somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অসম্প্রদায়িক আন্দোলন গর্ভবতী মহিলাকে হাসপাতালে পৌঁছুতে বাধা প্রদান, অস্ত্র প্রদর্শন ও গণপিটুনির নামে হত্যা চেষ্টা।

১৭ ই জানুয়ারি, ২০২০ দুপুর ২:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আশাকরি শিরোনাম দেখেই আপনারা বুঝতে পেরেছেন আজকের ব্লগিংয়ের বিষয়বস্তু। আমরা সবাই জানি ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে আগামী ৩০ জানুয়ারি। আর সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সরস্বতীপূজা হল ২৯ জানুয়ারি। তবে পুজার বিভিন্ন কার্যক্রম সমাপ্ত করতে করতে সেটা ৩০ জানুয়ারি গড়াবে। সুতরাং ৩০ জানুয়ারি একই সাথে পূজা ও নির্বাচন। আর নির্বাচনের সেন্টার ও সরস্বতী পূজা আয়োজন উভয়ের স্থান হল বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। সুতরাং ৩০ তারিখ নির্বাচন বন্ধে বা নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তনের জন্য বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে। তবে আদালত তার রায়ে নির্বাচন বন্ধ বা তারিখ পরিবর্তনের জন্য বলে নাই বরং রিট আবেদন খারিজ করে দিয়েছে। নির্বাচন কমিশন ৫৩ টি কেন্দ্রে একই সাথে নির্বাচন আয়োজন ও পূজা আয়োজনের কথা বলছে। সুতরাং নিরাপত্তার কারন দেখিয়ে পূজা বন্ধের যে আশঙ্কা করা হয়েছিল সেটাও ভুল প্রমাণিত হয়েছে। তবুও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পূজার দিনে নির্বাচন প্রতিহত করবার জন্য আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছে।

পূজার দিনে নির্বাচন প্রতিহত করবার এই আন্দোলনে হিন্দু থেকে শুরু করে মুসলিম সবার একপ্রকার সমর্থনও রয়েছে এমন কি ছাত্রদল-ছাত্রলীগ থেকে শুরু করে কথিত শিবির এজেন্ট(!) ঢাবির নির্বাচিত ভিপি নূর'রাও পূজার দিনে নির্বাচন আয়োজনের বিরুদ্ধে সবাই এক হয়েছে। তবে আওয়ামীলীগ সেক্রেটারি ওবায়দুল কাদের আদালতের রায় মেনে নিতে শিক্ষার্থীদের আহব্বান জানিয়েছে আর নির্বাচন কমিশন এখন আদালতের রায়ের কথা বলে নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তনের সম্ভাবনা সরাসরি বাতিল করে দিয়েছে।
এমন একটি অবস্থায় ঢাবির কিছু শিক্ষার্থী অনশন থেকে শুরু করে শাহবাগের রাস্তা অবরোধ করে রেখেছে। মনে রাখা প্রয়োজন শাহবাগের আশেপাশে ঢাকা মেডিকেল, বঙ্গবন্ধু মেডিকেল ও বার্ডেমের মত দেশের সব থেকে প্রসিদ্ধ ৩ টি হসপিটাল রয়েছে যেখানে অসংখ্য রোগী চিকিৎসা সেবা নিয়ে থাকেন।

যাই হোক এবার মূল প্রসঙ্গে আসি গত দুই দিন আগে ঢাবি ছাত্রদের কর্মসূচি ছিল নির্বাচন কমিশন ঘেরাও তবে পুলিশি বাঁধায় তারা ব্যর্থ হলে শাহবাগ অবরোধ করে আর সেই অবরোধে কয়েক ঘণ্টা একজন প্রবাসী ব্যবসায়ী তার গর্ভবতী স্ত্রী'কে নিয়ে আটকে থাকেন যিনি শিক্ষার্থীদের অনুরোধ করেন তাদের গাড়িটি ছেড়ে দিতে যেন তার স্ত্রীকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে পারেন কিন্তু শিক্ষার্থীরা তার অনুরোধ না রেখে বরং তার সাথে তর্কে লিপ্ত হয় আর ওই মুহূর্তে সেই প্রবাসী ব্যবসায়ী তার ধর্য হারিয়ে এক শিক্ষার্থীকে তার লাইসেন্স করা অস্ত্রের ভয় দেখান সাথে সাথেই সব ছাত্ররা মিলে ওই ব্যবসায়ীকে গণপিটুনি দিয়ে হত্যার চেষ্টা করে আর সেই মুহূর্তে ওই ব্যবসায়ীর গর্ভবতী স্ত্রী অসহায় স্বামীর জীবন রক্ষার চেষ্টা চালান। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে ওই প্রবাসীর জীবন রক্ষা পায়।

যাই হোক আমি নিজেও শিক্ষার্থী হিসেবে বেশ কিছু আন্দোলন করেছি। নিরাপদ সড়কের দাবীতে আন্দোলন, ভ্যাট ও কোটা বিরোধী আন্দোলন তার মধ্যে অন্যতম। সেসব আন্দোলনের সময়ে সবাই চেষ্টা করেছি যেন অসুস্থ কোন মানুষের সমস্যা না হয়, হজ্ব যাত্রীদের, বাস ছেড়ে দেওয়া, প্রবাসী যাত্রীদের গাড়ি ছেড়ে দেওয়া এসব বিষয়ে আমাদের সবার মধ্যে একপ্রকার ঐক্যমত ছিল ফলে দেশের সব মানুষ আমাদের আন্দোলনের প্রতি সহানুভূতিশীল ছিলেন। তবে এবারের আন্দোলনে একজন গর্ভবতী মহিলাকে হাসপাতালে যেতে বাধা দেওয়ার মত ঘটনা কিন্তু ঢাবির শিক্ষার্থীদের সম্পূর্ণ আন্দোলনকেই প্রশ্নবিদ্ধ করেছে ধরলাম ওই ব্যক্তি অস্ত্র বের করে ভয় দেখানর জন্যই মার খেয়ে মৃত্যুর মুখ থেকে ভাগ্যগুনে ফিরে এসেছেন। তার অস্ত্র বের করা যেমন ঠিক হয়নাই তেমনি গণপিটুনি দিয়ে মেরে ফেলার চেষ্টাকে কোন ভাবেই সমর্থন করা যায় না মনে রাখবেন তিনি কিন্তু কোন গুলি চালান নাই। মানবের থেকে বড় ধর্ম আর কিছুই হতে পারে না। সুতরাং মানুষকে কষ্ট দিয়ে ধর্মের দোহাই দেওয়া কোন মতেই সমর্থনযোগ্য নয়। আইএস, আল-কায়েদা থেকে আরএসএস এরা ধর্মের নামে মানবের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ায় কিন্তু আমরা এদের সন্ত্রাসী বলছি। পরিশেষে প্রার্থনা সৃষ্টিকর্তা সবাইকে সঠিক জ্ঞান দান করুন। ধর্মের নামে বিভেদ বা ধর্মীয় আচারন পালনে বাধা প্রদান কোনটাই কাম্য নয়।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৩:০২
৯টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার কিছু ভুল!

লিখেছেন মোঃ খালিদ সাইফুল্লাহ্‌, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮

১। ফ্লাস্কে চা থাকে। চা খেতে টেবিলে চলে গেলাম। কাপে দুধ-চিনি নিয়ে পাশে থাকা ফ্লাস্ক না নিয়ে জগ নিয়ে পানি ঢেলে দিলাম। ভাবছিলাম এখন কি করতে হবে? হুঁশ ফিরে এল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×