকে কিছুদিন তখন বেকার বসে থাকে)
উপরের উল্লেখিত বেকারদের মধ্যে অর্ধ-শিক্ষিত বেকারদের সংখ্যা মনে হয় শহরের তুলনায় গ্রামে বেশি, তাঁরা শহর মুখে ছুটছে কিছু করার আশায়। প্রথমে যেটা করতে হবে এদেরকে শহরমূখী আসা বন্ধ করতে হবে এই জন্য গ্রাম নিয়ে বড় ধরনের পরিকল্পনা করতে হবে। খুঁজে বের করতে হবে গ্রামে কি ধরণের উন্নয়ন ঘঠালে, কোন বিষয়গুলি স্থানীয় মানুষদের মাঝে প্রচার করলে এইসব বেকাররা উপকৃত হবে বা কর্মসংস্থান করতে পারবে বা কর্মসংস্থানের জন্য কোন কাজ উপযুক্ত তা নির্ধারণ করতে পারবে।
প্রশ্ন হচ্ছে বর্তমানে কি এই রকম ব্যবস্থা আছে?
উত্তর হবে আছে, আগেও ছিল, কিন্তু মাঠ পর্যায়ে তার প্রভাব শূন্যের কোঠায় কারণ চরমভাবে দূর্ণীতি আর ত্রুটিপূর্ণ পরিকল্পনা।
শুধু চেহারা দেখে আর দলীয় পরিচয়ে কিছু টাকা ধরিয়ে দেওয়া হয় এই সব প্রজেক্টে, আর ফলাফল বরাবরের মত হয় শূণ্য।
আমি যদি এখন ব্লগে প্রশ্ন করি আমরা কি খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়তো উত্তর হবে হ্যাঁ, এই হ্যাঁ যেমন সঠিক তেমনি আবার ভুল। আমি যদি মনে করি শুধুমাত্র ধান আমাদের খাদ্য তাহলে উত্তর সঠিক আর যদি বলি সাথে তৈল-পেঁয়াজ-রসুন-মসল্লা-দুধ------ ইত্যাদিও খাদ্য তাহলে উত্তর ভুল।
কি রকম ত্রুটিপূর্ণ?
আমাদের কৃষকদের ৯৯% কৃষক জানে না কি পরিমাণ এসব নিত্য-প্রয়োজনীয় কৃষি পন্য আমদানী করতে হচ্ছে। তাঁরা জানে না এখনো এদেশের চাহিদার মাত্র ৩০% দুধ আমাদের দেশে উৎপন্ন থেকে আসে বাকি সব দুধ আমদানী নির্ভর।
কৃষকেরা জানে না কিভাবে তাদের উৎপন্ন করা পন্য আধুনিক পদ্ধতিতে সংরক্ষন করা যায়, কোথায় গেলে ভাল পরামর্শ পাওয়া যায় কোথায় গেলে প্রয়োজনীয় কৃষি-প্রযুক্তি সহজে কম খরচে ক্রয় করা যায়।
নিম্ন বিষয়গুলি যদি গ্রামের কৃষকদের মাঝে ঠিক-ঠাক পেীঁছায়ে দিতে পারি তাহলে অনেকাংশ সফল হওয়া সম্ভব।
১) কি কি কৃষি পন্য আমরা এখনো আমদানী নির্ভর, বাজারের চাহিদা ভাল। তা কৃষকদের অবহিত করতে হবে সর্বদা।
২) ঐ সকল পন্য চাষ পদ্ধতি কি? আমাদের পরিবেশে কি এসব উৎপন্ন সম্ভব? সম্ভব হলে বিস্তারিত কৃষকদের মাঝে প্রচার করা। (এ ক্ষেত্রে বিটিভি ভাল ভূমিকা রাখতে পারে "বাতাবি লেবুর বাম্পার ফলন" প্রচারের মত করে)
৩) উৎপাদিত পন্য কিভাবে আধুনিকভাবে সংরক্ষন করা যায় তা কৃষকদের পারদর্শী করতে হবে।
৪) সুদমুক্ত কৃষি ঋণ প্রকৃত কৃষকের হাতে পেীঁছানোর নিশ্চিত করতে হবে।
৫) নামমাত্র উপজেলা কৃষি অফিসার থাকলে হবে না, মাঠ পর্যায়ে নিয়মিত টহল করতে হবে কৃষকের পাশে যেতে হবে কৃষককে ভাল-মন্দ বিষয় প্রশিক্ষন দিতে হবে।
যদি সঠিক পরিকল্পনা আর উপযুক্ত সিধান্ত নিয়ে গ্রামে কৃষকদের মাঝে পেীঁছানো যায় তাহলে গ্রামের অর্থনীতির চাকা সচল হবে কেউ শহরমূখী হবে না, গ্রামে থেকেই উপযুক্ত কর্মসংস্থান করতে পারবে সবাই। বেকারত্বের হার হ্রাস পাবে।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে জুন, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:০৯