শুরুতেই একটা গল্প বলি এক খ্রিস্টান দম্পতির গাড়ি আটকিয়ে তাদের জিজ্ঞেস করলো, ‘তোমরা কি মুসলিম?’ খ্রিষ্টান লোকটি গাড়ির ভেতর থেকে উত্তর দিল, ‘হ্যাঁ, আমি একজন মুসলিম।’ তখন আইএসসদস্য বললো, ‘তাহলে কোরানের একটি আয়াত পাঠ করে শোনাও।’ খ্রিষ্টান লোকটি তৎক্ষণাৎ বাইবেলের একটি লাইন আওড়ালো। তা শুনে আইএস জংগি ঐ খ্রিষ্টান দম্পতিকে ছেড়ে দিল।
মুক্তি পেয়ে এসে খ্রিস্টান লোকটির স্ত্রী তার স্বামীকে বললো, ‘তুমি মিথ্যা বলে ঝুঁকি নিতে গেলে কেনো? যদি ধরা পড়তে?’ উত্তরে লোকটি বললো, ‘ধরা পড়ার কোনো সম্ভাবনাই ছিল না। এ জংগিরা যদি কোরান পড়তো তাহলে তারা কখনোই মানুষ খুন করতো না। কারণ কোরান বলেছে, একজন নির্দোষ মানুষকে হত্যা করা মানে পুরো মানবজাতিকে হত্যা করা।’
মানুষাকারের নৃশংস প্রাণি আইএস জংগিরা নরহত্যা চালিয়ে যাচ্ছেই। প্যারিসে তাদের জংগি আক্রমণের শিকার হয়ে খুন হয়েছে শতাধিক নির্দোষ মানবসন্তান। এ মানুষগুলির অনেকে কনসার্টের গান শুনছিল, কেউ রেস্টুরেন্টে বসে খাচ্ছিল আর কেউ রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিল। এ ‘অপরাধে’র দরুন তাদেরকে জীবন দিতে হয়েছে ৭ দ্বিপদী পশুর কাপুরুষোচিত আক্রমণের বলি হয়ে।
এ পাশবিক হত্যাকান্ড, এ জাংগলিক আক্রমণ, এ নির্মমতার সাথে কি কোনোভাবে ইসলামকে মেলানো যায়? ইসলাম তার যে বীরদের কীর্তিগাঁথা গেয়েছে তাদের কেউ কখনো এমন কোনো অমানবিক আক্রমণে অংশ নেন নি। মুসলিম নয় – শুধু এ কারণে কোনো নিরীহ মানুষকে খুন করা যাবে বলে কি ইসলাম কোথাও উল্লেখ করেছে? বরং কঠোরভাবে নিষেধ করেছে। তাহলে কেনো বর্বরতার এ প্রদর্শনী?
এর একমাত্র কারণ এ জংগিদের পিছনে যে লোভী সাম্রাজ্যবাদীরা রয়েছে তাদের হাতকে শক্তিশালী করা। কারা এরা? জংগিরা ‘কাফির’দের বিরুদ্ধে লড়াই করছে বলে দাবি করলেও তাদের পিছনের শক্তি মূলত: ‘কাফির’রাই। ভুল নয়, সত্যি কথা। আইএস, আল কায়দা কিংবা তালেবান – এ ৩ জংগি গ্রুপেরই জন্মদাতা ও পৃষ্টপোষক হল আমেরিকান পুঁজিবাদীরা যারা সাধারণ জংগিদের ভাষায় কাফির।
প্রতারণাটা এখানে স্পষ্ট। প্রতারণা করা হচ্ছে মানবতার সাথে, সাধারণ মানুষদের সাথে, ইসলামের সাথে, সাধারণ মুসলমানদের সাথে।