এম-ফিল, ইসলামিক স্টাডিজ এন্ড হিস্টোরি, অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি।
সাহেবজাদা, ঐতিহাসিক সুরাবই সাহেব বাড়ি, দরবার শরীফ,হবিগন্জ।

জামেয়া আহমদিয়া চিটাগাং আর কাদেরিয়া তৈয়বিয়ার হারামী-কুলাঙ্গারদের কথাবার্তা ও ভাবসাব দেখলে মনে হয় এদেশের মানুষের সুন্নীয়তে ঠিকাদারি থেকে শুরু করে সব ঈমান আক্বীদা তোদের দিয়াই হইছে, বাকী সব বাতিল। তোরা কথায় কথায় খালি ফতোয়ায়ে রেজভিয়া মারিস। কিরে এটা কি তোদের কোরআন? তোরা কি কোরআন পড়িস নাই ? আয়াতে তাতহীরে আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জত ইরশাদ করেন:
إنما يريد الله ليذهب عنكم الرجس أهل البيت ويطهركم تطهيرا
"—হে আহলে বাইতের (আলী, ফাতেমা, হাসান ও হোসাইন) সদস্যবর্গ। আল্লাহ কেবল চান তোমাদের থেকে অপবিত্রতাকে দূরে রাখতে এবং তোমাদেরকে পূর্ণরূপে পূতঃপবিত্র রাখতে—"।
—সুরা আহযাব:-৩৩।
মদপানের ঘটনার প্রায় আড়াই বছর পূর্বেই আল্লাহ্ পাক সূরা আহযাবের ৩৩ নং আয়াতে আহলে বাইতকে সমস্ত নাপাকি থেকে পবিত্র রাখার ব্যাপারে অঙ্গীকার করেছেন।তাহলে তোরা এই বোঝাতে চাইলি যে আল্লাহ্ পাক স্বীয় অঙ্গীকার রক্ষা করেন না, নাউজুবিল্লাহ!
আমার মওলা আমিরুল মু’মিনীন আলী ইবনে আবি তালিব (আ.) কি পবিত্র কোরআন মতে পুতঃপবিত্র নন? তবে কিসের তাড়নায় তোরা মওলায়ে কায়নাত কে মাতাল বলিস! আরে তোরা মাতাল,মওলা আলী আঃ কে যারা মাতাল বলে মানে তারা আর যাইহোক হালালি হতে পারে না। আরে মাওলা আলী যদি মদ খেয়ে থাকতেন তাহলে মদ হারাম হতো না, হালাল হতো। হাদিস টা কি তোদের পড়ায় নাই, মওলা মুহাম্মদ ( ﷺ) বলেছেন যে,- "আলী রয়েছে হক্ব‘র সাথে এবং হক্ব রয়েছে আলী’র সাথে, ইয়া আল্লাহ্ ! হক্ব সেই দিকে ঘুরিয়ে দাও যেদিকে আলী যায় ”। হক যেদিকে সেদিকে আলীকে ঘুরাতে বলেন নাই। আলি যেদিকে সেদিকে হক্ব-কে ঘুরাতে বলেছেন।
দুনিয়ার বুকে সর্বোচ্চ সম্মানিত যে কাবাঘর, যে ঘরের দিকে মুখ করে সর্বকালের বিশ্ব মুসলিম তাদের স্রস্টার উদ্দেশ্যে নিবেদিত সর্চোচ্চ ইবাদাত সালাতে কিয়াম করে আর শিজদা দেয়- সেই ঘরটাই যার আতুরঘর- তাঁর প্রকৃত মর্যাদা বুঝার ক্ষমতা তোদের নাফসে নেই। আর এমনটা যে হতেই পারে, সে ব্যাপারে রাসূল (সা.) নিজেই বলে গেছেন। তিনি বলেছেন, "আল্লাহ এবং আমি ছাড়া আর কেউ আলীকে চেনে না।"
আবার অন্যত্র বলেছেন- "আল্লাহ এবং আলী ছাড়া আর কেউ আমাকে চেনে না।"
এ থেকে অনুমিত হয় যে হযরত আলী (আ.) কে মূল্যায়নের ক্ষমতা সবার নেই। আবার রাসূলকে জানার এবং বোঝার ক্ষেত্রে সবচে যোগ্যতম এবং অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ব্যক্তি হলেন হযরত আলী (আ.)। তাঁকে মূল্যায়ন করতে গিয়ে হযরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন- "তোমরা যদি আদমের জ্ঞান, নূহের ধার্মিকতা, ইব্রাহিমের অনুরক্তি, মূসার সম্ভ্রম এবং ঈসার সেবা ও মিতাচার দেখতে চাও, তাহলে আলীর উজ্জ্বল মুখের দিকে তাকাও।"
কথায় আছে, বিদ্যার সাথে প্রজ্ঞা যুক্ত না হলে তা ইবলীসি মীরাস হয়ে যায়। ধিক তোদের শত কোটি ধিক তোদের এলেমের। যে নাফস বিলায়তের মর্যাদা করতে শিখেনি, আর যার নাফসে আলী আঃ নেই, ওরা কি করে আলেম হতে পারে? তোদেরর মত নাপাক কুলাঙ্গারগুলাকে দেখলে বিশ্বাস হয় যে সেই যুগেও ইয়াযিদের পোষা তিনশত জন রাজ দরবারী মুফতি হযরত মাযলুম ইমাম হুসাইন (আঃ) কে হত্যা করা ফরজ বলে ফতোয়া দিয়েছিল!
