তেহারি নামক খাদ্যটি আমি কখনো খাইনি।
প্রথমে ভেবেছিলাম, খিচুরির আরেক নাম বোধহয় তেহারি।
পরে জেনেছি খিচুরি আর তেহারি দুটো ভিন্ন জিনিস।
সেদিন, কমলাপুর রেলস্টেশনের কাছে রাস্তার অপর পাশে একটা ছোট রেস্টুরেণ্ট চোখে পড়ল।
"খাজা বাবা অথবা আজমীরি তেহারি হাউস"
নামটা এরকম কিছু একটা ধর্মের লেবাসে জড়ানো।
নামের কারণে, পবিত্র তবারুক মনে করে অনেকেই সেখানে
আসে। টাকা দিয়ে প্রসাদ কিনে খায়।
চারটা টেবিল এবং ষোলটা চেয়ারে সাজানো সেই ঘরে এক বৃদ্ধ বসে ছিল।
তাঁর হাতে মলিন রোগাক্রান্ত একশো টাকার নোট। নোটে বঙ্গবন্ধুর চশমা পড়া ছবি।
খাদ্য-ব্যবসায়ী কিছুতেই তাকে খেতে দিবেনা।
বৃদ্ধ একশো টাকার নোটটা যতটুকু পারা যায় মেলে ধরে আছে। মুখ হাসি-হাসি। তার খাবার কিনে খাওয়ার মত টাকা আছে এটা সে প্রমান করতে চাচ্ছে। বার বার ব্যাকুল কণ্ঠে বলছে "টেহা দিয়া খাম বাবাজি, এই দেহেন টেহা..."
বৃদ্ধকে দেখে আমার মায়া হল। হোটেল মালিককে বললাম আঙ্কেল, ওনার বিলটা আমরা দেব...
খাদ্য ব্যবসায়ী বলল "না ছার, এই বুড়া খাইতে বইলে সারাদিন লাগাইব। আমার কাস্টমার লস অইব।"
বৃদ্ধ এই কথার প্রতিবাদ জানাতে গিয়েও থেমে গেল লক্ষ্য করলাম। অতি কষ্টে মুখে হাসি এনে বলল 'তাইলে দিয়া দেন আমি বাইরে বইয়া খায়াম।'
বৃদ্ধের কথায় যুক্তি আছে। কিন্তু, দোকানদার কোন যুক্তি শুনতে নারাজ। সে এবং তার এক কর্মচারী প্রায় ঘাড় ধাক্কা দিয়ে লোকটাকে বের করে দিল।
কিছুক্ষণ পর তেহারি হাউসের বাহিরে এসে বৃদ্ধ লোকটাকে খুঁজলাম। পেলাম না।
রেস্টুরেণ্টের সাইনবোর্ডের দিকে তাকিয়ে দেখলাম, সেখানে লেখা "এখানে ঘরোয়া পরিবেশে যত্ন করে খাওয়ানো হয়।"

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




