ইপিআর ( ইষ্ট পাকিস্তান রাইফেলস ) সৈনিক মুক্তিযোদ্ধারা ব্লগিং করার সুযোগ পায়নি, তাঁদের অক্ষর জ্ঞান ছিলো, কিন্তু কিছু লেখার মতো, বা টেকনোলোজী জানা, বা কেনার সুযোগ তাঁদের হয়নি; ফলে, ব্লগিং'এর মত আধুনিক মিডিয়ায় তাঁরা ছিলেন না; আমরা মুক্তিযু্দ্ধের এই মহান সৈনিকদের থেকে জাতির মুক্তিযু্দ্ধ সম্পর্কে, তাঁদের ভুমিকা ও অভিজ্ঞতা সম্পর্কে সরাসরি কিছু জানতে পারিনি।আপনারা কার থেকে কতটুকু কিভাবে জেনেছেন?
ইপিআর'এর নিজস্ব কমিশনড অফিসার ছিলো না; পাকিস্তান সৈন্য বাহিনীর অফিসারেরা ইপিআর সৈনিকদের কমান্ডে ছিলেন; উনারা শিক্ষিত ছিলেন; অফিসারদের কেউ ব্লগিং করেনি, মনে হয়। সেক্টর কমান্ডারদের মাঝে কে কে বই লিখেছিলো, সেগুলোর পড়ার সুযোগ হয়েছে আপনাদের?
যুদ্ধের শুরুতে তারাই প্রথমে যুদ্ধ শুরু করেন; তাদের একটা সুযোগ ছিলো, বেশীরভাগই সীমান্ত ফাঁড়িতে ছিলেন; ফলে পাকিস্তানী সৈন্যরা এদেরকে আটকাতে পারেনি, তারা নিজেদের অস্ত্র নিয়ে সরাসরি যুদ্ধ শুরু করেন। আনুমানিক ৫০ হাজার সৈনিকের মাঝে ২০/২২ হাজার সৈনিক যুদ্ধে অংশ নেন। তাদের শক্তিশালী প্রতিরোধের কারণে পাকিস্তানী বাহিনী ২৫শে মার্চ চট্টগ্রাম শহর দখল করতে পারেনি।
৯ মাস যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করার পর, তারা মানসিকভাবে বেশ চাপে ছিলেন; যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে পরিবার থেকে আলাদা ছিলেন; দরিদ্র পরিবারের মানুষ হওয়াতে যুদ্ধের মাঝে নিজেদের পরিবারের জন্য কিছুই করতে পারছিলেন না। পরিবারকে সাহায্য করার জন্য, মাসের শেষে কিছু আর্থিক সাহায্য পেয়েছিলো সম্ভবত।
যুদ্ধের পর উনাদের 'পেনশনে' পাঠানোর দরকার ছিলো, অবসরের দরকার ছিলো, সামাজিক সুযোগ সুবিধা দেবার দরকার ছিলো, পড়ালেখার সুযোগ দেয়ার দরকার ছিলো;কিন্তু তৎকালীন সরকার এসব মহান সৈনিকদের ভুমিকাকে বুঝতে পারেনি; যুদ্ধের পর আবার তাঁদেরকে বর্ডারে পাঠিয়ে দেয়;এটা ভুল সিদ্ধান্ত ছিলো।
মুক্তিযোদ্ধারা জাতির অবহেলিত লিস্টে থেকে বাদ যাবার কোনো সম্ভাবনা ভবিষ্যৎ'এ আছে? মুক্তিযোদ্ধারা দেশে এনেছিলো, দারিদ্র্যতা তাদের ছেড়ে যায়নি,যীশুখৃষ্টের মত সম্মান পায়নি ; পেয়েছে রিকশার হাতল,জং ধরা হুইল চেয়ার, টং দোকানে চা নিয়ে কারবার ও নিয়তির বেড়াজালের শর্ত।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ১২:০২