প্যান্টের পকেটে থাকা মুঠোফোনটা হঠাৎ কেঁপে উঠল। অজানা কোন এক শঙ্কা নিজের মাঝে উকি দিল। কখনো ফোন রিসিভ করতে এরকম অনভূত হয় না। ভার্সিটির এক বড় ভাইর ফোন। ভাবনায় পড়ে গেলোম এতো দিন পর তিনি ফোন দিলেন! যাক আগে রিসিভ করি তার পর দেখা যাবে।
অন্যান্য দিনের ন্যায় কেমন আছি, কোথায় আছি এই আর কি। কথার শেষ মুহূর্তে জানালেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে রাইহান নামে কাউকে তুমি ছিন? হ্যাঁ, কয়েক জনকেইতো ছিনি। কোন রাইহান? তিনি জানালেন, তিনি ছিনেন না। তবে তাঁর এক বড় ভাই তাকে ফোনে জানালেন রাইহান নামে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ভাই আজ সকালে ঢাকা থেকে বাড়ি ফেরার পথে রাজশাহীর বানেশ্বরের কাছা কাছি একটি যায়গায় সড়ক দূর্ঘটনায় মারা গেছে।
মারা যাওয়ার খবরটা শুনে নিজের কাছে খুব খারাপ লাগলো। পড়াশুনা শেষ করে ঢাকায় একটি কোম্পানিতে চাকরি। চকরি জীবনে এই প্রথম ঈদ। কিন্তু এমন এক মুহূর্তে বাড়িতে লাশ হয়ে বাড়ি ফেরা।
এমন পরিস্থিতিতে মনে করতে পারছি না কোন রাইহান। মোবাইল সেটটা হারিয়ে যাওয়ার পরে অনেকের নম্বর নেই। তাই কারো কাছে খোঁজও নিতে পারছি না।
অফিস থেকে বাসায় ফিরে ফেসবুক লগ ইন করলাম। চোখের সামনে ভেসে আসলো হাস্যোজ্জল রাহিনুলের চবি। তার নিচে লেখা ‘আমাদের প্রিয় ভাই রাহিনুল ভাই আজ সকালে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে ৷’
উহ্ কি মর্মান্তিক! এ তো সেই রাহিনুল যার সাথে ক্যাম্পাসে একত্রে অনেক আড্ডা দিয়েছি। টুকিটাকিতে চায়ের দোকানে কত যে সময় কাটিয়েছি। এতো আমার খুবই চেনা। খুবই কাছের।
আমাদের ছেড়ে এভাবে সে চলে যাবে তা বিশ্বাসই করতে পারছি না। বাড়ির বাইরে সে খুব কমই ছিল। চাকরি করতে ঢাকায় আসা। বাড়ির আপন জনদের ছেড়ে এতোদিন পর ঈদ সামনে রেখে বাড়ি ফিরছে। সবাইকে নিয়ে ঈদ করবে। বন্ধুরা সবাই তার বাসায় আসবে। বন্ধুদের বাসায় যাবে। কিন্বাতু না তা আর হলো না। বাড়ি যাওয়ার আগ মুহূর্তে চলে গেল পরপারে। আমি তার রূহের মাগফিরাত কামনা করি। আল্লাহ যেন তাকে সর্বেোচ্চ মর্যাদা দেয়।
পরিশেষে বলবো, আমায় ক্ষমা করো রাহিনুল। ক্যাম্পাস থেকে আসার পর তোমার খোঁজ নিতে পারিনি।
এরকম মর্মান্তিক দৃশ্য আমাদের যে কারো জীবনেই আসতে পারে।