মাখন সব সময় স্বপ্ন দেখে সে একটা মেয়ে কে বিয়ে করবে তার টানাটানা হরিনী চোখ মায়াবী হাসি লম্বা বাশির মত নাক ভেজা চুলে জড়িয়ে ধরে বলবে ভালোবাসি ভালোবাসি।
একদিন সেই স্বপ্নের রাজকন্যার সাথে তার দেখা হয়ে গেলো। প্রথম দেখাতেই সে রাজকন্যা প্রেমে পড়ে যায়। মানুষ প্রেমে পড়লে আগে ভালোবাসার কথা জানায় কিন্তু মাখন একদম অন্যরকম সরাসরি বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে দিলো। কারন তার স্বপ্নের রাজকন্যা যতটা আপন করে পাওয়া দরকার তার চেয়ে দরকার তার মায়ের কষ্ট ঘুচানোর জন্য একটা মেয়ে মানে ছেলের বউ। প্রত্যক মায়েরায়াই চায় তার ছেলের বউ যেন তার মেয়ের মত হয়ে থাকে। কিন্তু বর্তমানের মেয়েরা শুধুই জামাইয়ের বউ হয়ে থাকতে চায়। মায়ের মেয়ে হয়ে থাকতে চায় না।
মেয়েটির কথা ছিল পরিবার মেনে নিলে আমার কোন আপত্তি নাই।
মাখন রেশমার ভাবীকে অনুরোধ করলো তার মায়ের কাছে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে যেতে।
একদিন দুপুরে রেশমাও তার ভাবী মাখনদের বাড়িতে রেশমার বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে গেলো। মাখনের মায়ের আপ্যায়নের ত্রুটি ও অবহেলিত কথাবার্তা তাদের কাছে ভাল লাগেনি। তারা দুপুরে খানাপিনা করে চলে যায় দুঃখকুল মনে।
মাখন ছুটে যায় রেশমাদের বাড়িতে ভাবীর কাছে ক্ষমা চায় যেখানে মাখন তার ভাইকে নিয়ে কিছু মিথ্যে কথা বলার জন্য। আর এই মিথ্যে বলার কারন শুধুই রেশমাকে আপন করে পাবার জন্য।
ভাবীর কোন আপত্তি ছিল না যদি রেশমা রাজি থাকে।
রেশমার উত্তর ছিল- তোমার মা যতদিন বেচে থাকবেন তোমার বাড়িতে আমি বউ হয়ে যেতে পারবো না।
মাখনের উত্তর ছিল- আমি তোমাকে ছাড়া ২য় কাউকে বিয়ে করতে পারবো না। আর যে মেয়ে আমার মাকে অপছন্দ করবে তাকে কখনো বিয়ে করতে পারবো না।
এই কথা বলে মাখন চলে গেলো।
এইদিনের পর থেকে মাখন একাএকা থাকে খাওয়াদাওয়া করেনা রাত হলে ঘুমায় না বারান্দায় সারারাত জেগে থাকে। কারো সাথে কথা বলে না এমনও কি মা ভাইয়ের সাথেও না।
একদিন মাখন কারেন্টের লাইন মেরামত করতে গিয়ে শট খেয়ে মাটিতে পড়ে যায়। মারাত্মক অবস্থা মাখনের বন্ধু তাকে নিয়ে হাসপাতালে যায় ডাক্তার বলে না বাচার সম্ভাবনাই বেশি।
তার বন্ধু মাখনের মা কে এই খবর দেয় মা এই দুঃসংবাদ শুনে সাথে সাথেই মাটিতে লুটে পরে।
জায়নামাযে সিজদারত অবস্থায় মায়ের আর্তনাদ হে আল্লাহ আমাকে তুমি নিয়ে নাও বিনিময়ে আমার মাখনের জানটা ফিরিয়ে দাও হে আল্লাহ, হে আল্লাহ.... বলতে বলতে খোদা মাখনের মায়ের কথা কবুল করেন এবং মাখনের জ্ঞান ফিরে আসে।
ছোট ভাই এই সুসংবাদ টা দিতে এসে কান্নায় লুটিয়ে পরে মাঠিতে।
মায়ের জান ছেলেকে দিয়ে মা চলে গেলো চিরতরে এই মায়ার পৃথিবী ত্যাগ করে।
এই হল 'জান' এটা একটা নাটকের কাহিনী। এই ঈদের মোশারফ করিমের অভিনিত ইম্প্রেস টেলিফিল্ম এর প্রযোজিত। নাটকটা কতটুকু আপনাদের মনে ধরবে আমি জানিনা তবে আমার ধরেছে বেসম্ভব ভাবে ধরেছে কারন এইরকম কয়েকখান গল্প যাহা সন্তানের জন্য মায়ের জান ত্যাগের চক্ষু সাক্ষী আমি নিজেই।
মোধ্যকথাঃ এই পৃথিবীতে হাজারো মা নিজের জান ত্যাগ করে সন্তানের ভবিষ্যৎ গড়ে দিয়ে হুট করেই মায়ার সন্তান মায়ার পৃথিবী সব ছেড়ে চুপ করে কাউকে কিছু না জানিয়ে হুট করে পাড়ি জমান পরপারে। কেউ তার মূল্য দেয় কেউবা মায়ের ৪০ দিন পার হলেই মা কে ভুলে যায় আর কেউ দিনকা দিন সময় ঘন্টা মিনিট মনে করে মায়ের জন্য কাঁদে আড়ালে অন্ধকার আধারে।
মায়েরা সন্তানের কাছে কিছুই চায় না শুধু চায় তিনি না থাকা অবস্থায় তার জন্য দুফোটা চোখেরজল ফেলুক।
বয়সকালে বিছানা অবস্থায় মা কে আগলে রাখুক। এইটুকুও অনেক সন্তানেরা মায়ের জন্য করতে পারে না।
বউয়ের আঁচলে মুখ ঘুচিয়ে কবিতা লিখতে পারে কিন্তু মায়ের জন্য লেখার সময় হয়ে উঠে না।
মা কে ভালোবাসুন। মা কে আগলে রাখুন পৃথিবীটা আপনার জন্য বেহেশত হয়ে যাবে। মায়ের ভালোবাসা পৃথিবীর একমাত্র নিঃস্বার্থ ভালোবাসা এই ভালোবাসা পৃথিবীর কেউ দিতে পারবে না বউ, প্রেমিকা, শাশুড়ি মা....কেউ না কেউ না!!