আফসোস, নির্বোধ মানুষগুলো মনে করে যে, শান্তি বিনষ্টকারী এই মোল্লারাই ইসলামের রক্ষক ও ধারক বাহক । কিন্তু প্রকৃত সত্য হচ্ছে যে, কোন ধর্মের মৌলবাদীরাই সে ধর্মের মূলে নেই; বরং সর্বযুগেই তারা সত্যের গৃহ হতে ছিটকে গিয়ে স্ব স্ব ধর্মেরই প্রেরিত পুরুষদের বিরোধীতা করে এসেছে। আর মুসলমান ধর্মের মোল্লারা তো ধর্মের সত্য হতে এমনভাবে বেড়িয়ে গেছে যেভাবে ধনুক হতে একটি তীর বেড়িয়ে যায় । সমাজে আজ যাদেরকে মানুষ মুসলমান বলে মনে করছে এরাই কারবালার ময়দানে মহানবির ধর্মদর্শন ও নবি-পরিবারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে মূল ইসলাম থেকে ছিটকে গিয়ে টুপি-দাঁড়ি মার্কা অনুষ্ঠানসর্বশ্ব ভোগবাদী এক এজিদী ইসলামের সূচনা করেছিল যা এখনও প্রচলিত আছে; সেই নবগঠিত ইসলামের খাঁটি উত্তরসুরিই বর্তমান কালের মোল্লা-মুন্সি ও মুফতি-মাওলানারা । ইসলামের চেহারাকে পাল্টে দেয়া হয়েছে, এজিদী ধর্মকেই মোহাম্মদী ধর্ম বলে সমাজে, ধর্মগ্রন্থে, জনমনে বলপূর্বক চাপিয়ে দেয়া হয়েছে । তাই কোন ঐশী মহামানবই এইসব মোল্লাদের ধর্মমতকে সমর্থন করেননি; মোল্লাদের ধর্মচর্চাকে সত্য-শুদ্ধ বলে স্বীকৃতি দেননি । কবি আল্লামা ইকবাল মোল্লাদের নিয়ে লিখেছেন: মুশরিক আজ মুসলিম বেশে করিতেছে কোলাহল !!
ইয়া আল্লাহ, ওরা আপনার নাফস কে অপবিত্র ঘোষণা করতে চায়, অথচ আপনি নিজে তার থেকে সকল অপবিত্রতা দুরে রাখতে চান। ওরা প্রমান করতে চায় আপনি স্বীয় অঙ্গীকার রক্ষা করেন না, নাউজুবিল্লাহ! ইয়া রাসুলুল্লাহ ( ﷺ),ওরা আপনার ওয়াসী, মওলা আলী (আ)'কে মাতাল বানিয়েছে,আপনার আহলে বাইতকে তো ধ্বংশ করেছেই, ওরা আপনাকেও ছাড়েনি! অসীম লানত আহলে বাইত বিদ্বেষী এসব দুর্গন্ধময় নর্দমার কীটগুলোর উপর! ওয়াক থু থু ...
============
লেখকঃ সৈয়দ হোসাইন উল হক
এম-ফিল, ইসলামিক স্টাডিজ এন্ড হিস্টোরি, অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি।
সাহেবজাদা, ঐতিহাসিক সুরাবই সাহেব বাড়ি, দরবার শরীফ, হবিগন্জ।
=============================================
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:২৪

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



